মাওলানা রইস উদ্দিন হতাকাণ্ডের বিচার ও ইসলাম বিদ্বেষী নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন তুহিনের মুক্তির দাবিতে ডোমারে তাঁতী দলের বিক্ষোভ ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত "পুড়াখালী তা'লিমুল কুরআন মাদ্রাসা"। চোরাই ১২ টি রেল লাইনের পাতের খুঁটির ৬টি ফেরৎ দিলেও বাকীগুলো উদ্ধারের চেষ্টা নেই ★ প্রশাসন চুরি ও উদ্ধার ঘটনাই জানেন না ★ খুঁটি উঠানো ও চোরাই পথে বিক্রয়ের নায়ক মইজুদ্দীন ধরা ছোঁয়ার বাইরে কথা বলতে পারাটা, অধিকার আদায়ের প্রথম ধাপ : পীরগাছায় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ডোমারে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে গ্রেপ্তার-১ জবির দুই হলের প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে:- উপাচার্য লালপুরে বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস পালন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কারও প্রতিপক্ষ নয়: ড. আলী রীয়াজ সুধীজনদের সাথে মত মতবিনিময় সভা করলেন সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আজ বিশ্ব মুক্ত গনমাধ্যম দিবস পুরস্কার মিলবে সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ফাঁদ জমা দিলে টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল জয়পুরহাটে নাগরিক পার্টির বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা টঙ্গী পরিদর্শন সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ৬ বস্তা ফাঁদ, বরফসহ ট্রলার জব্দ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মাটি চাপায় পড়ে বাড়ীয়ালার মৃত্যু বরিশালে সাংবাদিক নির্যাতন-চাকরিচ্যুত প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ শ্যামনগরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত পাঁচ দফা দাবিতে ববির ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

বিশাল সাহা'র গল্প - বিশ্বাস

সম্পাদকীয় ডেস্ক - প্রতিনিধি

প্রকাশের সময়: 22-12-2024 04:15:07 pm


-মাসুদ ভাই, আরিফ ভাইয়ের কথা মনে হলে খুব কষ্ট হয় ভাই। 


-আসলেই ফয়সাল ভাই। লোকটা কি হাসি-খুশিই না ছিলো। লোকটা অফিসটাকে পুরা মাতায় রাখতো।এই কাজটা আরিফ ভাই করতেই পারেনা। পুরোটাই চক্রান্ত হবে ভাই। 


-আসলেই ভাই। আমার কোনো ভাবেই বিশ্বাস হচ্ছে না। মাসুদ ভাই মনে আছে আপনার, গত বছর কোম্পানি যখন দেড় কোটি টাকা লস খাইলো, এমডি স্যার সবাইকে কি অপমানটাই না করলো তাও ফয়সাল ভাই হাসি-খুশি ভাবে সব মেনে নিয়ে কতো তাড়াতাড়ি রিসলভ্ করে দিলো হিসাব টা।


-হ্যাঁ ভাই। কিন্তু আমার এখনো মাথায় খেলছে না, এমনটা হলো কীভাবে।


-সেটা তো আমার ও কথা ভাই। আরে ভাই আপনি তো জানেন না, আমি আর আরিফ ভাই মিলে একটা কোম্পানির এজেন্সি নিতে চেয়েছিলাম, চাকরীর ফাঁকে ফাঁকে চালাইতাম।


-আরিফ ভাই আসলেই অলরাউন্ডার ফয়সাল ভাই।



নিউজটা দেখার পর থেকেই আরিফের অফিসের সবার মধ্যে একটা উত্তেজনা কাজ করতে থাকে। বড় প্রজেক্টের কাজ ছিল তাই এই ব্যাপার নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়ে ওঠে নি বাড়ি ফেরার পথে আরিফের কাছের দুই কলিগ মাসুদ আর ফয়সাল নিউজটায় যে খুব শকড্ তা বোঝাই যাচ্ছে। 


একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকুরী করতেন আরিফ সাহেব। তারই কলিগ মাসুদ রহমান আর ফয়সাল আহমেদ। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.বি.এ তে গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট করে ওই কোম্পানিতে জয়েন করেছিলেন আরিফ সাহেব। নিজের দক্ষতার জন্য খুব তাড়াতাড়ি অফিসের বসের মন জয় করে নিয়েছিলেন আরিফ সাহেব।প্রমশন পেতেও তাই সময় লাগেনি বেশি। ভার্সিটির এক জুনিয়র এর সাথে আরিফ সাহেবের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। প্রায় চার বছরের সম্পর্ক। সম্পর্কটা ভালোবাসার, প্রেমের নয়। প্রেমের সম্পর্ক হলে এতোদিন দীর্ঘ হওয়ার কথা ছিলো না। আরিফ অনেকের মুখেই শুনেছে আরিফের প্রেমিকা চরিত্রহীন। কিন্তু ভালোবাসা থাকলে কি আর এসব বিশ্বাস করা যায়? কক্ষনোই না। আরিফের ও বিশ্বাস হয়নি।আর করবেই বা কি ভাবে, যারা বলেছে তারা শুধু মুখেই বলে গেছে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।তাই যারা এ ব্যাপারে বলতো তাদের সাথে দহরম-মহরম হয়ে যেতো আরিফের।


গত মার্চ মাসে বিয়ে হয় আরিফের সাথে মেয়েটির। বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। নিজেই নিজের মতো ঢাকায় থেকে নিজের খরচ চালিয়ে নিতো।প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়া, নিজের থাকা খাওয়া সহ যাবতীয় খরচ একা হাতেই সামলাতো আরিফ এর ভালোবাসার মানুষ, বর্তমান স্ত্রী। এ ব্যাপারে আরিফ প্রশ্ন করলে তিক্ততার সাথে এড়িয়ে যেত। আরিফ প্রতিদিন সকালে যেতো অফিসে আর ফিরত রাত আটটার পর। প্রায় রাতেই বাড়ি ফিরে দেখতো আরিফ এর স্ত্রী নেই।দু-তিন দিন এমনটা হওয়ায় একরাতে আরিফ আর ওর স্ত্রীর বড় রকমের ঝগড়া হয়ে যায়। আরিফ সচরাচর ওর স্ত্রী সম্পর্কে কেউ কিছু বললে কথা গুলো কানে নিতো না। কিন্তু এখন ওই কথা গুলোই কানে বাজে সব সময়। রাতে ঠিক ভাবে ঘুমোতে পারে না।


-ঝুমুর কি করে? প্রায়ই রাত করে বাড়ি ফেরে কেনো? হয়তো কোনো বান্ধবীর বাড়ি যায়। কিন্তুু আমাকে বলে না কেন তা?এড়িয়ে কেনো যায়?ও কি প্রতিদিনই আমি অফিস যাওয়ার পর বের হয়ে যায়? ওই জন্যই কি খুব সকালে উঠে একবারে একদিনকার রান্না সেরে রাখে? আচ্ছা ঝুমুর কি পতিতা? বেশ্যা? ছি!ছি! কি ভাবছি আমি ঝুমুরকে নিয়ে। আল্লাহ্ মাফ কর।

একা একা এসব বিড়বিড় করে আরিফ। 


-মাসুদ ভাই আরিফ ভাইয়ের বুঝি মুড সুইং চলছে। কেমন চুপচাপ হয়ে আছে।


-হা হা! ফয়সাল ভাই যে কি বলেন, ছেলেদের আবার মুড সুইং হয় নাকি?


-হয় ভাই হয়। আর এটা মেয়েদের থেকেও ভয়াবহ। মেয়েদের মুড সুইং হলে তো নিজেরা, এমনকি কাছের মানুষরা বুঝতে পারে কিন্তু ছেলেদের মুড সুইং নিজের বউও বুঝতে পারেনা, ন্যাকামো ভাবে।


-সিরিয়াসলি?


-হ্যাঁ মাসুদ ভাই। কিছুদিন আগে আমি এক সাইক্রিটিস্ট এর রিচার্স এ পড়েছি এটা।


আরে ভাই, কি বলছেন আপনারা এসব। আমি ঠিক আছি। কাজের চাপ,ফ্যামেলীর টেনশন সব সিলায় ভালো লাগছে না ভাই।


কলিগদের কথা শুনে হুশ ফিরে এসব বলে আরিফ সাহেব। 


অফিস থেকে বেরোতেই তুমুল বৃষ্টি। সাথে ঝড়ো হাওয়া। রিক্সায় কিছু দূর আসার পর রিক্সাও আর চলতে পারে না। তাই আরিফ সাহেব রিক্সা থেকে নেমে একটা বাড়ির পাশে দাঁড়ায়। বাড়িটা একটা গলির ভেতর। বাড়ির গেট খোলা থাকায় বৃষ্টি থেকে একটু বাঁচার জন্য বাড়ির গেটে পা বাড়িয়ে দেয়। ভেতরেই দেখা মেলে কয়েকটা পুরুষ আর কয়েকটা নারীর যারা একে অপরের সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ছিল। যেখানে আরিফ সাহেবের ভালোবাসার মানুষটিও আছে।নিজের স্রীকে এখানে এভাবে দেখে কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না স্ত্রীকে এমন অবস্থায় দেখে একটা চড় মারে তাকে।


-স্যার এনাকে গ্রেফতার করুন। ইনি আমাদের জোড় করে দেহ ব্যাবসা করায়। ঠিক ভাবে টাকাও দেয় না।(পুলিশ আসায় এক পতিতা বলে এসব পুলিশকে)

-জি স্যার। আমি ওর স্ত্রী। আমাকেও টাকার জন্য জোড় করে এসব করায় ও।


স্ত্রী ঝুমুরের এতো বড় মিথ্যে অপবাদ শুনে সেন্সলেস হয়ে ওখানেই পড়ে যায় আরিফ। ভালোবাসার নষ্টামিতে জঘন্য একটা কাজে ফাসায় দিলো আরিফকে, তাও নিজের স্ত্রী। 


"দেহ ব্যবসার এজেন্ট মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকুরীজীবী মো.আরিফ হাসান গ্রেফতার "


কলিগ আরিফ সাহেবের ছবি সহ এমন নিউজ দেখে মাসুদ,ফয়সাল সহ অফিসের বাকি কলিগ দের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।