সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলের উদ্দেশ্যে আহ্বান করতেছেন দেশের ১ ইঞ্চি জমিও যাতে আবাদবিহীন না থাকে। যার সামর্থ্য যেমন আছে সে অনুযায়ী যাতে বপন করা শুরু করে। হোক সেটি গাছ কিংবা ক্ষুদ্র ফসল। আন্তর্জাতিক সংস্থা ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের মোট ৪৫ টি দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করতেছে। তাহলে সত্যিই কী দুর্ভিক্ষ আসছে? কেনই বা এই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা হচ্ছে? তো চলুন জেনে নেয়া যাক। বিশ্বের যে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন হয় সেগুলোকে ব্রেড বাস্কেট বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে পৃথিবীতে এমন ৬টি ব্রেড বাস্কেট রয়েছে। ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, চায়না, কানাডা, আসিয়ান(দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অঞ্চল) এবং রাশিয়া-ইউক্রেন এরিয়া। এসকল জায়গা থেকেই পৃথিবীর খাদ্য দ্রব্যের সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। কিন্তু যুদ্ধ চলমান থাকায় উৎপাদন এবং রপ্তানি অনেকাংশে বন্ধ রয়েছে। পৃথিবীর তিনভাগের একভাগ গম ও বার্লি রাশিয়া এবং ইউক্রেনে উৎপাদন হয় এবং সমগ্র বিশ্বের ৪০ শতাংশ তেল এবং ১৬ শতাংশ ভুট্টা এই রাশিয়া-ইউক্রেন অঞ্চল থেকে উৎপাদিত হয়। সেই সাথে স্যার উৎপাদনের সবচেয়ে বড় বাজার ধরে রেখেছে রাশিয়া। বিশ্বের ২৫ শতাংশ নাইট্রোজেন সার, ২২ শতাংশ অ্যামোনিয়া সার, ১৪ শতাংশ ইউরিয়া সার এবং ১৫ শতাংশ ফসফেট সার উৎপাদন করে রাশিয়া। আমেরিকার বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকায় স্যার রপ্তানি ও এখন বন্ধ। ব্রাজিলের উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ সারের রপ্তানির উপর নির্ভর করে কিন্তু এই যুদ্ধ চলমান থাকায় ব্রাজিলের সার আমদানিও বন্ধ রয়েছে। ব্রাজিল সারের অভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারছে না। তাই ব্রাজিলে উৎপাদন বহুলাংশে কমে এসেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে দুর্ভিক্ষ ঘটার। তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সম্প্রতি ইউরোপে খরা, অস্ট্রেলিয়ায় বন্যা। সেই সাথে করোনা অতিমারির প্রভাবতো রয়েছেই। এসব কারনে FAO(Food and Agriculture Organization) বিশ্বের ৪৫টি দেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করতেছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, আফ্রিকার- ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া এবং দক্ষিণ সুদান। এশিয়ার মধ্যে ইয়েমেন এবং আফগানিস্তান। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতিও খুবই ঝুকিপূর্ণতায় রয়েছে। সর্বশেষ যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখেছে বাংলাদেশ সেটি ঘটেছিল ১৯৭৪ সালে, প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ সেই দুর্ভিক্ষে মারা যায়। যদি বর্তমানের আশঙ্কা কৃত দুর্ভিক্ষ ঘটে তাহলে সেটি পূর্বের থেকে ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় সরকার এবং জনগণ মিলে যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে, খাদ্য দ্রব্যের উপর ভর্তুকি দিতে হবে, স্যারের দাম কমাতে হবে এবং তা কৃষকের কাছে সহজে সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। হিমাগারের যথেষ্ট ব্যবস্থা করতে হবে। এবং ফসল উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে কম সময়ে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায়। সাধারণ জনগণ যেসব ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। সকল জমিতে উৎপাদন করতে হবে, অপচয় করা যাবে না, বিলাসিতা করা যাবে না, ব্যাংকে জমানো টাকা থাকলে তা জমিয়ে না রেখে জমি কেনায় কিংবা স্বর্ণে রেখে দিতে হবে। কেননা টাকার মূল্য মান অধিক হারে কমে যেতে পারে। পরিশেষে, যদি সবাই একতাবদ্ধ হই, তাহলে আশা করা যায় সরকার এবং জনগণের সর্বোচ্চ সহযোগিতায় আমরা এই আসন্ন দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো।
-রুবেল আহমেদ, শিক্ষার্থী,
ঢাকা কলেজ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ।
তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ঢাকা কলেজ শাখা।
১৮ দিন ১ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
২৩ দিন ১৯ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
২৪ দিন ১৯ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
২৯ দিন ৪ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৩১ দিন ১২ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
৩৮ দিন ৫২ মিনিট আগে
৩৮ দিন ১৭ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
৩৯ দিন ১৫ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে