মৃত্যু জাল সনদ তৈরি করতেন মিল্টন সমাদ্দার দেশব্যাপী শক্তিশালী বজ্রপাত, ব্যাপক শিলাবৃষ্টি কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস সরকারের সব উন্নয়ন-অগ্রগতি শ্রমিকদের হাত ধরেই: হানিফ শিক্ষকরাই আগামী দিনের স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর : শিল্পমন্ত্রী আগামীকাল শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন ভারতের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে খুবির এমওউ সাক্ষরিত নীলফামারীতে স্কুলছাত্রীর ঝু*লন্ত লা*শ উদ্ধার মহান মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সর্বদা; খাদ্যমন্ত্রী শার্শায় ডিবির অভিযানে গ্রেফতার ০১ ও ১ টি মোটরসাইকেল জব্দ টেকনাফে র‌্যাবের অভিযানে চাঞ্চল্যকর রফিক হত্যা মামলার আসামী ও আরসা সন্ত্রাসী গ্রেফতার প্রসঙ্গঃ শ্রমিক দিবস ও শ্রমিকের অধিকার কালিগঞ্জে নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদানে ব্যাপক স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ উখিয়ায় আলাদিন গ্যাস পাম্পের বিরুদ্ধে গ্যাস কম দেওয়ার অভিযোগ উখিয়ার অপ্রতিরোধ্য জনপ্রতিনিধি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী’র পদত্যাগ! থাইংখালীতে ‘মে দিবস’ উপলক্ষে রাজমিস্ত্রিদের র‍্যালি ও আলোচনা সভা নন্দীগ্রামে নানা আয়োজনে মহান মে দিবস পালিত নন্দীগ্রামে নানা আয়োজনে মহান মে দিবস পালিত টেকনাফ, কক্সবাজারে হালকা বৃষ্টি, কাল থেকে কমতে পারে তাপমাত্রা অপহরণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্র সাইফকে উদ্ধার, ৫ অপহরণকারী গ্রেপ্তার

প্রত্যাশা নতুন মাইলফলকের

সংগৃহীত ছবি

◾ নিউজ ডেস্ক


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন বছর পর আজ সোমবার ভারতের উদ্দেশ্য ঢাকা ছেড়েছেন। বিশেষ ফ্লাইটে চার দিনের সফরে সকাল ১০টার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন তিনি। ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় নয়া দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের সফরে বাংলাদেশ-ভারত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন মাইলফলক স্থাপন হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) স্বাক্ষরের মধ্য দিয়েই দুই বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন যাত্রা শুরু হতে পারে। 


তবে গতকাল রবিবার পর্যন্ত এ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেননি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা। সূত্র জানায়, হয় সেপা চুক্তিটি স্বাক্ষর হবে, না হয় চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে একটি যৌথ ঘোষণা আসবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেপা স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে; এ অঞ্চলে আগের চেয়ে অনেক বেশি বাণিজ্যিক সুবিধা পাবে। এর বাইরে কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে একটি চুক্তি হতে পারে। এ ছাড়া জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, কানেক্টিভিটি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে ১০-১২টি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভারত সবসময়ই বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের মধ্য দিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। 


প্রধানমন্ত্রীর সফরে যেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে গুরুত্ব পাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জ্বালানি সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, রেলপথ ও তথ্যপ্রযুক্তি। এসব বিষয়ে ১০ থেকে ১২টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। সেপা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি। শেষ মুহূর্তে এ চুক্তি স্বাক্ষর হতেও পারে। আবার চুক্তি স্বাক্ষর সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকও সই হতে পারে। সেক্ষেত্রে সেপা চুক্তির বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট যৌথ ঘোষণা আসবে। 


সূত্র জানায়, কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে কুশিয়ারা নদী দিয়ে ভারতীয় জাহাজ সিলেট সীমান্ত পর্যন্ত আসতে পারবে। এর ফলে ভারত থেকে নৌপথে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহন সহজ হবে। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারত থেকে কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।


সূত্র আরও জানায়, দিল্লি সফরে হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে। এ ছাড়া বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সংকট পরিস্থিতিতে বর্তমান বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির বিষয়গুলোও স্থান পাবে। 


কী আছে সেপাতে : সূত্র জানায়, সেপার লক্ষ্য হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন বাড়ানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। এ চুক্তির প্রথম বছরেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে ৫ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার। চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে একটি ‘উইন-উইন সিচুয়েশন’ (উভয় পক্ষই লাভবান হয় এমন পরিস্থিতি) তৈরি করতে সক্ষম হবে। এ চুক্তি হলে কেউ চাইলেও চুক্তির তালিকায় থাকা পণ্যে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক বসিয়ে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। ভারতের সঙ্গে সেপা চুক্তি হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত বাধাগুলো দূর হবে। তখন যৌথ টেস্টিং সার্ভিস, ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হবে। এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে বর্তমান (প্রায় ১.২৮ বিলিয়ন ডলার) রপ্তানি আয়ের বাইরে আরও ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।


সূত্র আরও জানায়, সেপা চুক্তি স্বাক্ষর হলে পাল্টে যাবে বাংলাদেশের আমদানি চিত্র। ভারতের বেশির ভাগ পণ্য ও সেবা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে সহনীয় এবং পরিবহন খরচ কম। ফলে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা একই পণ্যের জন্য দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোর বদলে ভারতমুখী হবে। তখন ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ বাড়বে। সে ক্ষেত্রে বর্তমান ৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি আরও ৪ থেকে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়ে যাবে।


যেসব বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কূটনৈতিক সূত্র জানায়, কয়েকটি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে- দুই দেশের মধ্যে সেপা সইয়ের ঘোষণা। দ্বিতীয়ত, ঢাকা ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ও ভারতের ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে এক সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের বিচার বিভাগের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে একটি সমঝোতা সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। 


অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- দুই দেশের সরকারি টেলিভিশনের মধ্যে সহযোগিতা, সমুদ্র অর্থনীতি বিকাশে সহযোগিতা, নেপাল থেকে ভারত হয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানি এবং দুই দেশের রেলওয়ে খাত বিকাশে দুটি সমঝোতা স্মারক হতে পারে। এ ছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তা খাতেও সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ। উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ বিষয়ে চুক্তি অথবা সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।


বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য : সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ভারতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফর কিংবা বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর সবসময়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশ-ভারত ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দুটি দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের দিল্লি সফরের বিশেষ গুরুত্ব হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হওয়া। সেটা হতে পারে সেপা চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। কারণ এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ শুধু ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার সুযোগই পাবে না, বরং এ অঞ্চলেই অনেক বেশি বাণিজ্যিক সুবিধা পাবে। শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি সই হলে সেটাই হবে দুদেশের সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টিও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, এর বাইরে যখনই প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে সফর হয় তখনই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য এবং সমঝোতা হয়। এবারও জ্বালানি, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, কানেক্টিভিটির মতো বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বড় গুরুত্ব পাবে। কারণ ইউক্রেন সংকটের বড় প্রভাব এ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতেও পড়ছে। এ ছাড়া তাইওয়ানকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে যে টানাপড়েন সেটাও আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে আঞ্চলিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা এবং কানেক্টিভিটিতে সহযোগিতার বিষয়টি আগের চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় এ বিষয়গুলো নিশ্চয়ই উঠবে এবং এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের ভেতর আরও ভালো কিছু অর্জন হবে, এটাই প্রত্যাশা।



আরও খবর







662f0c986337a-290424085728.webp
আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী

২ দিন ১৮ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে