মসজিদ কমিটির মোতায়াল্লি, সভাপতি, মুয়াজ্জিন ও ক্যাশিয়ার একই ব্যক্তি !! পীরগাছায় পাঁচদিন ধরে জামে মসজিদে তালা কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ চায় এনসিপি জাবিপ্রবিতে ইইই বিভাগে শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম চীনের সঙ্গে চুক্তি, মোংলা বন্দর পরিণত হবে আধুনিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে ‘জুলাই ঐক্য’র আত্মপ্রকাশ সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ পুলিৎজার পেলেন যারা বড় ধরনের সংস্কার রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া বাস্তবায়ন করা হবে না নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে কিছু প্রতিক্রিয়া আক্রমণাত্মক ঝিনাইগাতীতে ফরমালিনযুক্ত আমের দোকানে অভিযান, ফরমালিনযুক্ত বেশকিছু আম ধ্বংস চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা নওগাঁর বদলগাছির ‘নাক ফজলি আম’ জিআই পণ্যের স্বীকৃতি সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া সেই ইউএনওকে রংপুর বিভাগে বদলি আদমদীঘিতে পুলিশের অভিযানে মাদকসহ গ্রেপ্তার ৬ অভয়নগরের কামকুল বাজারে সামান্য বৃষ্টিতেই জলবদ্ধতা, বেড়ে যায় জনদুর্ভোগ ৬ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর বাকৃবির শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি ভিসি স্বাক্ষর না করায় তিনমাস আটকে আছে পরীক্ষা: ববি শিক্ষক গাইবান্ধা থেকে অপহৃত পল্লীচিকিৎসক তিনদিন পর বগুড়া থেকে উদ্ধার। সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর ২ সহযোগী অস্ত্র-গোলাবারুদসহ আটক সাতক্ষীরায় প্রযুক্তির সহায়তায় নারী প্রকল্পের ফ্রিল্যান্সর প্রশিক্ষণ শেষে ল্যাবটপ বিতরণ নোয়াখালীতে ১১ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

ওষুধের মূল্য নির্ধারণে অব্যাহতভাবে চলছে চরম নৈরাজ্য

বাজারে ওষুধের মূল্য নির্ধারণে অব্যাহতভাবে চরম নৈরাজ্য চলছে। কোনো কারণ ছাড়াই ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে অনেক কোম্পানি। নিত্যপণ্যের দামের মতো লাগামহীনভাবে দাম বাড়ানোর ফলে জিম্মি হয়ে পড়ছেন রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজনরা। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় তাদের অবস্থা বেশি শোচনীয় হয়ে পড়ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

দেশের চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও গত কয়েক দিনের মধ্যে বেশ কিছু ওষুধের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এর মধ্যে বাজারে শীর্ষস্থানীয় এক কোম্পানির এক ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় ৮৪ শতাংশ। এ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক, বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশন, ব্যথানাশক ট্যাবলেট, ভিটামিন, গ্যাস্ট্রিক ও ডায়াবেটিসের ওষুধের দামও বেড়েছে।

শুক্রবার সরেজমিনে  একাধিক ফার্মেসি ঘুরে ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা এসব তথ্য পাওয়া গেছে। পাইকারি ও খুচরা ওষুধ বিক্রেতাদের অভিযোগ, এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ওষুধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বছরের পর বছর ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। আর ওষুধের মূল্য নির্ধারণে সরকারের তেমন কোনো ভূমিকা নেই। ফলে সে সুযোগে যে যার মতো দাম বাড়ায়। আর ওষুধের দাম বাড়ার কারণে দোকানদারদেরও বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় কাস্টমারদের সঙ্গে দাম নিয়ে তাদের তর্ক-বিতর্কও করতে হয় ও দোকানদারদের কৈফিয়ত দিতে হয়, কেন দাম বাড়ল?

তবে ওষুধের দাম বৃদ্ধির পেছনে ডলার সংকট, উৎপাদন ব্যয়, প্যাকেজিং মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিকে দায়ী করেন ওষুধ কোম্পানিগুলোর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় দেড় হাজারের বেশি এসেনসিয়াল ড্রাগসের (জীবনরক্ষাকারী ওষুধ) ২৭ হাজারেরও বেশি ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করা হয়। এগুলোর মধ্যে মাত্র ১১৭টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার। অন্য সব ওষুধের মূল্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করে। তবে সে তালিকায় নেই গ্যাস্ট্রিক, হৃদরোগ কিংবা ডায়াবেটিসের মতো নিত্যব্যবহৃত ওষুধগুলো। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইচ্ছামতো মুনাফা করছে ওষুধ কোম্পানিগুলো। তাই ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নতুন সরকারের নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, কিছুদিন আগেও এসিআই লিমিটেড ওষুধ কোম্পানির চুলকানি বা খোস-পাঁচড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত টেট্রাসল ২৫ শতাংশ সল্যুসনের ৩০ এমএল বোতলের দাম ছিল ৬৮ টাকা। যা বেড়ে এখন হয়েছে ১২৫ টাকা। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ৮৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।

ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের এজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত উইন্ডেল প্লাস রেস্পিরেটর সল্যুসনের তিন এমএলের বোতলের দাম ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই কোম্পানির অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত বুটিকর্ট নেবুলাইজার সাসপেনশন বুডেসোনাইড দুই এমএলের দাম ৪০ থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা হয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। 

ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সিজ (বিডি) লিমিটেড হিউমুলিন এন ইঞ্জেকশন ৩ মিলি কুইকপেন ৫টির এক প্যাকের দাম ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। বেড়েছে প্রায় তিন শতাংশ। একই কোম্পানির ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসায় ইনজেকশন ‘হিউমুলিন আর’ ৩ মিলি কুইকপেনের দাম ৮৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৯০ টাকা। দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট ফিনিক্স ২০ এমজি ট্যাবলেট প্রতি পিসের দাম ৭ থেকে বেড়ে ৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। বায়োফার্মা লিমিটেড কোম্পানি ভিটামিন জাতীয় ট্যাবলেট নিউরেপ ভিটামিন বি১, বি৬ ও বি১২ প্রতি পিস ৬ টাকা থেকে বেড়ে ৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০টির এক পাতা ট্যাবলেটের দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা করা হয়েছে। দাম বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

দাম বাড়ার বিষয়ে ঔষধের দোকানিরা জানান, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও কম-বেশি কিছু ওষুধের দাম বেড়েছে। তবে এখন দাম কিছুটা কমই বাড়ছে। দাম বাড়ার কারণে অনেক সময় কাস্টমারদের কাছে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হয়। ওষুধ বিক্রি করতে হাজারও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু আমাদের তো করার কিছুই নেই। দাম যা লেখা থাকে সেভাবেই আমরা বিক্রি করি। 

এদিকে  প্রতিদিনই বাজারে কিছু না কিছু ওষুধের দাম বাড়ে। তবে গত কিছুদিন ধরে ইনজেকশনসহ বিভিন্ন ওষুধের দাম বেড়েছে। 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওষুধ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএপিআই) এক নেতা বলেন, কোনো কোম্পানি ইচ্ছা করলেই ওষুধের দাম বাড়াতে পারে না। দাম বাড়নোর জন্য কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। যেমন ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে আবেদন করতে হয়। পরে ঔষধ প্রশাসন তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেয়। তবে আমাদের দেশে ওষুধের দাম খুব যে খুব বেশি বেড়েছে তা বলা যাবে না। ওষুধ উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানি, ডলার সংকট, জ্বালানি তেল ও প্যাকেজিং মূল্যবৃদ্ধিসহ অন্যান্য উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ওষুধের দাম যাতে সমন্বয় করা হয়, সে বিষয়ে সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাই।

 ওষুধের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে কমিশন বাণিজ্য এবং ওষুধের বিজ্ঞাপন খরচ কমিয়ে বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সব ধরনের ওষুধের মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফর্মুলার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। এ জন্য কঠোর নজরদারি বাড়ানোসহ কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে

Tag
আরও খবর