বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যুগপৎ আন্দোলন কয়রায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন গুচ্ছ 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৯ মে, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিএনপি ব্যবসায়ী বান্ধব পরিবেশ গড়তে  বদ্ধপরিকর: বিএনি নেতা ওবায়দুর রহমান চন্দন সুন্দরবন থেকে ৪২ কেজি হরিণের মাংস জব্দ, শিকারী পলাতক ঘাটাইলে রাত হলেই চলে মাটি খেকোদের তান্ডব আদমদীঘিতে পোল্ট্রি ফার্মের ১হাজার মুরগীর বাচ্চা পদদলিত করে মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা আদমদীঘিতে জামায়াত নেতাসহ তিনজনকে মারপিট করে দুই মোটরসাইকেল মোবাইল ফোন ছিনতাই দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাড়াহুড়ো কোনো কাজ ভাল লাগে না লোহাগাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত তামিম চিরনিদ্রায় শায়িত। কচুয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উপজেলা সার্ভেয়ারের পরিদর্শন নবনিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় চিলমারীতে "কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের" দিনব্যাপী, হাতে-কলমে শিক্ষা সফর শেরপুরের শ্রীবরদীতে ভেজাল বিরোধী অভিযানে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ঝিনাইগাতীতে কারিতাসের আয়োজনে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উদ্বেগ একনেকে ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তে এসপিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশইন গ্রহণযোগ্য নয়

শহীদ শামসুজ্জোহা ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সস এর বিজয় দিবস উদযাপন

ছবি: দেশচিত্র
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ 'মহান বিজয় দিবস' উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শহীদ শামসুজ্জোহা ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সস এর আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়।

প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এর মাধ্যমে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদ শামসুজ্জোহা ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সেস এর প্রতিষ্ঠাতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ হেলাল উদ্দিন মহান মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ নারী-পুরুষ সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদেরকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের ফলে বাংলাদেশ একটি সদ্যোজাত স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নেয়। তার মতে, ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটে। এই দ্বিতীয় উপনিবেশিক শাসনের সূত্রপাত হয় ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের মধ্য দিয়ে। প্রথম উপনিবেশিক শাসনের সূত্রপাত হয়েছিল ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট নবাবের পরাজয়ের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশরা প্রায় ২০০ বছর তাদের উপনিবেশিক শাসন অব্যাহত রেখেছিল। ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট পাকিস্তান ও ভারত রাষ্ট্রের জন্ম হলে জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমানে বাংলাদেশ পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হয়। বাঙালিরা মনে করেছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে সম্পৃক্ত হলে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসকদের শাসন ও শোষণের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসকদের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন ও শোষণের ফলে পূর্ব পাকিস্তান একটা আধা-উপনিবেশিক রাস্ট্রে পরিনত হয়। এই উপলব্ধি এবং বাস্তবতার নিরিখে পূর্ব পাকিস্তানের সচেতন জনসাধারণ পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের শোষণের হাত থেকে বিশেষ করে আধা-উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বস্তরের জনসাধারণ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। উল্লেখ্য যে, শহীদ ড. শামসুজ্জোহা ছিলেন পাকিস্তানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬৯ সালে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষকরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাকিস্তানি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। সেই সময় ড. শামসুজ্জোহা স্যার ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। ১৯৬৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাকিস্তানি সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে অবস্থান নেন। এই সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর যাতে গুলি চালানো না হয় এই উদ্দেশ্যে প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে উপস্থিত হন এবং পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরকে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি না চালানোর জন্য বলেন। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁর কথায় কর্ণপাত না করে ড. শামসুজ্জোহার স্যারের উপর নির্বিচারে গুলি করে তাঁকে হত্যা করেন। শহীদ ড. শামসুজ্জোহা স্যার ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বুলেটের আঘাতে তিনি শহীদ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। শহীদ ড. সামসুজ্জোহা স্যারের কবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থিত। শহীদ ড. শামসুজ্জোহা স্যারের এ আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের অনেকেই জানেন না। একথা অনস্বীকার্য যে, ড. শহীদ শামসুজ্জোহার স্যারের হত্যাকান্ড পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বিরোধী আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। কেননা, জোহা স্যারের হত্যাকাণ্ডের ফলে সারা বাংলাদেশ ব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামরিক জান্তা সরকার বিরোধী আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে, জান্তা সরকার ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম প্রধান আসামি শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। তাঁর হত্যাকান্ড বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষকে জান্তা সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। ফলে ড. শামসুজ্জোহার স্যারের হত্যাকান্ড বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এবং তৎকালীন প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা স্যারের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত "শহীদ শামসুজ্জোহা ইনস্টিটিউট অব বায়েসায়েন্সেস" নামক প্রতিষ্ঠান রাজশাহীতে যাত্রা শুরু করে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উপলক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সের পক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে পুষ্প স্তবক অর্পণ করা হয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আরও খবর