হিন্দু সম্প্রদায়ের বারো মাসে তের পার্বণ এ কথাটি প্রচলিত রয়েছে আমাদের সমাজে। সেই হিসাবে দূর্গা পুজা,কালী পুজা, লক্ষ্মী পুজা সেরে উঠতেই এসে গেল বাগদেবী সরস্বতি পুজা। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে সরস্বতি পুজা। তিথির কারণে এবছর ২ ফেব্রুয়ারী দুপুরের পর থেকে পঞ্চমী থাকায় অনেকে পুজা করবেন। এই পুজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরী শিল্পীরা। অনেকে শেষ তুলির আঁচড় টানছেন প্রতিমার গায়ে।
এদিকে সারা বছর আশায় বুধ বেঁধে থাকা সরস্বতি প্রতিমা তৈরী শিল্পীবৃন্দ জানালেন পুজায় তাদের অর্থনৈতিকভাবে মন্দা যাবে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শংকরকাটি গ্রামের বাসিন্দা সরস্বতি প্রতিমা তৈরী শিল্পী সুনিল চক্রবর্তী জানালেন যে অর্ডার গুলি পেয়েছেন সে গুলি পারিবারিক ও প্রতিষ্ঠানের পুজার অর্ডার। গত বছর তিনি বড় ছোট মিলিয়ে ৬০ খানা প্রতিমা তৈরী করেছিলেন। বিক্রী হয়েছিল ৪৬টি। এ বছর অর্ডার পেয়েছেন ৩০ থেকে ৩৫টি। এ বছর গত বছরের তৈরী প্রতিমা ছিল সেটা এ বছর নতুন করে মাটি লেপন দিয়ে নতুনভাবে রং করেছেন বেশ কিছু । ত্রিশ বছর যাবত এই পেশার সাথে যুক্ত রয়েছেন বলে জানান।
এ বছর তিনি বড় প্রতিমার মূল্য নির্ধারণ করেছেন ৩০০০টাকা, মাঝারী প্রতিমার মূল্য নির্ধারণ করেছেন ১৬০০টাকা, এক হাত এক মুট এমন প্রতিমার মূল্য ১২০০টাকা ও ছোট প্রতিমার মূল্য ৮০০টাকা। গতবারের চেয়ে এবার প্রতিমার মূল্য বেশি নির্ধারণ করেছেন। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি। গতবার ছোট প্রতিমার দাম ছিল ৬০০টাকা, মাঝারী প্রতিমার দাম ছিল ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা, পাঁচ পোয়া প্রতিমার দাম ছিল ১০০০টাকা। এ কাজে তিনি সহ আরও চার জন যুক্ত রয়েছেন। এক এক জনের দৈনিক মজুরী ৫শত থেকে ৭শত টাকা বলে জানান। প্রতিমার উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের অংশ খুব কম থাকে বা এক রকম না থাকার মত জানালেন।
বর্তমানে উপকরণের মূল্য জানান পূর্বে রংয়ের ভরি ছিল ৩০ টাকা বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ভরি, প্রতিমার চুল পূর্বে ছিল ২২০ টাকা ,বর্তমানে ৫০০টাকা। প্রতিমা তৈরীর কাট, সুতুলি, পেরেক, পোষাক সহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এই প্রতিবেদককে জানান। তিনি বলেন প্রতিমা তৈরীর উপকরণ ডাকের সাজ ব্যবহার করেন। যেটি ভারতের তৈরী। প্রতিমার গায়ে স্প্রে রং ব্যবহার করেন এই রংয়ের মূল্যও বৃদ্ধি বলে জানান। সুনিল চক্রবর্তী শ্যামনগর বাদঘাটা গ্রামে একটি বাড়ীতে জায়গা ভাড়া নিয়ে প্রতিমা তৈরী করছেন। প্রতিমা তৈরীতে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন তার স্ত্রী চন্দনা চক্রবর্তী ও পুত্র সকুমার চক্রবর্তী।
বাদঘাটা গ্রামে প্রতিমা তৈরী করছেন ভূরুলিয়া ইউপির বাসিন্দা প্রভাষ মন্ডল, জেলেখালী গ্রামের নিশিত, খোসালখালী গ্রামের পলাশ মন্ডল বলেন অধিক সংখ্যক প্রতিমা তৈরীর অর্ডার না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন । এ ছাড়া উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি , মজুরী বৃদ্ধি সবমিলিয়ে প্রতিমা শিল্পীরা বড়ই চিন্তিত বলে জানান। শিল্পীরা উভয়ে বলেন উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির জন্য প্রতিমা শিল্পীরা অর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। অনেকে এ কারণে এই পেশায় কম সময় দিয়ে অন্য পেশায় সময় বেশী দিচ্ছেন বলে জানান। শিল্পীরা অনেকে মত প্রকাশ করে বলেন এ পেশায় আর জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব হবেনা বলে মনে হয়।
এদিকে অভিজ্ঞরা বলেছেন প্রতিমা শিল্পীরা ক্ষতিগ্রস্থ বিধায় তাদের পেশাকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি বেসরকারী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
১ দিন ৩ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
২ দিন ২ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
৩ দিন ১ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৪ দিন ৭ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
৫ দিন ১ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৫ দিন ১ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
৬ দিন ২২ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
৭ দিন ২ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে