প্রকাশের সময়: 26-09-2025 11:21:25 pm
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি। হলের খাবারের মান ও স্বাদ কম কিন্তু ঊর্ধ্ব দামে খেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা মানসম্মত ও পুষ্টিকর খাবারের প্রত্যাশা করলেও বাস্তবে তা মেলেনা।
প্রতিদিনের খাবারে পুষ্টি ঘাটতি, মানহীন উপকরণ, অস্বাস্থ্যকর রান্নার পরিবেশ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এমনভাবে গেঁথে গেছে যে অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে বাইরে খাওয়া কিংবা নিজেরা রান্না করার পথ বেছে নিচ্ছেন।
চাল, ডাল, তেল, মাংস, মাছ- প্রতিটি উপকরণেই মানের ঘাটতি চোখে পড়ে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, রান্নার জন্য ব্যবহৃত চাল অনেক সময় নিম্নমানের, যা খাওয়ার অযোগ্য বললেই চলে। ডাল বা সবজির মধ্যে পোকা পাওয়া যেন একপ্রকার স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেলের গুণগত মান নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। অনেক সময় তেলের গন্ধ থেকেই বোঝা যায় তা ব্যবহার উপযোগী নয়।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরক্তি ও অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। খাবার শুধু পেট ভরানোর বিষয় নয়, এটি স্বাস্থ্য, মনোযোগ এবং একাডেমিক জীবনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
এবিষয়ে শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই হলের খাবারের মান খুব একটা ভালো না। একজন শিক্ষার্থীর যে পরিমাণ প্রোটিন দরকার সে পরিমাণ খাবারে পাওয়া যায় না এবং চল্লিশ ( ৪০) টাকায় হলের যে মানের খাবার হওয়া উচিত সে মানের খাবার আসলে নাই। এটা হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু এটা খুবই দুঃখজনক একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনা করার জন্য যে পরিমাণ শক্তি ও পুষ্টির প্রয়োজন তা এই খাবারে নাই বলে আমি মনে করি। তাছাড়াও হলে রাইস কুকার, হিটার ও ইলেক্ট্রিক চুলা ব্যবহার নিষিদ্ধ যার ফলে আমরা রান্না করেও খেতে পারছিনা।
স্বাধীনতা দিবস হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কাব্বিরুল ওমর বলেন,এখানে তরকারি, মাছ ও মাংস মোটামুটি খাওয়া যায়। কিন্তু ভাতের মধ্যে মাড়ের একটা গন্ধ লাগে যার ফলে খেতে একটু খারাপ লাগে। এ বিষয়টি যদি হল প্রোভোস্ট দেখলে ভালো হয়।
বিজয় দিবস হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জোনায়েদ হাসান বলেন, আমি মূলত বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস দুই হলেরই খাবার খাই। খাবারের মান বলতে দুই হলের খাবারের মান প্রায় একই। একই খাবারের দাম পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ সকালের রান্না করা খাবার যদি হয় ৫০ টাকা ওই একই খাবার রাত্রে ৪০ টাকায় বিক্রি করে। সকালে বিক্রি না হওয়া খাবারগুলো গুলো রাতে কম দামে বিক্রি করে। এমনকি রান্না ঘরও থাকে অপরিষ্কার।
এবিষয়ে বিজয় দিবস হলের প্রোভোস্ট ড. রবিউল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে থাকে খাবারের দাম বেশি আর মান কম হয়ে যাচ্ছে তবে আমি ফরমালি বলব বিষয় টা আসলে এরকম নয়। বাজারের খরচের উপর নির্ভর করে আমরা সীমিত মুল্যে পর্যাপ্ত খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ চল্লিশ (৪০) টাকা দরে খাবার খুব একটা ভালো না হওয়ারই কথা।বাজারে সবজির দাম অনেক বেশি। যা প্রতিনিয়ত বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। আর খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির বিষয় মন্তব্য করেন আমি হলের রাধুনিদের বলব যেন খাবারের স্বাদ বজায় রেখে রান্না করা হয়। পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার প্রশ্নে বলেন, খাবারের টেবিলে নোংরা হয়তো ছিল আপনারা যেদিন গেছেন ওই দিন। কিন্তু সচরাচর পরিষ্কার রাখা হয়।
এ বিষয়ে শেখ রাসেল হলের প্রোভোস্ট নাসিরুদ্দিন বলেন,' স্টুডেন্টদের তদারকির মাধ্যমে আমরা এটা করতে চেয়েছি আর এখনো যারা স্বনির্ভর প্রকল্প থেকে এসেছে, এবং সব মিলিয়ে ভালো করার চেষ্টা চলছে সবাই একটু সচেতন হয়ে কাজ করলে হয়তো বা এটা ভালো করা সম্ভব। আমরা খুব শীঘ্রই স্টুডেন্টদের সাথে বসে সব ঠিক করার চেষ্টা করব। আমরা এর আগেও একবার স্টুডেন্টদের সাথে বসেছি। দেখি আমরা আবার একবার বসে দাম নির্ধারণ এর চেষ্টা আমরা করব।
স্বাধীনতা দিবস হলের প্রোভোস্ট ড. আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে ফ্রাংকলি কথা বলেছেন। তিনি বলেন, 'আমি নিজে হলে খাই ধারাবাহিকভাবে। হল প্রশাসক হিসেবে আমি নিজেই নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের হলে আমরা ৪০,৫০ ও ৬০ টাকা দামের খাবার প্যাকেজ রেখেছি। তাছাড়াও কোনো শিক্ষার্থী চাইলে ন্যূনতম খাবার প্যাকেজ যেমন ভাত,ডাল ও ভাজি এই গুলো তারা মাত্র ২৫/- টাকায়ও কিনতে পারেন।আর ভাতের বিষয় যেটা শিক্ষার্থীরা বলেছেন আমি তা ভালো মানের দেওয়ার চেষ্টা করছি। এরপরও যদি শিক্ষার্থীরা মনে করে যে, তারা নিজেরা বাজার করবে ও নিজেরাই ম্যানেজারি করে মিল রেট ফিক্সড করবে তাহলে আমি তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। আমার যারা হলের ডাইনিং পরিচালনায় আছে তাদেরকে এ বিষয় হ্যান্ডেল করার জন্য আমি বলতে পারি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যদি আর কোনো অভিমত থাকে সেটাও আমি সলুশন করার চেষ্টা করব। '
১ দিন ৯ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৪ দিন ১ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
৫ দিন ৯ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
৬ দিন ১১ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
৬ দিন ১২ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
৭ দিন ১ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৮ দিন ৩ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
৮ দিন ৪ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে