আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বহুল কাঙ্ক্ষিত সে নির্বাচন সামনে রেখে পুরোদমে তৎপরতা শুরু করেছে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। এরই মধ্যে একাধিক জরিপ ও বিভিন্ন পর্যায়ে প্রার্থীদের খোঁজখবর নিচ্ছে বিএনপির একাধিক টিম।
কূটনৈতিক, সাংগঠনিকসহ বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে কৌশলে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই ও দলীয় শৃঙ্খলা এবং ভাবমূর্তি রক্ষা বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হয়েছে। এমন অবস্থায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে—
১ যে কোনো মূল্যে নিজেদের ঐক্য ধরে রাখা
২ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করা
৩ যাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে তার পক্ষে এক হয়ে কাজ করা
এসব নির্দেশনা অমান্য করলে দলীয় শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি বজায় রাখতে আরও কঠোর হবে বিএনপি। এরই মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটাতে সবার মাঝে ঐক্য ধরে রাখার বার্তা দিচ্ছেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা।
সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডেকে গুলশান কার্যালয়ে কথা বলে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। অবশ্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের ডাকার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা জানান, সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক বা শীর্ষ নেতার পছন্দের না হলেই তাকে ডাকা হয় না। আবার কেউ পেশাগত কারণে বিদেশে থাকলে তাকে অবহিতও করা হয় না।
জানা গেছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। তা হলো- বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে হাইকমান্ডের এমন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং দলে বিভেদ সৃষ্টির মতো অভিযোগ নিয়মিত কেন্দ্রে জমা হচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে ৭ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার, শোকজ, পদাবনতিসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে বিএনপির দফতর সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তিন বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা
জানা যায়, সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের নির্বাচনী আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপি মহাসচিব বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জানিয়ে দেন।
মির্জা ফখরুলের উদ্ধৃতি দিয়ে কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, তাদের বলা হয়েছে যে, একাধিক জরিপের মাধ্যমে দল সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীকেই বাছাই করবে। সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য নেতাকেই দল মনোনয়ন দেবে। কেউ যদি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। মোট কথা, সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অবশ্য বিভিন্ন আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী আলাদা আলাদা কর্মসূচি করায় স্থানীয় পর্যায়ে দলের ভেতরে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব-বিভেদ তৈরি হয়েছে। এ বিভেদ মেটাতেই সংশ্লিষ্টদের ডেকে দলের হাইকমান্ডের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিরসনের চ্যালেঞ্জ
জানা গেছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিরসন বিএনপির সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও কোন্দলের অভিযোগ বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে নিয়মিত জমা হচ্ছে। অতিসম্প্রতি চাঁদপুর, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার স্থানীয় নেতারা বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। কেন্দ্র এবং স্থানীয় বিএনপি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নিচ্ছে। তবুও দ্বন্দ্ব নিরসন হচ্ছে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আমরা ৫ আগস্টের পর কোনো অপরাধীকে ছাড় দেইনি। কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে অন্যায় করলে তার দায় দল নেবে না। কোনো অপরাধী ও দুষ্কৃতকারীকে বিএনপি কখনো প্রশ্রয় দেয়নি, আগামীতেও দিবে না। দলের মধ্যে যারাই বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
১ দিন ৬ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
১ দিন ৬ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
১ দিন ২০ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
১ দিন ২২ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
২ দিন ২ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
২ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
২ দিন ১৭ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে