পবিত্র ঈদুল আজহার টানা ১০ দিনের ছুটি চলছে। এই দীর্ঘ ছুটিতে মৌলভীবাজার জেলার সককল পর্যটন কেন্দ্রে নেমেছে হাজার হাজার মানুষের ঢল। দেশের নানা স্থান থেকে আসা দর্শনার্থী-পর্যটকের কোলাহলে যেন এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনু ব্যারেজ, জেলার বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লোক, শ্রীমঙ্গলের বধ্যভূমি৭১, বাইক্কাবিলসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঈদুল আজহার চতুর্থ দিনেও (১০ জুন) পর্যটক-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল।
বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্যমতে গত চারদিনে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৩ হাজার ৯শত ৪৬জন পর্যটক প্রবেশ করেন। পর্যটকদের প্রবেশ ফি থেকে ৪লক্ষ ৫০হাজার পঁচশত সত্তর টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়।
যশোর থেকে আসা দর্শনার্থী রফিক সাজু জানান, পরিবার নিয়ে আজ সকালেই চায়ের রাজ্যে এসেছি। রাধানগর এলাকার একটি হোটেলে উঠেছি। রুম ভাড়া একটু বেশি হলেও পরিবেশ দারুণ লাগছে। ঢাকা থেকে আসা পর্যটন তানজিয়া তারিন বলেন, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা শেষে এবার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আসা হলো। বন-জঙ্গল, বানর আর অসাধারণ পরিবেশ মন জুড়িয়ে দিচ্ছে।
নারায়গঞ্জ থেকে আসা পর্যটক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, প্রত্যেক ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে চায়ের রাজ্যে ঘুরতে আসি। এবার পরিবারসহ বড়লেখা মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত দেখতে এসেছি।
পর্যটক সুমিত্রা দেব বলেন, ঈদের ছুটিতে আমি পরিবারসহ এসেছি শ্রীমঙ্গলে। অনলাইনে শ্রীমঙ্গলের অনেক ভিডিও দেখে না এসে আর পারলাম না, তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে বাচ্চাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
জেলার হোটেল-রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা বলেন, ঈদের ১০ দিনের এই দীর্ঘ ছুটিতে ইতোমধ্যে মৌলভীবাজারে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন। দুই শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের প্রায় সব কক্ষই বুকিং হয়ে গেছে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান, এ ঈদে এখন পর্যন্ত অভাবনীয় পর্যটক এসেছে, এতে আমাদের ব্যবসাও ভালো হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগেররেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কাজী নাজমুল হক বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে প্রচুর পর্যটক লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন, আগত পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে পারে সেজন্য বনকর্মীদের পাশাপাশ, সিএমসি'র সদস্যদের তদারকি, সিপিজি'র সদস্য ট্যুরিস্ট গাইডরা রয়েছেন। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশ ও কমলগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম দায়িত্ব পালন করছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। লাউয়াছড়া, মাধবপুর লেক, বধ্যভূমি, দার্জিলিং টিলাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, এবারের ঈদেও প্রচুর পর্যটকেের সমাগম হয়েছে। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ব্যবসা-বাণিজ্যে সাফল্য এসেছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে আগত পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলার প্রতিটি পর্যটন স্পটে পুলিশের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত জেলায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
১২ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে
১৫ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
১৭ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে
১৭ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
১৯ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
২০ ঘন্টা ১ মিনিট আগে
২১ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে