জয়পুরহাট জেলা পুলিশের প্রেরিত মামলা সমুহের তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালতে সাজা প্রদাণ, ওয়ারেন্ট তামিল ও আইন শৃংখলা উন্নয়ন সূচকে সারাদেশের মধ্যে 'গ' ক্যাটাগরিতে জয়পুরহাট জেলা বরাবরের মতো এবারও প্রথম স্থান অর্জন করায় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জেলার বিশিষ্টজনরা জয়পুরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত ত্রৈমাসিক কনফারেন্সে জয়পুরহাট জেলা পুলিশের প্রেরিত মামলা সমুহের তদন্ত প্রতিবেদনের হার ৬৭ দশমিক ৬৮ ভাগ হওয়ার পাশাপাশি জিআর, সিআর, সাজা ও ওয়ারেন্ট তামিল ক্যাটাগরীতে সারা দেশের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে জেলাটি।
ওয়ারেন্ট মাস্টার খ্যাত জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম এর নিরন্তর প্রচেষ্টায় আইন শৃংখলা উন্নয়ন সূচকে সারাদেশের মধ্যে 'গ' ক্যাটাগরিতে এবারও জয়পুরহাট জেলা প্রথম স্থান অক্ষুন্ন রেখেছেন।
ইতিপূর্বেও পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে মাদক উদ্ধারে জয়পুরহাট জেলা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করায় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার) পিপিএম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম এর হাতে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেন।
পার্শ্ববর্তি দেশ ভারত ও চেঁচরা সিমান্ত ঘেঁষে বয়ে যাওয়া নদীর ঘাট দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পিস ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজা, হেরোইন ও নেশাজাতীয় ইনজেকশন ব্যাপকভাবে চোরাইপথে জয়পুরহার জেলার বিভিন্ন এলাকায় এনে এসব মাদক স্থানীয়ভাবে বেচা-বিক্রিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাত এবং রাতদিন সমানে চলতো রমরমা মাদক ব্যবসা। এদিক ওদিক থেকে আসছে মোটরসাইকেল, হাত বাড়িয়ে টাকা দিচ্ছে, একই সঙ্গে তারা মাদকের পুটলি বুঝে নিচ্ছে। মাদক কারবারিরা ২৪ ঘন্টা জুড়ে হয়ে উঠেছিল সক্রিয়। যার কারণে বিভিন্ন সময় খবরের শিরোনামে থাকতো এই জেলা।
পুলিশ সুপার হিসেবে জয়পুরহাটে মোহাম্মদ নূরে আলম যোগদান করার পর মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায়, গুরুত্বপূর্ণ সড়কে, স্থানীয় থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা টিমের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখে মাদক উদ্ধারসহ মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের আটক করে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে আসছে।
এই অর্জনে জয়পুরহাট মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসানুজ্জামান মিঠু, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খান, জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিউল বারী রাসেলসহ জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়ে আরও সফলতা কামনা করেছেন।
জয়পুরহাট জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্য সচিব বাবু নন্দলাল পার্শী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম ও জেলার সকল পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, পুলিশ সুপার হিসেবে জেলাতে যোগদানের পরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক জেলা পুলিশের এই চৌকশ কর্মকর্তা পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। ওনার কর্ম দক্ষতায় এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো রেখেছেন। এছাড়াও তিনি জেলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, আদিবাসী সম্প্রদায় এবং প্রতিবন্ধীদের সকল বিবিধ বিষয়ে সহযোগিতা করছেন। আমরা জেনেছি তিনি ইতিমধ্যে হতদরিদ্র ও শীতার্তদের মাঝে প্রায় পঁচিশ হাজার কম্বল বিতরণ বিতরণ করেছেন। এটি তার মানবিক দিক। কাজেই আমরা বলতেই পারি এই মানবিক পুলিশ সুপার এবং জেলা পুলিশ জয়পুরহাটের জন্য যে সন্মান বয়ে এনেছে তাতে আমরা গর্বিত।
জয়পুরহাট জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ওসি শাহেদ আল মামুন বলেন, এত বড় পুরস্কার আসলে সৌভাগ্যের ব্যাপার। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম স্যারকে নিয়ে আমরা গর্বিত। ওনার নেতৃত্বে শতভাগ নিষ্ঠার সাথে কাজ করে এ জেলার সকল পর্যায়ের মানুষকে সর্বোচ্চ পুলিশি সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জেলা পুলিশ টিম ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। এলক্ষ্যে মামলা তদন্ত কার্যক্রম সঠিক ভাবে তদারকির পাশাপাশি বিচারিক কার্যক্রমের সময় সঠিক ভাবে সাক্ষী হাজির করাটাও আমি নিবিড়ভাবে তদারকি করি এবং আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি আমি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদারকি করি। ছোট জেলা হিসেবে অন্য জেলাগুলোর সাথে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে এই অর্জন করে আমরা জয়পুরহাট জেলার জন্য বিরাট সন্মান বয়ে আনতে পেরেছি। জয়পুরহাট জেলার সকল পুলিশ অফিসার ও ফোর্সরা আন্তরিকভাবে কাজ করে বলেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।