সমুদ্রসীমার পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার শ্যামনগরে শিশু অধিকার বিষয়ে এনসিটিএফ সংলাপ দরগাপাশা'র ৬নং ওয়ার্ডের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও জামায়াত নেতা হাজী মো মশিউর রহমান কে সংবর্ধনা মাদক এবং কিশোর গ্যাং বড় সামাজিক সমস্যা ওসি আমিনুল ইসলাম বছরের পর বছর মানুষ এই স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়েছে-শহীদ উদ্দীন চৌধুরি এ্যানি অনেক গণমাধ্যম জুলাই গণ অভুত্থানকে ধারণ করে না- এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমিন জয়পুরহাটে সেনাবাহিনীর অভিযানে অবৈধ অ্যালকোহল ও কাঁচামাল উদ্ধার জবির একটি হলের নাম 'বিশ্বজিৎ দাস হল' রাখার আহ্বান গণ অধিকার পরিষদ নেতার ইরান- ফিলিস্তিনে বর্বর ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে লালপুরে বিক্ষোভ জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী দল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত শরণার্থীদের বোঝা সবচেয়ে বেশি বহন করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর' আদমদীঘিতে নাশকতা মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত চার প্রকল্প ও কর্মসূচিতে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি মেডিকেল শিক্ষার্থী প্রার্থনা অনন্য দৃষ্টান্ত সোনাইমুড়িতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধা নারীকে জবাই করে হত্যা রাতভর টানা বৃষ্টিতে সর্বোচ্চ রেকর্ড, নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ কুতুবদিয়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ডিলার নিয়োগ সম্পন্ন কচুয়ায় মাঠের পানি থেকে শতবর্ষী বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

আক্কেলপুরে হঠাৎ দেখা মিলল বিরল প্রজাতির নীল কপালি গির্দি পাখি।


জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নীল কপালি গির্দি নামের একটি বিরল প্রজাতীর পাখির দেখা মিলেছে। পাখিটির প্রথম ছবি সংগ্রহ করেছে আক্কেলপুরের তরুন উদীয়মান আলোকচিত্রী আহনাফ আল সাদমান। আক্কেলপুর পৌর এলাকার হাস্তাবসন্তপুর আবাসন এলাকার পূর্ব ধারে চকরঘুনাথ হাঁড়ি পুকুর পাড়ে এটির দেখা মেলে।

পাখিটির তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাখিটির এদেশে নীল-লালগির্দি (Blue-fronted Redstart) বা নীল কপালি গির্দি নামে পরিচিত। এর কোন স্থানীয় বা আঞ্চলিক নাম নেই। পাখিটির মাথা, কপাল, গলা গাঢ় নীল। গলার নিচ থেকে বুক-পেট পর্যন্ত কমলা রঙের। ডানার পালক এবং লেজ কালচে। এই পাখিটি এদেশে বিরল। সহজে এর দেখা পাওয়া যায়না। এটি এদেশে অনিয়মিত (Vagrant) পরিযায়ী পাখি হিসেবে বিবেচিত। এরা Muscicapida পরিবারভুক্ত এই পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Phoenicurus frontalis.। নীল-কপালি লালগির্দি চড়ুই আকারের পাখি। লম্বায় ১৫ সেমি ও ওজনে ১৭ গ্রাম।পাখিটির কপাল গাঢ় নীল। দেহের নিচের অংশ কমলা ও বাদামি রংয়ের। কোমড় ও পেট কমলা এবং লাল। লেজের কিনারা কালচে। চোখের চারদিকে রয়েছে সাদা বলয়। ঠোঁট, পা, পায়ের পাতা ও নখ কালো। 

জানা গেছে, নীল কপালি গির্দি নামের ছোট আকারের পাখিটি সর্বশেষ ২০১৬ সালে মৌলভীবাজারের একটি এলাকায় দেখা যায়। তারপর থেকে এটিকে আর দেখা যায়নি। আক্কেলপুরে পৌর শহরের বাসিন্দা উদীয়মান আলোকচিত্রি সখের বসে পৌর এলাকার হাস্তাবসন্তপুর আবাসন এলাকার পূর্ব দিকে চকরঘুনাথ গ্রামের হাঁড়ি পুকুর পাড়ে প্রকৃতির ছবি তুলতে গিয়ে সর্বশেষ গত শনিবার এই পাখির দেখা পায়।পরে এই খবরে ঢাকা, বগুড়া, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পেশাদার আলোকচিত্রীরা ওই এলাকায় এসে নীল কপালি গির্দি পাখির ছবি তুলে নিয়ে যায়।

আরও জানা গেছে, পরিযায়ী এ পাখিটি শীত মৌসুমে বিভিন্ন ঝোপঝাড়, মাঠঘাট, পুকুর পাড় ও খোলা বনাঞ্চল এলাকায় বিচরণ করে থাকে।  তারা মুলত পোকামাকড় রসালো ফল ও বীজ খেয়ে জীবন ধারণ করে। এই পাখিগুলো একাকি বিচরণ করলেও প্রজননের পর ও পরিযায়নের সময় ছোট দলে বিভক্ত হতে দেখা যায়। সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। জমির আইল, দুই পাথরের ফাঁক বা গাছের খোঁড়লে মস বা শেওলা দিয়ে ছোট্ট বাটি আকারের বাসা বানায়।বাসা বানাতে গাছের ছোট্ট শিকড়, চুল, পালক ইত্যাদি ব্যবহার করে। স্ত্রী গির্দি ৩ বা ৪টি হালকা গোলাপি-ধূসর বা হালকা হলদে রঙের ডিম পাড়ে যার উপর থাকে হালকা লালচে দাগ।

আলোকচিত্রী আহনাফ আল সাদমান বলেন, সখের বসে পাখির ছবি তোলার ইচ্ছা শুরু থেকেই আমার ছিল। সেদিন বিকেলে আমি আর আনিস শেখ ভাই পাখির ছবি তোলার জন্য ঘুরতে বের হয়ে ওই গ্রামের হাড়িপুকুর নামের পুকুর পাড়ে একটা জঙ্গলে এর দেখা পাই। প্রথমে কালা গির্দি ভেবে ছবি তুলেছিলাম। পরে বাসায় এসে মাথার নীল অংশ দেখে সন্দেহ জেগেছিল। পরে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখি এটা অতি দুর্লভ নীল কপালি গির্দি। পরবর্তীতে বার্ড ক্লাবের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে এটিই দুর্লভ নীল কপালী গির্দি পাখি বলে নিশ্চিত হয়েছি।

বিপুল আহমেদ ও আহনাফ আল সাদমান তারা বুধবারে একই স্থানে ছবি তুলতে এসে বলেন,আমরা গত ২/৩ দিন থেকে পাখিটি আর দেখতে পাচ্ছি না।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল ইসলাম বলেন, শীতকালে ঠান্ডাপ্রবণ দেশগুলো থেকে এই ধরনের পাখি এদেশে এসে থাকে। এদের সচরাচর দেখা যায়না। এই পাখি অতিথি পাখি বলেই মনে হচ্ছে। তাদের নিরাপদ আবাসস্থল তৈরীসহ তাদের নিরাপদ বিচরণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

খবর পেয়ে পাখিটির ছবি তুলতে আসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ন ম আমিনুর রহমান বলেন, এই বিরল প্রজাতির নীল কপালি গির্দি পাখিটি ২০১০ সালে ঢাকায় দেখেছিলাম। আমি বণ্যপ্রাণি প্রজনন ও সংরক্ষণ গবেষগা নিয়ে কাজ করি। তিনি আরও বলেন, এটি পুরনো বিশ্বের চতক পাখি। এদের আবাসস্থল ভারতের দার্জিলিং, মধ্যচীন, হিমালয়ের পাদদেশের এলাকা, নেপাল এবং ভূটান। ২০১৮ সালে ভূটানে গিয়ে এই পাখির ছবি তুলেছি। মূলত ঠান্ডা প্রবণ এলাকার পাখি এগুলো। দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে এই প্রথমবার এটিকে দেখা গেল। এরা কিছুটা ভবঘুরে জীবনযাপন করে থাকে।

বন অধিদপ্তরের পাখিবিদ শিবলী সাদিক বলেন, বাংলাদেশে এই পাখিটি বিরল। এটি সহজে চোখে পড়ে না। ওই এলাকায় এই পাখিটির প্রথম দেখা পাওয়ার খবর আমিও পেয়েছি।


আরও খবর