দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাড়াহুড়ো কোনো কাজ ভাল লাগে না লোহাগাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত তামিম চিরনিদ্রায় শায়িত। কচুয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উপজেলা সার্ভেয়ারের পরিদর্শন নবনিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় চিলমারীতে "কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের" দিনব্যাপী, হাতে-কলমে শিক্ষা সফর শেরপুরের শ্রীবরদীতে ভেজাল বিরোধী অভিযানে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ঝিনাইগাতীতে কারিতাসের আয়োজনে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উদ্বেগ একনেকে ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তে এসপিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশইন গ্রহণযোগ্য নয় ডোমারে ইউএনও'র যোগদান ও বিদায় সংবর্ধনা ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রদল কতৃক এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের মাঝে উপহার বিতরণ ১৭ বছর পর মোংলায় উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন নির্বাচন রাজবাড়ী বিআরটিএতে দুদকের অভিযান: চার দালাল আটক, টাকা উদ্ধার লাখাই উঠেছে তালের শাঁস,প্রচন্ড তাপদাহে বেড়েছে তালের শাঁসের কদর। শ্রীমঙ্গলে নগরব্যাপী অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন নিশ্চিতে ম্যাক বাংলাদেশের মতবিনিময় ও ইউএনও বরাবর নারী ফোরামের স্মারকলিপি সাতক্ষীরায় নাগরিক প্লাটফর্ম ও যুব ফোরামের সংলাপ অনুষ্ঠিত আক্কেলপুর একযুগ আগে থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা পর ও চলছে স্কুলের পাঠদান।

টাইটানে মাথাপিছু ভাড়া ছিল পৌনে ৩ কোটি টাকা, পরিবার কি ক্ষতিপূর‍ণ পাবে

দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 23-06-2023 03:18:59 pm

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে প্রাণ হারানো পর্যটকদের মাথাপিছু ভাড়া ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আরোহী ছিলেন ব্রিটিশ সমুদ্র অভিযাত্রী, পাকিস্তানি বিলিয়নিয়ার ও তাঁর ছেলে এবং দুজন ক্রু। বাকিরাও ব্রিটিশ নাগরিক। 

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮১০ মিটার গভীরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। মার্কিন সংস্থা ওশানগেটের ডুবোজাহাজ টাইটানে চড়ে যাত্রা করেছিলেন তাঁরা। তবে যাত্রার প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পরই তাঁদের ডুবোযানটির সঙ্গে মূল জাহাজের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে পাওয়া গেছে সেটির ধ্বংসাবশেষ। সমুদ্রের গভীরে পানির চাপে চ্যাপ্টা হয়ে গেছেন সবাই। নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এখন কথা হলো, এই পরিবারগুলো কি তাঁদের প্রিয়জন হারানোর ক্ষতিপূরণ চেয়ে ওশানগেটের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন? 


ধারণা করা হচ্ছে, অভিযাত্রীরা সমুদ্রের গভীরে যাত্রা করার আগেই কোম্পানিকে বন্ড সই দিয়েছেন। বিবিসির সহযোগী সংবাদমাধ্যম সিবিএসের একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ২০২২ সালের জুলাইয়ে ওশান এক্সপেডিশনের যাত্রী ছিলেন তিনি। ওই সময় তাঁদের দায়মুক্তির নথিতে সই করতে হয়েছিল। নথির প্রথম পৃষ্ঠাতেই সম্ভাব্য মৃত্যুর দায় কোম্পানি নেবে না, এমন শর্তে সম্মতি দিয়ে তিনবার সই করতে হয়েছিল। টাইটানের পাঁচ অভিযাত্রীকেও সে রকম বন্ড সই দিতে হয়ে থাকতে পারে। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছে। তবে ওশানগেটকে তাঁদের এ ধরনের কোনো বন্ড সই দিতে হয়েছিল কি না—সেটি নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি। 

অবশ্য এ ধরনের দায়মুক্তির শক্ত আইনি ভিত্তি নেই। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে বিচারকেরা সাধারণত এমন শর্ত বিবেচনায় নেন না। বিচারকেরা বরং, বিবাদীর অবহেলা বা গুরুতর কোনো ত্রুটি ছিল না কি না সেটিই দেখার চেষ্টা করেন। কারণ, এসব বিষয় সাধারণত সম্পূর্ণ প্রকাশ করে না সংস্থাগুলো। 

এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসভিত্তিক ব্যক্তিগত জখম ও সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ ম্যাথু ডি শ্যাফার রয়টার্সকে বলেন, ‘এ ধরনের ক্ষেত্রে আমরা দেখি, জাহাজটি পরিচালনা বা নির্মাণে কোনো ত্রুটি ছিল কি না—যা যাত্রীদের কাছ থেকে গোপন করা হয়েছে। এ ছাড়া যানটি সাগরে ডুব দেওয়ার জন্য উপযুক্ত না থাকার বিষয়টি জানা সত্ত্বেও পরিচালনা করা হয়েছিল কি না। এগুলোর সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ থাকলে কোনো দায়মুক্তির বন্ডে  কাজ হবে না।’


তবে ওশানগেট যুক্তি দিতে পারে যে তাদের কোনো অবহেলা ছিল না এবং তাদের দায়মুক্তির চুক্তি কার্যকর হবে। কারণ, যাত্রীদের গভীর সমুদ্রে ডুব দেওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল। 

এখন দুর্ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত হওয়ার পরই বলা যাবে, এই বিপর্যয়ের পেছনে কারণ কী ছিল। তখনই ওশানগেটের অবহেলার মাত্রা দায়মুক্তি চুক্তির কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলবে। যদিও গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারেনি রয়টার্স। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওশানগেট একটি ছোট কোম্পানি। ওয়াশিংটনের এভারেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কতখানি ক্ষতিপূরণ দিতে সক্ষম, সেটিও দেখার বিষয়। তবে কোম্পানির যদি বিমা ব্যবস্থা থেকে থাকে তাহলে সেটি তাঁরা পাবেন।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রমাণ হিসেবে একটি মামলার নথিকে ব্যবহার করতে পারে। ২০১৮ সালে ওশানগেটের একজন সাবেক কর্মকর্তা ওয়াশিংটনের ফেডারেল আদালতে সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। ডেভিড লোকরিজ নামে ওই কর্মকর্তা অভিযোগে ওশানগেটের টাইটান ডুবোযানের নিরাপত্তা ত্রুটি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন, যেটি সংস্থাটি উপেক্ষা করেছে। অবশ্য আদালতের নথি বলছে, মামলাটির নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। তবে কোন শর্তে সেটি প্রকাশ করা হয়নি। 

এ ছাড়া গভীর সমুদ্রে ডুবোযানে পর্যটন সেবা দেওয়া শিল্পের নেতারা ২০১৮ সালেই ওশানগেটের যানটির নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাইটানকে সনদ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। 

ম্যানড আন্ডারওয়াটার ভেহিকল (এমইউভি) শিল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত অস্কারজয়ী নির্মাতা জেমস ক্যামেরন বলছেন, ‘এ ধরনের কোনো সংস্থা যদি যাত্রী বহন করে—তারা বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষক বা সাধারণ অভিযাত্রী যে-ই হোন—তাহলে অবশ্যই সনদপ্রাপ্ত হতে হবে।’ 

আমেরিকান ব্যুরো অব শিপিং বা ইউরোপীয়ান কোম্পানি ডিএনভির মতো তৃতীয়পক্ষের কাছ থেকে এই ধরনের সনদ সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়েছিল কেন, সে প্রশ্নে অবশ্য ওশানগেট পরিষ্কার কোনো জবাব দেয়নি।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের পৃষ্ঠ থেকে প্রায় চার হাজার মিটার গভীরে ডুব দিতে হয়। এত গভীরে মানুষবাহী ডুবোযান পরিচালনার মতো সংস্থা রয়েছে হাতে গোনা। আর বিশ্বে এ ধরনের ডুবোযান আছে মাত্র ১০টি। 

বেশির ভাগ পর্যটন সাবমার্সিবল সাধারণত কোরাল রিফ এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি সমুদ্রের ৫০০ মিটার বা তার কম গভীরতা পর্যন্ত যায়। 

মনুষ্যবাহী সাবমার্সিবল সম্পর্কিত পিয়ার রিভিউ সংস্থা মেরিন টেকনোলজি সোসাইটির চেয়ারম্যান উইল কোনেন রয়টার্সকে বলেন, এ ধরনের ডুবোযানের মধ্যে একমাত্র ওশানগেটের টাইটানের কোনো সনদ ছিল না।

জেমস ক্যামেরন বিবিসিকে বলেন, ‘এখন একুশ শতক। এই সময় এসে কোনো ঝুঁকি থাকার নয়। ৬০ বছর ধরে আমরা এটি করে আসছি। সেই ১৯৬০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ৬৩ বছরে কোনো ধরনের প্রাণহানি ঘটেনি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, এই ঘটনার অন্যতম দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এমন দুর্ঘটনা এড়ানো খুবই সম্ভব ছিল।’


Tag
আরও খবর