ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) রাত ১২ টায়। আজ থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হবে। আর তাই সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়ার আনন্দ বিরাজ করছে জেলেপাড়ায়। গত এক সপ্তাহ থেকে জেলে পল্লীগুলোতে চলছে জাল ও ট্রলার মেরামতের কাজ। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে নৌকা তৈরি, নৌকা মেরামত, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করেছেন ইতোমধ্যে। এখন শুধুই মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য প্রহর গুণছে।
গত ১২ অক্টোবর থেকে ০২ নভেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত এই ২২ দিন জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকার থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন।
জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, কক্সবাজার লক্ষাধিকের অধিক জেলে রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা সবাই সরকারের নিয়ম মেনে চলেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশে যখন সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা চলে তখন ভারতের জেলেরা আমাদের সীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। না হলে এই নিষেধাজ্ঞা জেলেদের কোন কাজে আসবে না। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে জেলে পল্লীগুলোতে একটি খুশির আমেজ বইছে। তাদের আশা সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে।
বৃহস্পতিবার উপকূলের কয়েকটি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা সাগরে নানতে নৌকা মেরামত ও ধুইয়ে মুছে রং লাগাচ্ছেন। আবার কেউবা জাল মেরামতের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলে গোলাম রহমান বলেন, ঋণের বোঝা গলায় গলায়। গত কয়েকবছর ধরে কাঙ্ক্ষিত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ পেশা ছেড়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের যখন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ চলে তখন ভারতের জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে করে নিষেধাজ্ঞা কোন সুফল জেলেরা পায়না।
সমিতির পাড়ায় কথা হয় জেলে জুনায়েদের সাথে। তিনি বলেন, একবারের জন্যও সরকারের দেওয়া চাল সহায়তা পায়নি। বরাদ্দের চাল ঠিকমতো কেউ পায়না। চাল নিয়ে কারচুপি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া সাগরে এখন মাছ আগের মত নেই। সবমিলিয়ে জেলেদের অবস্থা খুবই খারাপ।
ট্রলার মালিক রেজাউল করিম বলেন, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞায় তেমন মাছ পাওয়া যায়নি। লাভ ‘তো দূরের কথা ঠিকমতো আসল পুঁজিও ওঠেনি। এর মধ্যে আবার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। সেইসাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো আছেই। তিনি বলেন, ভারতের সাথে সময়সীমা ঠিক রেখে নিষেধাজ্ঞা দিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যাবে৷ জেলেদের সাগরে পাঠানোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এখন শুধু অপেক্ষা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, ২২ দিন বন্ধে সঠিকভাবেই পালন হয়েছে প্রজননক্ষম মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান। যারা আইন অমান্য করে সাগরে যায় তাঁদের জাল পুড়িয়ে ফেলা ও মাছ জব্দ করে এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাসহ পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। তিনি বলেন, জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ০২ নভেম্বর রাত ১২টার পর থেকেই সাগরে যেতে পারবেন জেলেরা। আশা করছি জেলেরা আশানুরূপ ইলিশ ও অন্যান্য পাবেন।
জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৩ হাজার ১৯৩ জন। বন্ধের সময় সরকারের পক্ষ থেকে জেলের প্রত্যেককে ২ কিস্তিতে ৫৬ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।
৫ দিন ১০ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
২২ দিন ৭ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৩১ দিন ১০ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৩৩ দিন ১০ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
৩৭ দিন ১২ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৩৭ দিন ১২ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
৫২ দিন ২৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
৫৫ দিন ১১ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে