পীরগাছায় মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে চার বছরের শিশু নিহত মাওলানা রইস উদ্দিন হতাকাণ্ডের বিচার ও ইসলাম বিদ্বেষী নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন তুহিনের মুক্তির দাবিতে ডোমারে তাঁতী দলের বিক্ষোভ ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত "পুড়াখালী তা'লিমুল কুরআন মাদ্রাসা"। চোরাই ১২ টি রেল লাইনের পাতের খুঁটির ৬টি ফেরৎ দিলেও বাকীগুলো উদ্ধারের চেষ্টা নেই ★ প্রশাসন চুরি ও উদ্ধার ঘটনাই জানেন না ★ খুঁটি উঠানো ও চোরাই পথে বিক্রয়ের নায়ক মইজুদ্দীন ধরা ছোঁয়ার বাইরে কথা বলতে পারাটা, অধিকার আদায়ের প্রথম ধাপ : পীরগাছায় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ডোমারে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে গ্রেপ্তার-১ জবির দুই হলের প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে:- উপাচার্য লালপুরে বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস পালন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কারও প্রতিপক্ষ নয়: ড. আলী রীয়াজ সুধীজনদের সাথে মত মতবিনিময় সভা করলেন সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আজ বিশ্ব মুক্ত গনমাধ্যম দিবস পুরস্কার মিলবে সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ফাঁদ জমা দিলে টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল জয়পুরহাটে নাগরিক পার্টির বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা টঙ্গী পরিদর্শন সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ৬ বস্তা ফাঁদ, বরফসহ ট্রলার জব্দ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মাটি চাপায় পড়ে বাড়ীয়ালার মৃত্যু বরিশালে সাংবাদিক নির্যাতন-চাকরিচ্যুত প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ শ্যামনগরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত

মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি : কুতুবদিয়ায় লাইসেন্স-ফার্মাসিস্ট ছাড়াই যত্রতত্র ফার্মেসী

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়  ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অলি গলিসহ বাজারে  ব্যাঙের ছাতার মত যত্রতত্র গড়ে উঠেছে লাইসেন্স- ফার্মাসিষ্ট বিহীন ফার্মেসি ও হাতুড়ে ডাক্তারদের দৌরাত্ম চরমে।আইনের কোন রকম তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স বা ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ফার্মেসি ব্যবসা।রেজিস্টার চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপসন) ছাড়াই মাদকাসক্তরা চাওয়া মাত্রই অনেক ফার্মেসিতে বিক্রি করছে নেশা জাতীয় বিভিন্ন ওষুধ। এসব ফার্মেসির বেশীর ভাগেরই নেই নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা, ড্রাগ লাইসেন্স,ফার্মাসিস্ট  ও প্রশিক্ষণ সনদ। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন গড়ে উঠছে শতশত ফার্মেসি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে মালিক ও কর্মচারীরাই ডাক্তারী করছে। আর প্রতারিত হচ্ছে অসহায় সাধারণ মানুষজন।

 উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে, মোড়ে, বাজারে অবৈধ ফার্মেসী ব্যবসা হয়ে উঠেছে জমজমাট। এসব দেখার কেউ নেই। এতে হুমকিতে পড়েছে এই অঞ্চলের জনস্বাস্থ্য। এছাড়াও অনেক মুদি ও মনোহারি দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটি, ব্যথা নাশক, যৌন উত্তেজক ঔষধ সহ নানা রকম নিম্নমানের ওষুধ। ফলে তৈরি হচ্ছে বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি। অথচ এসব বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে দেখা গেছে।

উপজেলার ছোট বড় গ্রাম ও হাট বাজারে বর্তমানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ২ শতাধিক লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি। যার অধিকাংশের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দেয়া গুটি কয়েক লাইসেন্সধারী ফার্মেসি রয়েছে, আর কিছু কিছু ফার্মেসির লাইসেন্স থাকলেও নেই ফার্মাসিস্ট। দীর্ঘদিন থেকে হয়নি লাইসেন্স নবায়ন।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, ঔষধ প্রশাসনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শুধু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে অনেকেই ফার্মেসি দিয়ে বসে পড়েছেন ঔষধ বিক্রির জন্য। আর প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টি বায়োটিক ঔষধ বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু এই নির্দেশনাও মানছে না কেউ। যাদের কোন প্রশিক্ষণ বা অনুমতি নেই, তারাই দিচ্ছে উচ্চ মাত্রায় এন্টিবায়োটিক, উল্টা পাল্টা বুঝিয়ে দিচ্ছে নিম্নমানের ঔষুধ। যার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।

অভিযোগ রয়েছে, এসব ফার্মেসির অধিকাংশই ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্রের বাইরে ঔষধ সরবরাহ করে থাকেন এবং রোগীদের বলে থাকেন একই গ্রুপের ঔষুধ ডাক্তার যেটা লিখেছেন তার চেয়েও ভাল। ফলে রোগীরা সরল বিশ্বাসে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। অবৈধ এসব ফার্মেসিতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক, ঘুমের বড়ি ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, নিষিদ্ধ  নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানা প্রকার ওষুধ অবাধে বিক্রি হয়ে আসছে। ফলে একদিকে যেমন ওষুধ ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি ঘটছে নানা ধরনের ছোট বড় দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে মানুষজন। এতে আর্থিক, শারিরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক রোগী ও তাদের পরিবার পরিজন।

এদিকে বেশিরভাগ ফার্মেসির মালিকরাও ডাক্তার সেজে বসে আছেন। উপজেলার গরীব নিরীহ মানুষ ছোট খাট অসুখে অনেক সময় সুচিকিৎসা লাভের আশায় কখনও ভিজিটের ভয়ে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের কাছে না গিয়ে সরাসরি ফার্মেসিতে গিয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ওষুধ চান। আর এসব নামধারী ডাক্তারদের দেয়া উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগের ফলে বিপরীত ফল হয় প্রতিনিয়তই। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি থেকে শুরু করে জটিল জটিল রোগও যেন এদের কাছে সাধারন বিষয়। এদের কথার ফুলঝুড়িতে মনে হবে এরা যেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেয়েও বেশি জানেন।  হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার বলেন, এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে নূন্যতম ধারনা না থাকলেও এরা রোগীকে এন্টিবায়োটিক দিচ্ছে দাপটের সঙ্গে এমোক্সোসিলিন, এজিথ্রোমাইসিন, সেফিক্সাইম, সেফুরক্সিম এক্সেটিল, সেফোডক্সিল প্রোক্সেটিল, সেফট্রিয়াক্সনসহ ব্রডস্পেকটাম এন্টিবায়োটিক রোগীদের দিয়ে থাকেন। এদের অপচিকিৎসায় রোগীরা সাময়িক উপশম পেলেও পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ হন অনেক বেশি। ফলে রেজিস্টেড হয় এন্টিবায়োটিক। 

বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানজনক ব্যবসার মধ্যে ফার্মেসি ব্যবসা অন্যতম। এখানে পুঁজি বিনিয়োগ করে সহজেই লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর সেই কারণেই অনেকে একটা দোকানে কিছু ওষুধ নিয়ে বসে পড়ে। অথচ এই ব্যবসা করতে হলে আনুসঙ্গিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে আরও অতিরিক্ত করতে হবে ফার্মাসিস্টের ট্রেনিং এবং ড্রাগ লাইসেন্স ও প্রশিক্ষণ। ওষুধ তিনিই বিক্রি করতে পারবে যার ফার্মাসিস্ট ট্রেনিং আছে এবং যিনি ড্রাগ লাইসেন্স পেয়েছেন। ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ওষুধের ব্যবসা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আইনগতভাবে এটি একটি দন্ডনীয় অপরাধ। আর ওষুধ ব্যবসার জন্যে অতি প্রয়োজনীয় এই ড্রাগ লাইসেন্সটি ইস্যু করে বাংলাদেশ সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। ১৯৪৬ সালের ড্রাগস রুল অনুযায়ী ফার্মাসিস্ট ও ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ মজুত, প্রদর্শন ও বিক্রয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কুতুবদিয়ায়  বেশির ভাগ ফার্মেসীরই অনুমোদন নেই। অনেকের লাইসেন্স নবায়ন নেই।

এ ব্যাপারে  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, জেলা ড্রাগ সুপার সহ সংশ্লিষ্টকে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান  সচেতন মহল।

Tag
আরও খবর