ইতালি বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী নিয়োগ করতে আগ্রহী : প্রধান উপদেষ্টাকে মাত্তেও ফের বাড়ল সোনার দাম, কাল থেকেই কার্যকর উর্দু ভাষায় পাকিস্তান মাতাবে সিয়ামের ‘জংলি’, চলছে ডাবিং কালীগঞ্জে কিশোরী উদ্ধারে এসে হামলার শিকার যশোরের তিন পুলিশ সদস্য ও এক গৃহবধূ মিরসরাইয়ে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে ছাত্র সমাবেশ গলায় লিচু আটকে প্রাণ গেল শিশুর অবশেষে বদলি হলেন ৫ যুবককে হেনেস্তাকারী ইসলামপুর সার্কেলের সেই এএসপি বানিয়াচংয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক সাতক্ষীরায় বিজিবি’র অভিযানে কাটাগ্রা ট্যাবলেট, ১০ বোতল মদসহ ৬ লক্ষাধিক টাকার মালামাল আটক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলার প্রতিবাদে মোংলায় বিক্ষোভ শামীম ওসমান পরিবারের দুই সহযোগী সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মধুপুরে বিএনপি নেতর বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল মধুপুরে সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল নালিতাবাড়ীতে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, ও দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত নালিতাবাড়ীতে দুর্নীতি বিরোধী বিষয়ক ফোকাল পার্সনদের দুর্নীতি ও এর প্রতিরোধ এবং তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ডোমারে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)-কে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইয়াবাসহ স্বামী-স্ত্রী আটক আশাশুনি সদরের হাটবাজার ও আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে বন্দোবস্তের আবেদনকৃত প্রস্তাবিত খাস জমি পরিদর্শন ঝিনাইগাতীতে পেট্রোলের দোকানে অভিযান, ৪টি দোকানে ২৭ হাজার টাকা জরিমানা

কাঁটাতারে জড় ও জীবন

Md Nazmul Hasan ( Contributor )

প্রকাশের সময়: 07-01-2024 08:56:15 am

মোঃ নাজমুল হাসান

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত কোনটি? এ প্রশ্নের জবাবে আমাদের মনে ভেসে উঠতে পারে ফিলিস্তিনিদের গাজা ভূখণ্ডের সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্তের কথা। কেননা, বছরের পর বছর সেখানকার বহু ফিলিস্তিনির নিষ্ঠুর হত্যার খবর বিশ্বের প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছে। অন্য আর যে সীমান্তে রক্ষীদের গুলিতে প্রাণহানির কথা শোনা যেত, সেটি হলো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকোর সীমান্ত। কিন্তু গুগলে অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে যে এই প্রশ্নের উত্তরটি হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। কেননা, সংখ্যার দিক থেকে সীমান্তে প্রাণহানিতে বিশ্ব রেকর্ডটি আমাদেরই। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে হতাহতের সবাই না হলেও অন্তত ৯৫ শতাংশই বাংলাদেশি। কিছুদিন পর পর সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে খবর চোখে পড়লেও বিষয়টি যে একটা বিশ্ব রেকর্ডে দাঁড়িয়েছে, সেটা প্রথম গণমাধ্যমের নজরে আসে ব্রিটেনের চ্যানেল ফোর-এর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। 


২০১১ থেকে ২০২৩। আজ ৭ জানুয়ারী। ফেলানী হত্যার বিচার না পাওয়ার ১৩ তম বছর। 

দেশভাগের পর জমিনের মধ্যখানে কাঁটাতারের দেয়াল তুলে তারপর সেই কাঁটাতারে দ্রুমদাম গুলি করে ঝুলে আছে কুয়াশায় রক্ত জমে কালো হয়ে থাকা ফেলানীর লাল জবার মতো শরীর। ঝুলে থাকে পোশাকের মতো, ঝুলে থাকে ১৪ বছরের ছোট্ট কিশোরী। সেই গুলির ক্ষত চুয়ে চুয়ে রক্ত নামে। সীমান্তের সবুজ জমিনে।


২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। হত্যাকাণ্ডের তের বছর পেরিয়ে গেলেও সন্তান হত্যার বিচার পায়নি পরিবার। ফেলানী হত্যার বিচারের আশায় এখনো কাঁদে তার পরিবার। 


কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের শ্রমিক নূরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতের বঙ্গাইগাঁও এলাকায়। সেখানেই তিনি একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এর মধ্যে বাংলাদেশে নিজের খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় কিশোরী ফেলানী খাতুনের। সেই উদ্দেশ্যে বাবা নুরুল ইসলামের বড় মেয়ে ফেলানীকে নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে রওনা দেন। 


২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুয়াশা ঢাকা ভোর ৬টার দিকে দালালের মাধ্যমে ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে মই বেয়ে কাঁটাতার পার হচ্ছিল ফেলানী ও বাবা নুরুল ইসলাম। মইয়ের সামনে ছিল বাবা নুরুল ইসলাম তার পেছনে ফেলানী। এ সময় বিএসএফ টের পেয়ে গুলি ছুড়লে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফেলানীর বাবা নেমে পড়ায় বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে কাঁটাতারে ঝুলে পড়ে কিশোরী ফেলানী। গুলিবিদ্ধ হয়ে ছটফট করে পানি পানি বলে চিৎকার করতে করতে নির্মমভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে ফেলানী। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে তার লাশ।


এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফএর এ কোর্টে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফর বিশেষ কোর্ট। রায় প্রত্যাখ্যান করে আবার বিচার দাবি জানায় ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুন:বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর বিএসএফর আদালতে শুধু স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই ওই আদালত পুনরায় আসামি অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয়। রায়ের পর একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিমকোর্টে রিট পিটিশন করে। যা এখনো চলমান। 


আজ ২০২৪ এ এসে বিশ্বায়নের যুগে ওপার বাংলা-এপার বাংলা মাঝখানে কাঁটাতারে গুলি খেয়ে ঝুলে থাকতে ফেলানী লাশ দেখার কোন আগ্রহই নেই এই বিশ্ব মানবতার। আজকের দিনে আমার একটাই প্রত্যাশা বিভিন্ন অজুহাতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সহ বিশ্বের প্রতিটি সীমান্তে প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যার মিছিল বন্ধ হোক।


মোঃ নাজমুল হাসান: শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

Email: pressnazmulbd@gmail.com

আরও খবর