জাগো মুসলমান - আর. এম. কারিমুল্লাহ আমরা খামেনিকে এখনই হত্যা করব না: ট্রাম্প যে কারণে পুরুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা জরুরি জানভির মিউ মিউ লুকে লন্ডনের ফ্যাশন সন্ধ্যায় ঝলকানি লাখাইয়ের গোপিনাথ লিবিয়ায় অপহরণের শিকার ; শোনালেন নির্যাতনের কাহিনী শান্তিগঞ্জে জামায়াতের সাংগঠনিক ও বায়তুলমাল পক্ষের প্রস্তুতি সভা ক্ষেতলালে সরকারি পুকুর লীজকে কেন্দ্র করে নারী উদ্যোক্তাকে মারধর কিশোরগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে দু'জনের মৃত্যু ইশরাকের বিরুদ্ধে ‘ক্রিমিনাল অফেন্সের’ অভিযোগ আসিফ মাহমুদের শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরি, চালকের আসনে বাংলাদেশ তেহরানে দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে: পররাষ্ট্রসচিব সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৪৪ জন অবশেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলো জিল্লুর রহমানকে দিনাজপুরে পুকুরে ডুবে দুই কন্যা শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স১০০ শয্যায় দাবীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন রাজশাহী কলেজ পাঠকবন্ধুর ঈদ পুনর্মিলনী ও আম উৎসব অনুষ্ঠিত লালপুরে ভেজাল আইসক্রিম তৈরির দায়ে ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দুই মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা

আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু

আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় জেলেদের হতাশা-দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়েই শেষ হলো ইলিশ ধরার মৌসুম, সহায়তা পাচ্ছেন না হাজারও জেলে। আজ বুধবার মধ্যরাত থেকে ইলিশ সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। তাই মাছ ধরা বন্ধ হলে কীভাবে সংসার চলবে তা নিয়েই চিন্তিত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর হাজারো জেলে পরিবার।



তারা বলছেন, অনিবন্ধিত অসংখ্য জেলে রয়েছে। যারা নিষেধাজ্ঞাকালীন সরকারের সহায়তাটুকুও পাচ্ছেন না। এছাড়া নিবন্ধিত সব জেলেও সহায়তার আওতায় আসছে না। যারা এ সুবিধা পান, বেশিরভাগ সময়ে নিষেধাজ্ঞার শেষদিকে সহায়তার চাল বিতরণ করা হয়; যা তাদের তেমন কোনো কাজেই আসে না।



জেলেরা বলছেন, এবারের পুরো ইলিশ মৌসুমই তেমন ভালো কাটেনি তাদের। শতকরা ১০ থেকে ১৫ জনের কপালে ভাগ্যগুণে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিলেছে। বেশিরভাগ জেলেই হতাশ এবার। লাভতো দূরের কথা, আয়-ব্যয় সমান সমান অবস্থা অনেকেরই। চলতি বছরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ২৩ জুলাই থেকে ইলিশ ধরা শুরু হলেও জেলেদের জালে ধরা পড়েনি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। বরং একের পর এক ঝড়-ঝঞ্ঝায় জেলেদের জাল-ট্রলারের ক্ষতি হয়েছে।



মৌসুমের শেষদিকে এসেও মৌসুমি বায়ু-লঘুচাপের কারণে বারবার নদী ও সাগর থেকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। একেবারে শেষ মুহূর্তে পরিবেশ অনুকূলে আসায় আশা ছিল- হয়তো মাছ মিলবে; কিন্তু সাগর ও নদীতে ইলিশের তেমন দেখাই মিলেনি। যাও ধরা পড়েছে, তার বেশিরভাগই জাটকা।



রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া এলাকার জেলে আরিফ হোসেন বলেন, কয়দিন পরপর ঝড়-বন্যা। এহন (এখন) আবার অবরোধ। জাইল্ল্যারা (জেলে) যে কী কইরা খাইবে? ধারদেনায় একবারে শ্যাষ (শেষ) সবাই।



উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের জাহাজমারা স্লুইসঘাটের মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী খোকন ভূঁইয়া বলেন, নদীতে তো দূরের কথা, সাগরেই মাছ কম ছিল। বড় সাইজের ইলিশ এবার নাই বললেই চলে; যা পেয়েছে বেশিরভাগ জাটকা ইলিশ।

সদর ইউনিয়নের খালগোড়া বাজারের মদিনা ফিস মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী রেজাউল হোসেন বলেন, শুধু জেলেরাই নয়, এবার আমরাও (ব্যবসায়ী) অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। মাছ না পেলে সবারই ক্ষতি।



মৎস্যজীবীদের এমন হতাশার মধ্যেই শেষ হলো এ বছরের ইলিশ ধরার মৌসুম। পঞ্জিকা অনুযায়ী আশ্বিন অমাবস্যার তিথি শুরু হবে ১৩ অক্টোবর এবং শেষ হবে ১৪ অক্টোবর। আর লক্ষ্মী পূর্ণিমার তিথি শুরু হবে ২৮ অক্টোবর, শেষ হবে ২৯ অক্টোবর। মৎস্য বিজ্ঞানীদের তথ্যানুযায়ী, ইলিশের ডিম ছাড়ার মোক্ষম সময় এটি। এ সময় সাগরের নোনা পানি থেকে মোহনা হয়ে নদীর মিঠাপানিতে ডিম ছাড়তে আসবে মা ইলিশ। তাই প্রজননের জন্য অনুকূল পরিবেশে বিনা বাধায় ইলিশ আসার জন্য বুধবার মধ্যরাত থেকে মা ইলিশ সংরক্ষণে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।


মৎস্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, রাঙ্গাবালী উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা মোট ১৬ হাজার ৮১৭ জন। এর মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞায় ১১ হাজার ৬৬৬ জন জেলে সরকারি সহায়তা পাবেন। তাদের প্রত্যেককে ভিজিএফ সহায়তার আওতায় ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।


ফলে নিবন্ধিত ৫ হাজার ১৫১ জন ও অনিবন্ধিত আরও ৩ থেকে ৪ হাজার জেলে সরকারের এ সহায়তা বঞ্চিত হবেন। নিষেধাজ্ঞাকালীন তারা হবেন ধারদেনায় জর্জরিত, এমনটাই বলছেন জেলেরা।


উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলী আহমেদ আখন্দ বলেন, অনিবন্ধিত জেলেদের নিবন্ধনের আওতায় আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর নিষেধাজ্ঞার শুরুতেই চাল বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।



এ ব্যাপারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার ও মেরিন সায়েন্স অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মাদ আলী বলেন, প্রজননের সময় সাগরের নোনা পানি থেকে মোহনা হয়ে নদীর মিঠাপানিতে ডিম ছাড়তে আসে ইলিশ। একটি ইলিশ গড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ ডিম ছাড়ে। এর সুফল সবচেয়ে বেশি জেলেরাই ভোগ করবেন। পাশাপাশি জেলেদের সহায়তাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাহলেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা থেকে বিরত থাকবেন জেলেরা।


উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় ইলিশ সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে। এর বাহিরেও উপকূলীয় বিভিন্ন নদীতে ডিম ছাড়ে।

আরও খবর