টেকনাফ র‌্যাবের পৃথক অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত ৪ আসামী গ্রেফতার সীতাকুণ্ডের পাঁচ গরু চকরিয়ায় উদ্ধার, অস্ত্রসহ তিন চোর গ্রেপ্তার ইউপি নির্বাচনে কারসাজি ও দুর্বৃত্তায়ন সহ্য করা হবেনা কক্সবাজারে বাথরুমে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতকের ঠাঁই হল নার্স মিনারার কোলে দ্বীপাঞ্চল সম্মাননা পেলেন ৭ তরুণ আদমদীঘিতে প্রানিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন আম বাগানের পতিত জমিতে সবজি উৎপাদনে কৃষক রাকিবের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ, গরম আরও বাড়ার আভাস ডিপজল ভালো মানুষ, তাকে নিয়ে কোনো ভয় নেই: নিপুণ জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ আটকে দিলো যুক্তরাষ্ট্র চুয়াডাঙ্গায় মরুর উষ্ণতা, জনজীবনে অস্বস্তি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাশের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখলে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র নলছিটির সুগন্ধা নদীতে নিখোঁজ আদিত্য'র খোঁজ মেলেনি ৭ দিনেও শ্যামনগরে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ দুর্গাপুরে ১৮ থেকে ১৯ ঘন্টা থাকছে না বিদ্যুৎ ঈদগাঁওতে ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু টেকনাফের নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিল ১৩ বিজিপি সদস্য বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার যাওয়ার পথে মৃত্যু, এগিয়ে আসেনি কেউ দুর্গাপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুই সমর্থককে কুপিয়ে জখম

সরকারি চাকরিজীবীদের দিতে হবে না সম্পাদের হিসাব

admin - দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 05-10-2022 11:24:24 am

পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দেয়ার নিয়ম থাকলেও কেউ তা দেন না। এই হিসাব দেয়ার জন্য সরকারপ্রধানের নির্দেশ থাকলেও তা মানা হয়নি। যে বিধিমালায় সম্পদের হিসাব দেয়ার কথা বলা আছে এবার সেটি সংশোধন করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা প্রতি বছর যে আয়কর দেন, সেই বিবরণীকে সম্পদের হিসাব বিবরণী হিসেবে আমলে নেয়ার পথ সুগম হচ্ছে। 


আচরণ বিধিমালার সংশোধিত খসড়া সচিব কমিটিতে অনুমোদনের পর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। ভেটিং শেষে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় খসড়াটি ফেরত দেবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশোধিত সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা জারি করবে।

১৯৭৯ সালে জারীকৃত বিধিমালা অনুযায়ী, পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল এবং স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রির অনুমতি নেয়ার কথা। কেউই এই নিয়ম না মানায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আচরণ বিধিমালার ১১, ১২ ও ১৩ বিধি কর্মকর্তাদের অনুসরণের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন। গত বছরের ২৪ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে বিধিমালা বাস্তবায়নে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে গেল বছরের মধ্যে সম্পদের হিসাব দাখিলের সময় বেঁধে দেয়।


নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরগুলোর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১৭ হাজার ৫৭৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ১৭ হাজার ২০৮ জন সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেন। বেসামরিক প্রশাসনে এখন ১৯ লাখ ১৩ হাজার ৫২ জন কর্মচারী চাকরি করছেন।


বিধিমালা সংশোধনের খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী নির্ধারিত ছক অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে তার বা তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বিমা পলিসি এবং অলংকারাদিসহ নগদে রূপান্তরযোগ্য সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা করবেন। প্রত্যেক কর্মচারী প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ডিসেম্বর মাসে বিগত পাঁচ বছরের হিসাব বিবরণীতে প্রদর্শিত সম্পত্তির হিসাব বিবরণী বা আয়কর সনদ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে জমা দেবে। 


বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর তাদের ক্যাডারভুক্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পদায়ন করা হয়। সংশোধিত বিধিমালা জারি হওয়ার পর ২৬টি ক্যাডারের কোন কর্মকর্তাকে কোন দপ্তরে এবং কীভাবে আয়কর বিবরণী জমা দিতে হবে, তা সরকার নির্ধারণ করে দেবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।

কিন্তু সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা দিয়ে গত বছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছিল, সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার সময় কৃষি ও অকৃষি জমি, ইমারত, বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আবশ্যিকভাবে তথ্য দিতে হয়। এর সঙ্গে অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে অলংকার, শেয়ার, বিমা, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, যানবাহন, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র যেমন- কম্পিউটার, টেলিভিশন, এয়ারকুলার, রেফ্রিজারেটর, ওভেন ইত্যাদি অর্জনের তারিখ, যার নামে অর্জিত, সম্পদ বা সম্পত্তির প্রকৃতি ও অবস্থান, সম্পত্তির পরিমাণ, কীভাবে অর্জিত ও অর্জনের তারিখে মূল্য, কেনা হলে অর্থের উৎস জানাতে হবে।

সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা না দিয়ে আয়কর বিবরণীকে আমলে নেয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া যৌক্তিক হবে না বলে মনে করছেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, শুধু সরকারি চাকরিজীবী নয়, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী সবারই সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য সরকারি নির্দেশনা আছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারেও এটা বলা হয়েছে। সেটা যদি ফলো করা না হয়, তাহলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুযোগটা নেবেন। তারা বলবেন, অন্যরা দেয় না আমাদেরটা কেন দেব।

‘তারা যে নিয়মটা করতে চাচ্ছেন তা কতটা যৌক্তিক হবে তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে এটা মোটেই যৌক্তিক হবে না। কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে আমরাও দিই না, তারাও দেবে না। এটা যারা করতে চাচ্ছেন এবং যারা কর্তৃপক্ষ তারাই এর যৌক্তিকতা নিয়ে বলতে পারবেন।’

সম্পদ বিবরণী দাখিলের আলাদা ফরম থাকার প্রসঙ্গ তুলে আবদুল মজিদ বলেন, আয়কর বিবরণীতে অনেক কিছুই থাকে না। আর ট্যাক্স তো গোপনীয়, সেটা অন্যের যাচাই-বাছাই করার কোনো সিস্টেম নেই। কিন্তু সম্পদ বিবরণীর ফরমে অনেকগুলো তথ্য দিতে হয়।

বর্তমান বিধিমালার ১১, ১২ ও ১৩ বিধিতে ১৫ হাজার টাকার বেশি মূল্যের কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা বা হস্তান্তরে অনুমোদন নেয়া, অনুমোদন না নিয়ে ব্যবসায়িক বা আবাসিক উদ্দেশ্যে ইমারত নির্মাণ না করা, সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার, সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বিমা পলিসি এবং মোট ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের অলংকারসহ সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে সরকারের কাছে ঘোষণা দেয়ার নিয়ম আছে।

খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী ৫ লাখ টাকার বেশি মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা বা কারও কাছে হস্তান্তর করতে চাইলে অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কোনো কর্মচারী অনলাইন মিডিয়া এবং ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সম্প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। সংবাদপত্র বা সাময়িকীতে নামে বা বেনামে নিবন্ধও লেখা যাবে না।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিধিমালায় সম্পদের হিসাব দাখিল করার নির্দেশনা থাকলেও কোথায় তা দাখিল করতে হবে, সে বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। এই সুযোগ নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব দেননি। সরকারি চাকরিজীবীদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি বছর আয়কর বিবরণী দাখিল করতে হয় বলে এখন সেই আয়কর বিররণীকে সম্পদের হিসাব বিবরণী হিসেবে আমলে নেয়ার নিয়ম করা হচ্ছে। সংশোধিত বিধিমালায় আয়কর বিবরণীর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার যে অঙ্গীকার এটি তার সম্পূর্ণ বিপরীতমূখী একটি পদক্ষেপ। যেকোনো দেশ তার উন্নয়নের অংশ হিসেবে ওপরের দিকে যায়। ওপরের দিকে যাওয়ার অন্যতম মাপকাঠি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। এসবকে বিবেচনায় রেখে নির্বাচনি অঙ্গীকারসহ সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে যেসব বিধিমালা আছে সেগুলোর মধ্যে যেসব বিষয় আছে, শুদ্ধাচার কৌশলের মধ্যেও তা নির্ধারিত আছে। সেগুলো যে অমান্য করা হচ্ছে, সেই অমান্য করাকে প্রশ্রয় দেয়ার জন্য বিপরীতমুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এটা কোনো অবস্থাতেই ইতিবাচক হতে পারে না। এতে ক্ষমতার অপব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাবে এবং অনেকে উৎসাহিত হবে।’

বিধিমালা সংশোধনের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাশেম মো. মহিউদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের রিটার্ন তো দিতেই হয়, আমরা চেষ্টা করছি ওভাবেই রাখার জন্য। যারা রিটার্ন দেন তাদের যেন দেয়া না লাগে। যদি সরকারের দরকার হয়, তাহলে সম্পদের হিসাবটা ওখান থেকে পিক করবে। তবে আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় কি না সেটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’

অতিরিক্ত সচিব জানান, যাচাই-বাছাই শেষে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে খসড়া বিধিমালাটা ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে হাতে পাওয়া যাবে। এনবিআরের আইনগুলো পর্যালোচনা করে খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংশোধন আসতে পারে। এ ছাড়া ভেটিংয়ে অনেক কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব আসতে পারে। সেগুলো পর্যালোচনা করেই বিধিমালা চূড়ান্ত । 


তথ্যসূত্র:  দৈনিক বাংলা

আরও খবর

deshchitro-661fba26815ce-170424060142.webp
রাজশাহী কলেজে মুজিবনগর দিবস উদ্যাপন

২ দিন ১ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে