জাগো মুসলমান - আর. এম. কারিমুল্লাহ আমরা খামেনিকে এখনই হত্যা করব না: ট্রাম্প যে কারণে পুরুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা জরুরি জানভির মিউ মিউ লুকে লন্ডনের ফ্যাশন সন্ধ্যায় ঝলকানি লাখাইয়ের গোপিনাথ লিবিয়ায় অপহরণের শিকার ; শোনালেন নির্যাতনের কাহিনী শান্তিগঞ্জে জামায়াতের সাংগঠনিক ও বায়তুলমাল পক্ষের প্রস্তুতি সভা ক্ষেতলালে সরকারি পুকুর লীজকে কেন্দ্র করে নারী উদ্যোক্তাকে মারধর কিশোরগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে দু'জনের মৃত্যু ইশরাকের বিরুদ্ধে ‘ক্রিমিনাল অফেন্সের’ অভিযোগ আসিফ মাহমুদের শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরি, চালকের আসনে বাংলাদেশ তেহরানে দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে: পররাষ্ট্রসচিব সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৪৪ জন অবশেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলো জিল্লুর রহমানকে দিনাজপুরে পুকুরে ডুবে দুই কন্যা শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স১০০ শয্যায় দাবীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন রাজশাহী কলেজ পাঠকবন্ধুর ঈদ পুনর্মিলনী ও আম উৎসব অনুষ্ঠিত লালপুরে ভেজাল আইসক্রিম তৈরির দায়ে ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দুই মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা

অমিত হাসানের গল্প - ‘কে উনি?’

সম্পাদকীয় ডেস্ক - প্রতিনিধি

প্রকাশের সময়: 10-12-2024 04:28:20 pm

পৌষ মাস। বাংলাদেশে শীতকাল। বেশ ক'দিন হলো আকাশে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত সারাদেশ। দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বুঝি শীতটা আরো বেশি অনুভূত হয়। আর এই শীতের রাতে কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে ট্রেন চলার সিগনাল হলো। ট্রেনের সামনের লাল বাতি হলুদ হলো, সবুজ হলো। ট্রেন চলতে শুরু করলো। চট্রগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ট্রেন। ঢাকা মেইল। 


ঢাকা মেইল ঢাকার দিকে ছুটছে। অন্ধকার আকাশ ধীরে ধীরে আলোকিত হচ্ছে। মসজিদ থেকে ভেসে এল মুয়াজ্জিনের দরাজ কন্ঠে বলা, 'আসসালাতু খইরুম মিনান নাওম'। কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই মুসল্লিরা ওজু করলো। নামাজ পড়লো। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে কর্মচঞ্চল হতে লাগলো দেশটা। ভোর কুয়াশায় গ্রামীণ কৃষকরা মাঠে গিয়েছে। শ্রমিকেরা কারখানায়। অফিসগামী চাকুরিজীবীরাও প্রস্তুত হচ্ছে অফিসে যাওয়ার। 


সকাল হওয়ার পর মানুষের কত কাজ। কত গন্তব্য, কত লক্ষ্য। রাজপাড়া গ্রামের হুজাইফাও ঘুম থেকে উঠে ঘন কুয়াশার মধ্যে হাঁটতে শুরু করলো। গন্তব্য ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ রেলওয়ে স্টেশন। তারপর সেখান থেকে ঢাকা। 


শীতলক্ষ্যা নদীর কাছে আসতেই হুজাইফার দেখা হলো বন্ধু মাকসুদুল আর সুজনের সাথে। অজয়কেও পেল স্টেশনে ঢুকেই। বন্ধুরা সব এক হলে যা হয়! মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি খেলা করে। বয়স কম। তাই ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতাও বেশি ছেলেগুলোর । ছেলেগুলোর মধ্যে হুজাইফাই কেবল ছাদে উঠতে রাজি নয়৷ সে লাফিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠতে পারে না তাই বলে ছাদে উঠতে চাচ্ছে না বিষয়টা এমন না। বন্ধুদের সঙ্গে এর আগেও বহুবার ছাদে উঠেছে সে। এজন্য তাকে মায়ের বকাও খেতে হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে তার মনে হলো আজকের ঝুঁকিটা শুধু ট্রেনের ছাদে উঠা নয়, শীতের কনকনে ঠান্ডা বাতাসের চ্যালেঞ্জও নিতে হবে। ট্রেনের বগিতে উঠলে বাইরের বাতাস, কুয়াশা হয়ত একটু কম কাবু করবে এমন ধারণা হুজাইফার। আর তার বন্ধুদের বয়ান লোকাল ট্রেনের ভিতরে ভিড় বেশি। দাঁড়ানোরও জায়গা থাকে না। তাছাড়া একটু পরে রোদ উঠলে গরম লাগবে। তখন বাতাসটা আরো উপভোগ্য হবে। 


শেষ পর্যন্ত বহু তর্ক- বিতর্কের পর স্থির হলো হুজাইফারা উঠবে ট্রেনের সামনের ইঞ্জিনে। ট্রেন এসে পৌঁছালো ঘোড়াশালে। হুজাইফা তার বন্ধুদের শেষবারের মতো সতর্ক করলেন। কিন্তু সত্যিই তো ট্রেনে অনেক ভিড়। পা ফেলার জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই হুজাইফা আর আপত্তি করতে পারলো না। তবুও একটা বিষয় তাঁর এবং তাঁর বন্ধুদের মনে ঠিকই গেঁথে থাকবে। একটা মধ্য বয়সী মহিলা বসে আছে ট্রেনের ইঞ্জিনের পাশে। সম্ভবত ২০-২২ বছরের সবগুলো ছেলেই সেদিন প্রথম কোনো মহিলাকে ট্রেনে এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দেখেছে। মহিলাটা ছেলেগুলোর দিকে ইশারা দিয়ে বলল, "বাবারা, এখানে উইঠো না। ট্রেন ছাড়লে শীত করবো। এরপরে আসে ধোঁয়া। তারপর উঠতে গিয়ে ব্যাথা পেতে পারো। আবার টঙ্গী পৌঁছালে আরএনবি আইসা জ্বালায় কিনা?" 


মহিলার এরকম বাচনভঙ্গিতে সবাই অবাক। কথাবার্তায় বেশ বোঝা যাচ্ছে তিনি কোনো সাধারণ মহিলা নন। নম্রতা, ভদ্রতা, শিক্ষা সবই আছে তাঁর। কিন্তু তিনি নিজে কেন এই ঝুঁকিটা নিচ্ছেন? আবার কেনই বা একেবারে অপরিচিত কয়েকটা ছেলের জন্য এত দরদ দেখাচ্ছেন? কে তিনি? আর মলিন পোষাকে কেনই বা তিনি এলেন এখানে? কোথায় যাবে তারপর? আর তিনি আরএনবি নিয়েও জানেন। আমরা সাধারণ মানুষ অনেকেই হয়ত আরএনবি কী সেটা বুঝিই না।


হুজাইফা আর সুজন মহিলার কথায় ট্রেনের বগির দিকে নজর দিলো। কিন্তু প্রচন্ড ভিড় থাকায় তাদের সে চেষ্টা যে ব্যর্থ হতো তা নিশ্চিত। নরসিংদী আসলেই ট্রেন মোটামুটি পুরো জ্যামপ্যাকড হয়ে যায়। আর ঢাকা অভিমুখী এই ট্রেনে নরসিংদীর পরের লোকাল স্টেশনের যাত্রীদের জন্য তাই ট্রেনে উঠাটা কষ্ট হয়ে যায়। তাই অগত্যা সব বন্ধুই ট্রেনের ইঞ্জিনের আশেপাশে ঠাঁই নিলো। মহিলাটা তা দেখলেন। দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কেন তাঁর এই দীর্ঘশ্বাস? মহিলার সঙ্গে এই ছেলেগুলোর কীসের সম্পর্ক? তিনি নারী। মমতাময়ী মাতৃহদয়ের অধিকারী নারী। তাই বলেই কি ছেলের বয়সী কয়েকটা কিশোরকে ঝুঁকি নিতে দেখে তিনি বিচলিত হলেন?


এভাবে যাওয়াটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ট্রেন চলতে শুরু করার পর ঝুঁকি আরো বাড়লো। সামনেই নদী। আর চলন্ত ট্রেনে ধরার মতো তেমন কোনো ইন্সট্রুমেন্ট ছাড়াই দ্রত গতির এই ট্রেনের ইঞ্জিনের পাশেই কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বা বসে রইলো। হুজাইফার চোখ গেল ভদ্রমহিলার দিকে। ভদ্রমহিলা একমনে নিচে নদীর দিকে তাকিয়ে আছেন। যেন তিনি অন্ধকার এক সুরঙ্গের মধ্যে আটকা পরেছেন যেখানে কোনো আলো নেই। গভীর দুঃখ ও হতাশার ভেতরে নিমজ্জিত তিনি। ট্রেনের মধ্যে নিজেকে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রাখার কোনো চেষ্টাও যেন নেই মহিলাটির। কী হয়েছে তাঁর? তিনি কি বাসায় ঝগড়া করে এসেছেন? স্বামী, শাশুড়ি কিংবা সন্তানের সঙ্গে? 

কী চাচ্ছেন তিনি? তিনি কি ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে নদীতে পরবেন? নিজের জীবন কি তিনি শেষ করে দিতে চান? ছেলেগুলো একে, অপরের মুখের দিকে তাকালো। সবাই মহিলাটিকে এমনভাবে ঘিরে রইলো যে তিনি কোনোভাবেই যেন লাফ দিতে না পারে। ট্রেন চলতে থাকলো। চলতে চলতে একসময় রাজধানীতেও পৌঁছেছে । ততক্ষণে মহিলাটি একটাবারের জন্যও তাঁর মাথা তুললেন না। কোনো কথা বললেন না। শুধু বিদায়বেলায় হুজাইফার কাছে বলে গেলেন, 'হৃদয়'। কিন্তু কে এই হৃদয়? ওনার ছেলে? নিজের ছেলেকে হারিয়েই কি তিনি আজ পাগলপ্রায়? এরপর ভদ্রমহিলা ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেলেন। হয়তো তিনি কোনোদিন খুঁজে পাবেন তাঁর হৃদয়কে। অথবা পাবেন না।



লেখক: অমিত হাসান 


আরও খবর

deshchitro-6842ab69312df-060625024841.webp
কুরবানী | এস. এ. বিথী রহমান

১১ দিন ২১ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে


6832d582bc89a-250525023202.webp
আজ কবি নজরুলের ১২৬ তম জন্মবার্ষিকী

২৩ দিন ২১ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে



deshchitro-6820accdd32e4-110525075733.webp
স্নেহের তৃষ্ণা

৩৭ দিন ১৬ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে


deshchitro-680cd77abfbe7-260425065418.webp
গল্প: হেঁটে আসা বৈশাখ

৫২ দিন ১৭ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে