গাড়িতে হামলা, আহত হাসনাত ঝিনাইগাতীতে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় নকলের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার পদ্মায় জেলের জালে আটক দুই কাতল ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে হেরোইনসহ ইউপি সদস্য গ্রেফতার । রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকার কোনো চুক্তি করেনি: ড. খলিলুর রহমান এবার কোরবানিযোগ্য পশু সোয়া কোটি, উদ্বৃত্ত থাকতে পারে ২০ লাখ ভিসির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সারিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরই মিয়ানমারে ফিরবে রোহিঙ্গারা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডোমারে স্কাউট ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন স্বর্ণের বার সহ পাচারকারী আটক;উদ্ধার ১০ পিছ ইঞ্জিনিয়ার তুহিনের মুক্তির দাবিতে বিএনপির মানববন্ধন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা দিবে সরকার কিশোরগঞ্জে দেশীয় অস্ত্র্র ও বুলেটসহ ভুয়া ছাত্র সমন্বয়ক গ্রেফতার বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন "মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে শীর্ষক আলোচনা সভা লালপুরে প্রকাশ্যে গুলির ঘটনায় প্রধান আসামী মনি সরদার গ্রেপ্তার কুড়িগ্রামের মইনুলের ভর্তির ব্যবস্থা করলো জবি ছাত্র শিবির পাগলা-বীরগাঁও রাস্তায় ভাঙন, চরম ভোগান্তির আশঙ্কায় জনসাধারণ নাগেশ্বরীতে নারীর পর্দা নিয়ে কটুক্তি সহকারী অধ্যাপক লাকীর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়

বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ব্যাচেলরদের দুঃখ গাঁথা

ছবি: অমিত হাসান


◾অমিত হাসান


রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ছোট-বড় শহরগুলোয় পরিবার থেকে দূরে ব্যাচেলর বাসায় অনেকেই থাকেন । এই ব্যাচেলরেরা সংখ্যায় কত তাঁর সঠিক কোনো হিসাব পাওয়া না গেলেও এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় এই সংখ্যাটা নেহাত কম নয় । সাধারণ অর্থে যাদের বয়স ১৮ থেকে ৬০ এবং অবিবাহিত তাঁদেরকেই ব্যাচেলর বলা হয় । তবে শহুরে জীবনের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিবাহিতদের মধ্য থেকেও যাঁরা চাকরি বা জীবিকার প্রয়োজনে বাড়ি থেকে দূরে একা বসবাস করেন তাঁদেরকেও ব্যাচেলর হিসেবে গণ্য করা হয় । আমাদের দেশে সাধারণত চার ধরনের ব্যাচেলরের দেখা মেলে । প্রথম ধরনের ব্যাচেলররা শিক্ষার্থী এবং তাঁদের সব খরচ পরিবার থেকে বহন করা হয় । দ্বিতীয় ধরনের ব্যাচেলররাও শিক্ষার্থী । তবে তাঁদের নিজেদেরকেই নিজেদের পড়াশোনা এবং থাকা খাওয়ার খরচ জোগাড় করতে হয় । তৃতীয় ধরনের ব্যাচেলর হচ্ছে শিক্ষিত বেকার । যাঁরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকে । সবশেষে চাকুরিজীবীদের মধ্যে যাঁরা ব্যাচেলর । 


ব্যাচেলরদের মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে আকাশের বিশালতা । এক সুবিশাল রঙিন স্বপ্নঘুড়ি । তাঁরা স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ছাড়ে । স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে মা,বাবা,ভাই,বোন,নিজের পরিবার-পরিজন সবাইকে ছেড়ে একাকী এক অপরিচিত শহরের বাসিন্দা হয় । তাঁদের জীবনের একমাত্র আরাধ্য হয় নিজেকে গড়ে তোলা । কিন্তু বাস্তবে এ স্বপ্নপূরণের পথ কণ্টকাকীর্ণ । পথের মোরে মোরে তাদের গতিপথ আটকে দিতে প্রস্তুত থাকে এ সমাজ সংসার । শহরের বিভিন্ন অলিতে,গলিতে,মোরে মোরে বিভিন্ন বাসার সামনে সাইনবোর্ড টানিয়ে বাসা ভাড়া হবে বলার রীতি যেমন আছে তেমনই 'এখানে ব্যাচেলরদের ভাড়া দেওয়া হয় না' লেখাটাও চোখে পড়ার মতো । বাড়ির মালিকরা সহজে ব্যাচেলরদের ভাড়া দিতে চান না । আর দিলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিম্নমানের রুম, সবচেয়ে ওপরের তলা, নয়তো বাড়ির একেবারে নিচের তলা ভাড়া দেন । কেননা এসব রুমে সাধারণত কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে চাননা । তাছাড়া ব্যাচেলরদের জন্য পার্কিং সুবিধা দিতেও অনেক বাড়িওয়ালার অনীহা লক্ষ্য করা যায় । 


অন্যদিকে ব্যাচেলররা বাসা পেয়ে গেলেই তাদের কষ্টের দিন ফুরোয় না । তাঁদের জীবনটাকে বিষাক্ত করে দেওয়ার জন্য নিত্য নতুন লোকের আবির্ভাব ঘটতে থাকে । এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বাড়িওয়ালা অথবা বাড়িওয়ালা মনোনীত কেয়ারটেকার । কিছু দিন যেতে না যেতেই ভাড়া বেড়েছে, এই ফি, ঐ ফি বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ব্যাচেলরদের থেকে । তাছাড়া ব্যাচেলরদের একই বাসায় একই ছাদের নিচে ভিন্ন ভিন্ন জেলা থেকে আসা ভিন্ন ভিন্ন বর্ণ,গোত্র,শ্রেণি,পেশার মানুষের সাথে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে হয় । তাঁদের মধ্যে কেউ হয়তো দেখতে অনেক ফর্সা,সুদর্শন আবার কেউ বা কালো,কেউ উচ্চ শিক্ষিত কারো আবার অক্ষরজ্ঞানই নেই । কেউ আজান হলেই মসজিদে যায়,ধার্মিক প্রকৃতির । আবার কেউ গাঁয়ের জোর দিয়েই সব জয় করতে চায়।আবার কেউ ঘুমালে খুব জোরে নাক ডাকে। কারো আবার নাক ডাকা একদমই সহ্য হয় না।


রুমমেটদের মধ্যে আবার কেউ নিজেরাই রান্না করে খায় । কারো শেষ ভরসা আবার বুয়া বা কাজের লোক । তাঁরা আবার যেদিন এবসেন্ট করে অথবা ছুটিতে থাকে সেদিন রান্না না জানা ব্যাচেলরদের চিন্তার কোনো অন্তই থাকে না। তাদেরকে চড়া দামে বাইরে খেতে হয়। 


তাছাড়া ব্যাচেলর জীবনে এমনিতেই নানা টানাপোড়েনের মধ্যে থাকতে হয় । কখনো বাসা পাওয়া নিয়ে । আবার কখনো হুটহাট বাসা ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় । কখনো আবার বাসা চেঞ্জ করতে গিয়ে । আর এখন তো পৃথিবীর বর্তমান বাস্তবতায় যুক্ত হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দাম । বাজার খরচ বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা ব্যাচেলরদের । যাদের বড় একটা অংশ আবার শিক্ষার্থী । এই শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আবার সবার খরচ পরিবার থেকে বহন করা হয় না । মূলত যাঁরা অনার্স-মাস্টার্স বা সমমানের শিক্ষার্থী তাঁরা টিউশন বা পার্ট টাইম জব করে নিজেদের খরচ চালানোর চেষ্টা করে এবং বর্তমান বাজার দরে তাঁদেরকেই সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে । 


প্রতিটা জিনিসের দামই যখন বাড়ছে তখনও ব্যাচেলরেদর হিমশিম খেতে হচ্ছে শুধু বাসা ভাড়ার টাকা জোগান দিতেই । তাঁর উপরে স্টুডেন্ট ব্যাচেলরদের নিজেদের পড়াশোনার একাডেমিক খরচ,বই-খাতা,কলমের খরচ ইত্যাদি তো আছেই । কিন্তু সে হারে তাদের টিউশন বা পার্টটাইম জব থেকে প্রাপ্ত আয় বাড়ে না । আয়ের চেয়ে ব্যায় বাড়ার এই মিছিলে ধুঁকতে হচ্ছে ব্যাচেলরদের । এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে ব্যাচেলারদের জীবনকে আরেকটু সহজ করতে কী করা যায় ? এর সহজ সমাধান হতে পারে যুগোপযোগী বাসাভাড়া আইন করে ব্যাচেলারদের স্বার্থরক্ষা করা । যাতে করে চাইলেই হুটহাট ভাড়া বৃদ্ধি বা বিনা নোটিশে বাড়িছাড়া না করা যায় । 


বেকার ও চাকুরিজীবী ব্যাচেলারদের জন্য রাতারাতি কিছু করা না গেলেও এক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ব্যাচেলারদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে । আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ সমাধান হতে পারে স্টুডেন্ট ব্যাচেলারদের বাইরে না রেখে প্রতিটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ করা অথবা শুধুমাত্র ঐ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবাসিক ভবন ভাড়া করে তাদেরকে সেখানে অল্প খরচে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া । যে সকল প্রতিষ্ঠানের সে সামর্থ্য বা সুযোগ নেই তাঁরা অন্ততপক্ষে ছাত্রদের স্বার্থরক্ষায় বাড়িওয়ালদের সংগঠনগুলোর সাথে একটা সমঝোতায় পৌঁছে ছাত্রদের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে পারে । 




লেখক: অমিত হাসান

প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ঢাকা কলেজ শাখা 


আরও খবর






ঢাকা কলেজের স্মৃতিময় দিনগুলো

১৬৩ দিন ৭ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে