আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার এএসআই সাইফুল ও ওসি (তদন্ত) কাইছার হামিদ মিলে প্রহরী মতলব ও তার এক ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর বকড় ছেলে নুরুল আবছার।
দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ ও পরে হত্যাচেষ্টা মামলায় এক ভাই আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। একপর্যায়ে ওই মামলার আসামি বাড়ি ফিরে প্রহরীকে মারধর করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে বেচারা প্রহরীকে তুলে নিয়ে গেলেও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি রইলেন বাড়িতেই। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কক্সবাজার শহরে।
সম্প্রতি জমি বিরোধের জেরে ভাইয়ে ভাইয়ে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে থানায় মামলা হয়। সে মামলার পলাতক আসামি আব্দুর রহমান নামে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। মামলার পর থেকে পলাতক ছিলেন আব্দুর রহমান।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় খোঁজ পেয়ে পৌর শহরের উত্তর বাহারছড়া এলাকায় ওই আসামির বাসায় যায় কক্সবাজার সদর মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। সে সময় তাদের সামনেই ছিলেন আব্দুর রহমান। কিন্তু আসামিকে না ধরে ওই বাড়ির প্রহরী আব্দুল মতলব ও তার ছেলে নুরুল হাসনাতকে গাড়িতে তুলতে দেখা যায় পুলিশের ওই দলটিকে। নিউজবাংলার হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজেও এসব তথ্য স্পষ্ট।
ভুক্তভোগী প্রহরীর বড় ছেলে নুরুল আবছার বলেন, ‘বাড়ির মালিক ও তার ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এমতাবস্থায় পুলিশ আসে বাসায়। কিন্তু হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি আব্দুর রহমানকে না ধরে পুলিশ ওই বাড়ির প্রহরী আমার বাবা প্রহরী আব্দুল মতলব ও আমার ভাইকে তুলে নিয়ে যায়। অথচ ওই দুইপক্ষের কারও সঙ্গে কিছু করেনি তারা। আমার বাবার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে চালান দেবে বলেও বলেছে তারা।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘এএসআই সাইফুল ও ওসি (তদন্ত) কাইছার হামিদ মিলে মালিকের ভাইয়ের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আমার বাবাকে অহেতুক হয়রানি করছে। ইয়াবা মামলার আসামি রহমান বিভিন্ন সময় মদ্যপান করে বাসায় প্রবেশকালে আমার বাবা বাধা দিত। সেই ক্ষোভ থেকেই পুলিশকে ব্যবহার করছে তারা। আমি এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব।’
আসামি আব্দুর রহমানের ভাই আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পারিবারিক বিরোধ চলছে, কিন্তু হতদরিদ্র প্রহরীকে পুলিশ কেন নিয়ে গেছে বুঝতে পারছি না। আমার ভাই (রহমান) একটি মামলায় পলাতক আসামি। তাকে না নিয়ে উল্টো প্রহরী মতলবকে নিয়ে গেলো। শুনেছি আমার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা খেয়ে প্রহরী মতলব ও তার ছেলেকে হয়রানি করছে পুলিশ।’
‘পলাতক’ আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে ইয়াবা, চেক প্রতারণা ও হত্যাচেষ্টার তিন মামলা রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কন্ট্রোল রুম থেকে ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তাদের নিয়ে আসার পর বাদী-বিবাদী অভিযোগ বা এজাহার না দেয়ায় পুলিশ তাদের কোর্টে প্রেরণ করেছে।’
প্রতিপক্ষের লোকজন থেকে টাকা নিয়ে তাদের হয়রানির উদ্দেশ্যে পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে কোর্টে পাঠাচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু কেউ অভিযোগ বা মামলা করতে রাজি নয়, তাই ১৫১ ধারায় সন্দেহবাজন হিসেবে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান বলেন, ‘তিনি (মতলব) কোন মামলার আসামি আমি জানি না। ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ গিয়েছিল। যদি এমন কোনকিছুর সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকে তাহলে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘বাদী-বিবাদীর যদি কোনো অভিযোগ না থাকে, তাহলে পু্লিশ কেন এমন করল তা খোঁজ নিচ্ছি। আর যদি পুলিশিংয়ে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে তাহলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ সময় ভুক্তভোগীদের তার বরাবর অভিযোগ দিতে বলেন পুলিশ সুপার। বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
৪ দিন ৪ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
২১ দিন ২ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৩০ দিন ৫ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
৩২ দিন ৪ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৩৬ দিন ৭ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
৩৬ দিন ৭ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
৫১ দিন ১৮ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
৫৪ দিন ৫ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে