দরজায় কড়া নাড়ছে ২০২৪। নতুনের আগমনে প্রাক্তনের পাওয়া না পাওয়ার হিসেব কষতে গিয়ে দেখা গেছে অন্যান্য বছরের তুলনায় কক্সবাজারবাসীর কাছে ২০২৩ ছিল একটি অনেক প্রাপ্তির বছর। এই তেইশে বেশ কিছুই পেয়েছে কক্সবাজারবাসী। উদ্বোধন হয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। সেই সাথে চালু হয়েছে কক্সবাজারবাসীর স্বপ্নের রেলপথ। যা ঘিরে সমুদ্র শহরে পা রেখেছেন শেখ হাসিনা। এখানে তিনি ১৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। যা ছিল কক্সবাজারবাসীর জন্য অন্যরকম আনন্দের বিষয়।
গত ১১ নভেম্বর কক্সবাজার এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মহেশখালী, কুতুবদিয়া, রামু, সদর, উখিয়া, টেকনাফে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এছাড়া উদ্বোধন করেন মাতারবাড়ি বন্দর প্রকল্প, কক্সবাজার–দোহাজারী রেল লাইনের কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন, খুরুশকুল দৃষ্টিনন্দন ব্রিজসহ ১৬টি প্রকল্প।
দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথ : ৯২ বছর পর ট্রেন এলো সমুদ্র শহরে। কক্সবাজারের মানুষের সাথে ঢাকা–চট্টগ্রামের রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এক পলক ট্রেন দেখতে মানুষ ছুটেছে কাজ ফেলে, ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে রাস্তায়। উচ্ছ্বাস, উল্লাস এতটাই ছিল যে ট্রেন দেখার আবেগে মায়ের কোল খালি হয়েছে। ট্রেন দেখার লোভে অপহরণকারীর হাতে ধরা দিয়েছে শিশু। ট্রেনের সাথে সেলফি তুলতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে কিশোরকে। প্রতিদিন ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া এলাকায় আইকনিক রেলস্টেশন দেখতে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করেন। রেল স্টেশনের বদৌলতে অজপাঁড়া গাঁ ‘চান্দের পাড়া’ হয়ে উঠেছে একটি পর্যটন এলাকা। এতে পাল্টে গেছে ওই এলাকার ব্যবসা–বাণিজ্য, বেড়েছে জায়গা জমির দাম। রেলস্টেশন ঘিরে কক্সবাজার শহরে প্রথমবারের মতো বিআরটিসির দ্বিতল সিটি সার্ভিস বাসও চালু করা হয়।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সমুদ্র বন্দর উদ্বোধন : ১১ নভেম্বর জনসভা শেষে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ও কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বন্দরটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনগুলোর জন্য বাংলাদেশে জাহাজ নিয়োজিত করার সুবিধা বাড়বে। এতে পণ্য পরিবহনে খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। এ বন্দর ঘিরে মাতারবাড়ী–মহেশখালী এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়নসহ গড়ে উঠবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকসহ পেশাজীবীদের জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের বেকার সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে এই বন্দর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বন্দর নিয়ে মহেশখালীর মানুষও অত্যন্ত সন্তুষ্ট।
এর দুই দিন পর ১৪ নভেম্বর ভার্চুয়ালি এসপিএম প্রকল্প উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পে ১১ দিনের পরিবর্তে মাত্র ৪৮–৭২ ঘণ্টায় তেল খালাস করা যাচ্ছে। এতে বছরে সরকারের ৮০০ কোটি টাকা লাঘব হচ্ছে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক। তেইশ প্রাক্তন হলেও ২৪ সহ নতুন আরো অনেক বছরের মাঝেও কক্সবাজারবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাঁকখালীর দুই পাড়কে এক করেছে যে সেতু : বাঁকখালী নদীর উপর দিয়ে নির্মিত ৫৯৫ মি. ব্রিজসহ ২.৩০ কিমি সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। যা খুরুশকুলবাসীর জন্য অত্যন্ত খুশির খবর। ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর বাঁকখালীর এপার আর ওপারের মানুষের মাঝে আনন্দ স্রোত বইয়ে গিয়েছে। এই সংযোগ সেতু ঘিরে মানুষের মাঝে মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। এতে খুরুশকুল স্মার্ট সিটির সাথে যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণ হওয়ায় খুরুশকুলের মানুষের অফিস, আদালতে যাতায়াতের খরচ ও ভাড়া কমেছে। এই সড়ক ও সংযোগ সেতু ঘিরে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ছোটখাটো ব্যবসার সৃষ্টি হয়েছে। জায়গা জমির দাম বেড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে আরও একটি নতুন পর্যটন স্পট। এমন আরও অনেক কাজের জন্য ২০২৩ সাল হয়ে থাকবে কক্সবাজারবাসীর কাছে স্মরণীয় একটি বছর।
৪ দিন ৪ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
২১ দিন ২ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৩০ দিন ৫ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
৩২ দিন ৪ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৩৬ দিন ৭ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
৩৬ দিন ৭ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
৫১ দিন ১৮ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
৫৪ দিন ৫ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে