সাতক্ষীরা শহরের আনোয়ারা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এপেন্ডিক্স অপারেশন করে এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সুবর্ণা খাতুন (১৭)।
বর্তমানে তিনি এখন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা আশাশুনির চাপড়া গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে। তারা সাতক্ষীরা শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন।
অসুস্থ্য সুবর্ণার মা সেলিনা খাতুন বলেন, এপেন্ডিক্স এর ব্যথার কারণে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় শহরের আনোয়ারা ক্লিনিকে মেয়েকে ভর্তি করি। ওই রাতেই মেয়েকে এপেন্ডিক্স এর অপারেশন করেন ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ মুশফিকুর রহমান। অপারেশন শেষে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় মেয়েকে। পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিলে আবারও গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ও ২২ ডিসেম্বর আনোয়ারা ক্লিনিকে মেয়েকে ভর্তি করি। তখন ম্যানেজার ইখতিয়ার ও কম্পাউন্ডার খায়রুলকে দিয়ে আরও ২ বার অপারেশন করানো হয়। তবে ওই ২ বার অপারেশন করার সময় কোন রকম অবশ করা হয়নি। ২য় বার অপারেশন করার আগে আমার মেয়ে ডাক্তার কোথায় জানতে চাইলে তারা তাকে হুমকি দিয়ে বলে ‘আপনার অত বোঝা লাগবেনা, আমরাও ডাক্তারের চেয়ে কম না, চুপচাপ শুয়ে থাকেন।’
সেলিনা খাতুন আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘যেহেতু একজন মেয়ের অপারেশন করা হলো সেখানে কোন নারী ডাক্তার বা নার্স ছিলনা কেন? এভাবে মোট তিন বার অপারেশন করার পরও সুবর্ণার ক্ষত আরও বেড়ে যায় এবং ইনফেকশন দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় মাংস পঁচন ধরে। আমরা একমাসের বেশিদিন ধরে এই যন্ত্রণা ভোগ করছি। ক্ষতস্থানে বর্তমানে প্রচন্ড জ্বালা-যন্ত্রণা হওয়ার ফলে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এই অপারেশনের জন্য আমাদের কাছ থেকে দফায় দফায় মোট ২৪ হাজার টাকা বিল করে ১৬ হাজার টাকা নিয়েছে। আমরা তিনশত টাকা কম দিয়েছিলাম তখন তারা আমাদের ছাড়পত্র না দিয়ে আটকে রেখে দুর্ব্যবহার করে। এপর্যন্ত সুবর্ণাকে ৭, ৯ ও ২৯ ডিসেম্বর তিনবার ছাড়পত্র দিয়েছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।’
প্রচন্ড অসুস্থ্য সুবর্ণা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি বহুদিন যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারছিনা এবং এই কষ্ট আর সহ্য করতে পারছিনা। আমি ওদের নামে মামলা করবো। আমার এই অবস্থার জন্য দায়ি আনোয়ারা ক্লিনিকের ডাক্তার মুশফিকুর রহমান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।’
সাংবাদিক পরিচয়ে ক্লিনিকের ম্যানেজার ইখতিয়ারকে ফোন দিলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘আপনারা মিডিয়ার লোক না জেনে কেন বলছেন যে আমরা অপারেশন করেছি? আমরা কি ডাক্তার?’ অপারেশন কে করেছে প্রশ্নে তিনি বলেন, ডাঃ মুশফিকুর রহমান করেছেন। একটা সামান্য এপেন্ডিসের অপারেশন, কেন ৩ বার করা লাগলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনবার কেন আরও বহুবার করা লাগতে পারে। তাছাড়া সিএস ব্যবস্থা নেবে, আপনারা না। তাছাড়া সে সদর হাসপাতালে কেন ভর্তি হলো প্রশ্নছুড়ে দিয়ে বলেন, আমাদের এখানে যতবার আসবে আমরা ট্রিটমেন্ট দেব। আপনাদের গাফিলতি ও ভুলের কারণে আপনাদের প্রতি ভরসা না পেয়ে সে সদরে ভর্তি হয়েছে বললে তিনি বলেন, যা খুশি করুক। আমাদের কিছু করার নেই। আপনারাতো অসহায় রোগীরদের দালালের মাধ্যমে ক্লিনিকে ভর্তি করে গলা কাটেন বলতেই ওপরপ্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেন।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৭ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে
৩ দিন ২০ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
৪ দিন ১৯ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
৪ দিন ২২ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে
৬ দিন ২০ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৬ দিন ২৩ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
৬ দিন ২৩ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে
৮ দিন ১৯ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে