মোংলা প্রতিনিধিঃ
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণের দাবীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন জমা দেয়া হয়েছে। মোংলাবাসীর পক্ষে সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার হাতে এ গণস্বাক্ষর সম্বলিত দাবীপূরণের আবেদন তুলে দেন মোংলার বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের সহকারী এ্যাটর্নী জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে দেয়া লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোংলা উপজেলা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। যা দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর ও নানা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র বিন্দু। বর্তমানে মোংলা উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ২,২০,০০০ এর অধিক। এই সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া মোংলা বন্দর, ইপিজেড, শিপইয়ার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ও কর্মচারীর যাতায়াত হচ্ছে। উপরন্তু, এই অঞ্চলটি সুন্দরবন সংলগ্ন হওয়ায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও পদচারণা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সকল বিষয়কে কেন্দ্র করে মোংলায় স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সুন্দরবন ঘেঁষা এই অঞ্চলের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী হলেন জেলে ও মৌয়াল বনজীবি সম্প্রদায়। যাঁরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে মাছ ধরেন ও বন থেকে মধু সংগ্রহ করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যপ্রাণীর আক্রমণ, দুর্ঘটনা, পানিবাহিত রোগসহ নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে তাঁরা প্রায়ই ভোগেন। কিন্তু এই জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো বিশেষ স্বাস্থ্য সেবা এখনো গড়ে ওঠেনি। যা তাঁদের প্রাথমিক ও জরুরি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রাখে। এ কারণে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে আরও বিস্তৃত ও আধুনিক করে তোলা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও এটি বর্তমান চাহিদার তুলনায় সম্পূর্ণ অপ্রতুল। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ রোগী বহিঃবিভাগে সেবা নিতে আসেন এবং ইনডোরে গড়ে ১৫০-২০০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। যা বিদ্যমান শয্যা সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। যার ফলে অধিকাংশ সময় রোগীদের মেঝেতে রাখতে হয় বা স্থানান্তর করতে হয়। জরুরি ও বিশেষায়িত সেবার ঘাটতির কারণে রোগীদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। মোংলা একটি ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকা হওয়ায় দুর্যোগকালীন সময়ে অতিরিক্ত রোগী চাপ এবং দুর্গম এলাকার রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ও সাশ্রয়ী চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
মোংলা বন্দর ও শিল্প এলাকার নানাবিধ ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ড যেমন- রাসায়নিক কাজ, যন্ত্রপাতি দ্বারা দুর্ঘটনা, অগ্নিদগ্ধ হওয়া ইত্যাদি কারণে একটি আধুনিক, উন্নত, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাসম্পন্ন হাসপাতাল এখন সময়ের দাবি। বর্তমানে এখানে আইসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিট, বার্ন ইউনিট, ব্লাড ব্যাংক, শিশু বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্র, ইমার্জেন্সি অপারেশন থিয়েটারসহ অন্যান্য আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা অনুপস্থিত। এসব সুবিধা চালু করতে হলে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন অপরিহার্য। তাই মোংলার স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা অতীব জরুরি।
মোংলা উপজেলাবাসীর পক্ষ হতে বিনীত আবেদন, বর্তমান সরকার বিষয়টি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মোংলাবাসীকে একটি আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
১ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ৫৪ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে