চাষের জমিতে পানি ঢুকানো নিয়ে আহত রিপন, হাসপাতালে ভর্তি। ৫৮দিন সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা উপলক্ষে র‌্যালী রাজশাহী-১ আসনে শরীফ উদ্দিনকে চাই তৃণমুল বিএনপি জয়পুরহাটে নানা আয়োজনে শ্রমিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত মাভাবিপ্রবিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার প্রায় ৯৫ শতাংশ কিশোরগঞ্জে তিস্তা সেচ ক্যানেল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার ৫ মে দেশে ফিরছেন বেগম খালেদা জিয়া ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক শিশুর মৃত্যু সিরাজগঞ্জে মাসব্যাপী অনূর্ধ্ব ১৫ ফুটবল ও অনূর্ধ্ব ১৪ অ্যাটলেটিক্স প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি হারুন অর রশিদ খান হাসান ফতুল্লায় ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে ৪ রাউন্ড গুলি করে সন্ত্রাসীরা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসেনাগরপুরে ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের র‌্যালী ও আলোচনা সভা মাগুরায় শ্রীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১ নওগাঁয় ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় অবশেষে প্রধান শিক্ষক আটক শ্রীপুরের সব্দালপুর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সভাপতি বকুল মোল্লার স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল শ্রীপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও শৈলকুপায় ঋণের কারণে মৃত ব্যক্তির জানাজা আটকে দিলেন পাওনাদাররা! প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা গাইবান্ধার ঢোলভাঙ্গায় ট্রাক চাপায় নিহত দুই যুবক, আহত আরও দুই জন। হাওর রক্ষা আন্দোলন মৌলভীবাজার এর ৪৩ সদস্যের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা রামগড় উপজেলা প্রশাসন ও শ্রমিকদলের আন্তর্জাতিক ১লা মে দিবস পালিত শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ইবিতে শ্রমিকদের নিয়ে তরমুজ উৎসব ও স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন

ধুলোর ঝাঁপি থেকে ফানেল ঘূর্ণি: কোন ঝড় কত ভয়ংকর

◾আবু রায়হান || উতপ্ত গরম দুপুরে হঠাৎই আকাশে জমে ওঠে কালো মেঘ। দূর দিগন্তে বিদ্যুৎ চমকায়, হাওয়ার দাপটে উড়ে ধুলোর ঝাঁপি। ঝড় নামে, কখনও তার নাম হয় ‘কালবৈশাখী’, আবার কখনও ‘টর্নেডো’। প্রকৃতপক্ষে এই ঝড়েরা কি এক? কীভাবে জন্ম নেয় তারা? কীভাবে বোঝা যায় কোন ঝড় কতটা ভয়ংকর? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে খুলে যায় প্রকৃতির এক জটিল রহস্যময় বই।

ঝড় হলো প্রকৃতির স্বাভাবিক এক প্রতিক্রিয়া, বায়ু ও তাপমাত্রার তারতম্য থেকে জন্ম নেয়া বায়ুচাপের ভিন্নতা থেকেই এর সূচনা। তবে সব ঝড় একরকম নয়। আমাদের দেশে প্রধানত দুটি নাম বেশি উচ্চারিত হয় কালবৈশাখী এবং টর্নেডো। কালবৈশাখী, বাংলা বর্ষপঞ্জির ‘বৈশাখ’ মাস ঘিরে নাম হলেও, সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসে দেখা যায়। এটি পশ্চিমাঞ্চলীয় হাওয়া ও জলীয়বাষ্পের সংঘাতে সৃষ্ট একটি হঠাৎ, স্বল্পস্থায়ী অথচ তীব্র ঝড়, যার সঙ্গে থাকে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড দমকা হাওয়া। শহর হোক বা গ্রাম—কালবৈশাখীর এক আঘাতে লন্ডভন্ড  হয়ে যেতে পারে গোটা বসতি। অন্যদিকে, টর্নেডো হলো ঝড়ের সবচেয়ে বিধ্বংসী রূপ। আকাশ থেকে মাটির দিকে নেমে আসা এক ‘ফানেল’-আকৃতির ঘূর্ণিঝড়। এটি দেখতে যেমন ভয়ংকর, এর আঘাত তেমনি ধ্বংসাত্মক। সীমিত পরিসরে হলেও এর প্রভাব সর্বগ্রাসী। বাড়িঘর, গাছপালা এমনকি গাড়ি ও রেললাইন পর্যন্ত তুলে নিতে পারে বাতাসের তোড়ে।


কালবৈশাখী তৈরি হয় যখন ভূমির উপরে অতিরিক্ত গরম বায়ু উঠে গিয়ে ঠান্ডা ও আর্দ্র বায়ুর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এর ফলে সৃষ্টি হয় বজ্রঘন মেঘ বা কিউমুলো নিম্বাস (Cumulonimbus), যেখান থেকে শুরু হয় বজ্রপাত ও দমকা হাওয়া, এটাই কালবৈশাখীর শুরুর মুহূর্ত। আর টর্নেডোর জন্ম প্রক্রিয়া আরও জটিল। উষ্ণ, আর্দ্র বায়ু এবং ঠান্ডা, শুষ্ক বায়ুর শক্ত সংঘাতে যদি ওপরের স্তরে বায়ুর গতির পার্থক্য (wind shear) থাকে, তখন তৈরি হয় ঘূর্ণনক্ষম বাতাস। এই ঘূর্ণন যদি উল্লম্বভাবে বিকাশ লাভ করে, তবে সেটিই পরিণত হয় টর্নেডোতে। এটি মেঘের নিচ থেকে ফানেলের মতো নেমে আসে, এবং যেদিকে যায়, সেখানেই তাণ্ডব।


কালবৈশাখী সাধারণত ঘণ্টায় ৬০-১০০ কিমি বেগে বয়ে যায়। এতে কৃষি, কাঁচা ঘরবাড়ি, ফলের বাগান, বিদ্যুৎ সরবরাহসহ নানা কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় বজ্রপাতে প্রাণহানিও ঘটে।

অন্যদিকে, টর্নেডোর বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২০০-৫০০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। ১৯৮৯ সালের ২৬ এপ্রিল মানিকগঞ্জে আঘাত হানা টর্নেডোকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা হয়, যেখানে কয়েক শতাধিক মানুষ মারা যান, হাজারো ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়, এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।


প্রাকৃতিক দুর্যোগ থামানো না গেলেও, সচেতনতা ও পূর্বপ্রস্তুতি ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে দিতে পারে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এখন অনেক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঝড়ের পূর্বাভাস দিতে পারে। মোবাইল অ্যাপ, সাইরেন ও গণমাধ্যমে আগাম বার্তা পৌঁছানোর মাধ্যমে অনেক প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব।ক


ঝড় প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য রূপ, কখনো সে বার্তা দেয় ঋতুর আগমনের, কখনো রেখে যায় ধ্বংসের ছাপ। কালবৈশাখী আমাদের আবহমান বাংলার গ্রীষ্মের অনিবার্য রূপ, তাতে আছে ভয়, আছে সৌন্দর্যও। আর টর্নেডো? সে এক অনধিক অতিথি, যার আগমন যেমন হঠাৎ, প্রস্থান তেমনি ধ্বংস রেখে যায়। কিন্তু ভয় পাওয়ার আগে প্রয়োজন বুঝে নেওয়া প্রকৃতিকে, তার সংকেতকে, আর আমাদের সক্ষমতাকে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেমন দুর্যোগকে আগেভাগে চিনতে পারি, তেমনি পারি নিজেকে প্রস্তুত করতে। সচেতনতা, সতর্কতা আর সম্মিলিত উদ্যোগই পারে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে।

আরও খবর