প্রকাশের সময়: 19-06-2025 09:47:59 pm
৭৫ বছরের পুরনো কলেজ, ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য লাইব্রেরিতে মাত্র ৪০টি আসন
প্রতিষ্ঠানের বয়স ৭৫ বছর। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি। চালু রয়েছে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির পাঠদান। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর বিপরীতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে আসন বলতে রয়েছে সাধারণ কাঠের বেঞ্চ ও টেবিল। গাদাগাদি করে সেখানে বসতে পারেন অল্প কিছু শিক্ষার্থী। সবমিলিয়ে দুটি কক্ষে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে একসঙ্গে মোট আসন রয়েছে ৪০ টি। এই চিত্র রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ।
বৃহস্পতিবার ( ১৯ জুন) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী কলেজে রয়েছে একটি সুবিশাল এবং সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার । জানা যায় গ্রন্থাগারে রয়েছে ১০,৪৭৪ টি বই। কিন্তু সেখানে নেই বসে পড়ার পর্যাপ্ত জায়গা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পড়তে এসে জায়গা না পেয়ে গ্রন্থাগারের দরজা থেকেই ফিরে যান বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। আর গুটিকয়েক আসনের বিপরীতে কে কার আগে বসবেন বা সিট দখল করবেন সে প্রতিযোগিতা-তো আছেই।
এ সম্পর্কে সোহরাওয়ার্দী কলেজের চতুর্থ বর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন,“ রাজধানী ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র হলেও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক কোনো লাইব্রেরী বা রিডিং রুম নাই। সেক্ষেত্রে সকল শিক্ষার্থীরাই বাধ্য হয়েই নির্ভর করে কলেজের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর উপর। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় একসাথে ২০ জন বসে বই পড়বে এমন অবস্থা নেই কলেজ লাইব্রেরীতে। ”
এ সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, “ আমাদের কলেজ লাইব্রেরীতে পড়াশোনার জন্য মান্ধাতার আমলের ব্যবহার অযোগ্য বেঞ্চ আর টেবিলে সর্বোচ্চ ২০-২৫ জন ঠাসাঠাসি করে বসতে পারে। বসার জায়গার অপ্রতুলতার জন্য বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই কলেজ ক্যাম্পাসে এসে পড়াশোনা করার সুযোগ পায় না, যেটি শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল করা পথকে বাধাগ্রস্ত করছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত সংবাদপত্র এবং প্রয়োজনীয় একাডেমিক ও রেফারেন্স বই পাওয়া যায় না ফলে সুষম জ্ঞানচর্চার সুযোগ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। কলেজ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান উন্নয়নের জন্য লাইব্রেরী উপকরণ বৃদ্ধির বিকল্প নাই।
এ সম্পর্কে কলেজের তৃতীয় বর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সুচি বলেন, লাইব্রেরি একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। আমাদের সোহরাওয়ার্দী কলেজে একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি রয়েছে। কিন্তু আমাদের লাইব্রেরীতে রয়েছে অনেক অনেক সীমাবদ্ধতা। সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটা সেটা হলো আসন সংখ্যা। একসাথে ৩০ জন মিলে পড়ার জায়গা নেই । অনেক পুরনো আমলের দুটো টেবিল আর বেঞ্চ রয়েছে যেখানে গাদাগাদি করে বসা লাগে। অনেক সময় পড়তে গিয়ে জায়গা না পেয়ে ফিরে আসি। এছাড়াও আমরা যারা বই নেই অনেক সময় দেখা যায় সাইন্স এর সাবজেক্ট গুলোর সব লেখকের বই আমরা পাইনা।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের গ্রন্থাগারিক খন্দকার মোহাম্মদ সবুর আলম বলেন, বর্তমানে আমাদের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ৪০ জনের জায়গা রয়েছে। জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্যে আরো ৫০ টি সিট সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং সেখানে এয়ারকন্ডিশনার (এসি) লাগানো হবে। এবং শিক্ষার্থীদের পড়ার জন্য আলাদা রিডিং রুমের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সম্পর্কে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা লাইব্রেরীতে সংস্কার কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে সেখানে কাজ চলছে এবং ৫০টি আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং সেখানে এসির ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আলাদা একটি রিডিং রুম করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমি আশা করি জুন জুলাইয়ের ভেতরে সব কাজ দৃশ্যমান হবে।
৫ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৪৮ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে