সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ নদীর চরে বনায়ন তৈরিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঝিনাইদহে অবৈধ স্থাপনা ও সড়ক থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাচন নিয়ে সরকারের অফিসিয়াল নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী নাসিরনগরে মহানবী সা. এর শানে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ সিএনআরএসের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন কাদাকাটিতে হাত কোদালে খাল খনন চলছে, কাজের খবর জানেন না প্রকল্পের সভাপতি আশাশুনিতে উত্তরণের এক্সেস প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা ক্ষেতলালে বিডব্লিউবি বিতরণে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরায় সরকারি বন বিভাগের গাছ কেটে ভূমি দখলের অভিযোগ ইসলামপুরের সাপধরী ইউনিয়নে বিনামূল্যে স্যানিটারি ল্যাট্রিন সামগ্রী বিতরণ সাতক্ষীরায় বিশ্ব শিশুশ্রম উপলক্ষে আলোচনা সভা সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে ফেন্সিডিলসহ প্রায় চোদ্দ লক্ষ টাকার মালামাল আটক চিলমারীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের দাফন সম্পন্ন গলাচিপায়- স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রয়োগ মেলা ও সেমিনার। লালপুরে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মশালা প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক  প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত। সিরাজগঞ্জের কোরবানির গোসত চুরির বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত। লালপুরের ঈশ্বরদী বাইপাস রেলস্টেশনে ছাউনির অভাবে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ লালপুরে জাতীয় ফল মেলার শুভ উদ্বোধন লালপুরে আওয়ামী লীগের ১৭ জন কারাগারে

পাঁচবিবিতে গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের কাছে হার মানছে কৃষক ও খামারীরা, সরকারী ভাবে ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবী


জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে গরুর ল্যাম্পি স্কিন বা এলএসডি নামের একটি ভাইরাস জনিত রোগের ব্যাপক সংক্রমন দেখা দিয়েছে। এ রোগে প্রতিদিন উপজেলার কোথাও না কোথাও মারা যাচ্ছে গরুও বাছুর। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক ও খামারীরা। কৃষকদের অভিযোগ টাকা দিয়েও মিলছে না এ রোগের সু-চিকিৎসা। আর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, এ রোগের সরকারী ভাবে কোন ভ্যাকসিন না থাকায়  বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে  আক্রান্ত  পশুর চিকিৎসা  চালিয়ে যাচ্ছেন । আর এজন্য  উপজেলা ভেটোনারী সার্জনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম  সার্বক্ষনিক উপজেলার কৃষক ও খামারীদের প্রয়োজনী পরামর্শ ও সেবা  দিয়ে যাচ্ছেন।  


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গরু ও বাছুরের ল্যাম্পি  স্কিন রোগ বা এলএসডি রোগের ব্যাপক প্রার্দূভাব দেখা দিয়েছে।  প্রতিদিনই বাড়ছে  আক্রান্তে সংখ্যা। পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।  


এ রোগে আক্রান্ত  হলে গরু ও বাছুর প্রথমে  খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং  শরীর কাঁপতে শুরু করে।   সারা  শরীরে দেখা দেয় গুটি  যা পরে  ফেটে  ক্ষতের সৃষ্টি  হয় ।  এতে  করে  মারা যাচ্ছে গরু।  বিশেষ করে দুগ্ধজাত বাছুর ।  দিশেহারা কৃষকদের অভিযোগ টাকা দিয়েও মিলছে না এ রোগের সঠিক চিকিৎসা। এমন অবস্থায়  গ্রামের পল্লী পশু চিকিৎসকদের চিকিৎসা  নিয়ে  কৃষক ও খামারীরা তাদের পশুর চিকিৎসা  করছে ।  অপরদিকে  সরকারি ভাবে এ রোগের ভ্যাকসিন  আবিস্কার  না হওয়ায় বে-সরকারী ভাবে আমদানিকৃত ভাকসিনের দাম বেশি হওয়ায়  বেশি হওয়াই কৃষক ও খামারীদের নিকট তা ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। অনেকেই টাকার অভাবে সময়মত চিকিৎসা করাতে না পারাই তাদের গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। সে কারণে সরকারী ভাবে এ রোগের ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবী জানিয়েছেন কৃষক ও খামারীরা।   


উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের বাগুয়ান গ্রামের আদিবাসী শ্রীমতি রতœা রাণী বলেন, আমরা  দুধ খাওয়ার জন্য বাড়ীতে গাভী  পালন করি।  সন্ধ্যায় গরু বাছুরকে খাওয়ানোর পরে রাতে গোয়ালে রাখার পর সকালে দেখি বাছুরটি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে কাঁপতে শুরু করেছে। শরীর ফুলে গুটি গুটি   হয়েছে।


একই গ্রামের শ্রীমতি সান্তনা রানী জানায়, তার ৭০/৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি উন্নত জাতের বাছুরের চামড়ায় প্রথমে গুটি গুটি  বের হয়ে ফোসকা পড়ে। এবস্থায় স্থানীয় পল্লী পশু চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা সহ উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে নিয়ে যান। কিন্তুু কোন লাভ হয়নি। শরীরের চামড়া পচে খসে পড়ে ১০/১২ দিনের পর মারা যায়। 


উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের আটাপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর একটি গরুর গায়ে গুটি দেখা দিলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে অন্য গরু থেকে আলাদা করে রেখেছি। কয়েক দিনের মাথায় গরুর গায়ের গুটি ফেটে মাংস বাহির হয়েছে। অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসা করেও ভালো হচ্ছে না। মনে হয় না এই গরু আর বাঁচবে। দুধ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ডাক্তারদের জিজ্ঞেস করলে বলে, এই রোগের কোনো চিকিৎসা নাই। যেটা আছে সেটা প্রয়োগ করা হয়েছে। এখন আতঙ্কে আছি, অন্য গরু আক্রান্ত হলে আমি আর্থিক ভাবে শেষ হয়ে যাবো!


উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লাম্পি স্কিন ডিজিজ মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। ধরন তিনটি হলো ক্যাপ্রি পক্স, এলএসডি এবং গোট পক্স ।  বর্তমানে এ উপজেলায়  এলএসডি ভাইরাসের ব্যাপক প্রভাব দেখা দিয়েছে। মশামাছির মাধ্যমে, আক্রান্ত গরুর লালা খাবারে মিশে এবং গরুর পরিচর্যাকারী ব্যক্তির কাপড়ের মাধ্যমেও ভাইরাসটি ছড়াই। ভাইরাসটির  ছড়ানোর হার শতকরা ৫০% এবং আক্রান্ত গরুর মৃত্যুর হার ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত বলে জানায়।  


উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নিয়ায কাযমির বলেন, উপজেলায় ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর  কৃষক ও খামারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জন ডাঃ ফয়সল রাব্বীর নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করেছি।  তারা সার্বক্ষণিক উপজেলার প্রত্যন্ত  গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষক ও খামারীদের পরামর্শ দিচ্ছেন। সরকারি  ভাবে এ রোগের ভ্যাকসিন না থাকায় গোট পক্স  প্রতিষেধক  ভ্যাকসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা  দেয়া হচ্ছে।  তিনি  কৃষক ও খামারীদের আতংকিত না হয়ে গোয়াল ঘরে নেপথিনের ব্যবহার ও আক্রান্ত গরুকে সুস্থ গরু থেকে আলাদা করে এবং মশারির মধ্যে রাখার পরামর্শ দেন।

Tag
আরও খবর