শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা শহরে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। এসব উপজেলা শহরে পদে-পদে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যেন মানুষের জন্য এক অসহনীয় দুর্ভোগ। যেখানে সেখানে যানজট আর যানজট লেগেই আছে। প্রধান সড়কের ওপর দাড় করিয়ে রাখা হয় এসব অটো। এতে দুর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বিদ্যুতের ঘাটতিসহ এসব অটোরিকশার অদক্ষ এবং ক্ষেত্র বিশেষ কিশোর চালকের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কোন কোন অটোরিকশা বিদ্যুৎ চুরি করে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনে অটোচার্জ করার অভিযোগ উঠেছে। এতে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে। রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সরকার এসব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অবৈধ ঘোষণা করা সত্বেও দেশব্যাপী চলছেই। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায়ও চলছে অত্যন্ত দাপটের সাথেই। যেন দেখার কেউ নেই! উপজেলার কালিবাড়ী থেকে ঝিনাইগাতীতে আসা ১২-১৩ বছরের অটোচালক এমদাদ বলেন যে, আমি শুধু ঝিনাইগাতীতেই নয়। শেরপুর জেলা শহরেও অটো চালাই। অবৈধ হলে পুলিশ আমাকে আটকাতো না ? নকশী থেকে আসা ১০-১২ বছর বয়সী আটোচালক সোবাহান বলেন, দেড় বছর ধরে অটো চালাই। কেউ বললো না এটা অপরাধ। শুধু আপনার কাছেই শুনলাম। এসব চালকরা প্রধান সড়কের ওপর যত্রতত্র অটোরিকশা দাড় করিয়ে রাখা এখন নিত্যনৈমিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। প্রধান সড়কে কোনো হর্ণ বা ভেপু না বাজিয়ে হঠাৎ ঘুরিয়ে ফেলে এসব অটোরিকশা। এতে যে কোনো মূহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কেতো বটেই ফুটপাত ও এখন অটোরিকশার দখলে থাকায় পথচারিদের পায়ে হেটে চলার আর অবশিষ্ট কোন জায়গাই থাকছেনা। ফলে পথচারীরা পড়েছে কঠিক বিপাকে। সড়ক বা ফুটপাত দখলে থাকায় মানুষ আর স্বাভাবিকভাবে হাটা চলা করতেই পারছেনা। ঝিনাইগাতী উপজেলা শহর যেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক ও বাজারে দোকানের সামনে অটোরিকশা রাখা নিয়ে সাধারণ মানুষ, দোকানদার এবং অটোরিকশা চালকের মধ্যে মারামারির অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাকবিতন্ডাতো লেগেই আছে। সেসব রাস্তা পারাপারে ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রিরা পড়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে। না জানি কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায় কার ভাগ্যে! এ আশঙ্কায় থাকে শিক্ষার্থী ও অভিবাবকগণ। শুধু তাই নয় হাট-বাজারের ভেতর ছোট চিপা গলির রাস্তায়ও ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে অটোরিকশা। জনৈক অটোযাত্রী এ প্রতিনিধিকে বলেন, কোন প্রকার ট্রেনিং বা দক্ষতা ছাড়াই এসব কিশোর চালকের অটোরিকশায় যাতায়ত করছি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। তা আল্লাহই ভাল জানেন। প্রসঙ্গত. ঝিনাইগাতী ধানহাটি মৌড়, থানা মৌড় কলেজ রোড মৌড়েতে আটোরিকশার ভীরে মানুষ যাতায়াতই করতে পারে না। তাছাড়া ধানহাটি রোড, থানা মোড় ও মসজিদ রোড, কলেজসহ গোটা প্রধান সড়কে অটোরিকশার ভীরে যাতায়াত খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে প্রতিদিনি ছোট থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ উঠেছে অটোরিকশা চালকরা খামখেয়ালিভাবে মহিলাদের সাথে পর্যন্ত এক্সিডেন্ট করেও অবাধে চলে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালকদের নেই কোন প্রশিক্ষণ বা লাইসেন্স। অবৈধভাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেডলাইসেন্স নিয়েই তারা বনে গেছেন অটোরিকশা ড্রাইভার! আর এই ট্রেড লাইসেন্স হয়ে গেছে রীতিমত ড্রাইভিং লাইসেন্স। ডে-লেবার থেকে শুরু করে কিশোরা পর্যন্ত অটোরিকশা চালকের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে গেছে বহুলংশে। এভাবে প্রায় প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। অথচ কেউ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে ভূক্তভোগিদের অভিযোগ। ফলে বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন অটোরিকশা চালকরা। এতে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অতিদ্রুত অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং উপজেলা শহরে এ সবের নিয়ন্ত্রণ করা হোক। ঝিনাইগাতী উপজেলা শহরে আনুমানিক ২ হাজারের ও অধিক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচল করছে বলে জানা গেছে। ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুল আলম ভূঁইয়া এ বিষয়ে বলেন, রাস্তা যানজটমুক্ত ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়মিতভাবে পুলিশ যথাযথভাবেই ট্রফিকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তারপরও অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
১ দিন ২ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
১ দিন ৩ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
২ দিন ৩ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
৩ দিন ৬ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে