নাগেশ্বরীতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরাধীন আইসটি কম্পিউটার এ্যান্ড নেটওয়ার্কিং প্রশিক্ষণের উদ্বোধন। রংপুর অঞ্চল অচল করে দেয়ার হুমকি দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা লাখাই ডি সি রোডে শুকানো হচ্ছে গরুর খাদ্য খড়,যানচলাচলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। ইলিশ ধরা শুরু,জেলে পল্লীতে উৎসবের আমেজ ঋণ আর দাদনের আতংক শ্যামনগরে তিন বখাটের ভ্রাম্যমান আদালতে কারাদণ্ড শ্রীপুরে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ মাগুরায় শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইভটিজিং করায় ৩ বখাটে কারাগারে আশাশুনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কালিপদ রায় আর নেই গাড়িতে হামলা, আহত হাসনাত ঝিনাইগাতীতে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় নকলের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার পদ্মায় জেলের জালে আটক দুই কাতল ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে হেরোইনসহ ইউপি সদস্য গ্রেফতার । রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকার কোনো চুক্তি করেনি: ড. খলিলুর রহমান এবার কোরবানিযোগ্য পশু সোয়া কোটি, উদ্বৃত্ত থাকতে পারে ২০ লাখ ভিসির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সারিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরই মিয়ানমারে ফিরবে রোহিঙ্গারা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডোমারে স্কাউট ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

৬ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থেকেই সময় কাটছে নুরুল আমিনের


৬ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থেকেই সময় পার করছেন মো.নুরুল আমিন(৩৮)।দিনরাত সবসময় দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।ঠিকমতো তিনি খাননা,গোসল করেননা,ঘুমানননা।মাঝেমধ্যে কখনো রাতে অল্প ঘুমান। তাও আবার ঘরের বাহিরে দাঁড়িয়ে বা বসে থেকে।আর বাকি সময় কাটে তার দাঁড়িয়ে থেকে।মাঝে মাঝে অল্প সময় বসেও থাকেন তিনি।


মো. নুরুল আমিনের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের চৈতনখালী গ্রামে।পিতা আবুল হোসেন বেঁচে নেই। মা জাহেরা খাতুন মানসিক ভারসাম্যহীন।


মধুপুর - দেওয়ানগঞ্জ সড়কের পাশে চৈতনখালী মসজিদ ও মাদ্রাসা সংলগ্ন ছোট টিনের দুচালায় তার বসবাস। হতদরিদ্র নুরুল আমিনের সংসারে রয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও ৪ ভাই।ভাইদের মধ্যে সে দ্বিতীয়। তিনি বিয়ে করেননি। 


সরেজমিন চৈতনখালী গ্রামে নুরুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে নুরুল আমিন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পরনে কালো লুঙ্গী ও খালি গায়ে জড়ানো রয়েছে কালো চাদর। এক পোশাকেই তিনি থাকতে বেশী পছন্দ করেন।দাড়ি,গোফ ও মাথায় ঝট বাঁধা লম্বা চুল।


নুরুল আমিনের সাথে কথা বলে জানা যায়,১২ বছর ঢাকায় একটি টেক্সটাইল মিলে চাকুরী করেছেন তিনি।ভালোই চলছিল তার সময়। কিন্তু হঠাৎ তার কি জানি হয়ে গেল। কাজে মন বসেনা।কোনকিছু তার ভালো লাগেনা। ছটপট মন।কিছুতেই তিনি শান্তি পাচ্ছিলেননা।না পারেন বসে থাকতে,না পারেন শুইতে।ঘুমও আসেনা তার চোখে।মন যেন চায় সবসময় বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে সময় কাটাতে।এতেই তার যেন কিছুটা ভালো লাগে।


এরপর থেকেই দাঁড়িয়ে তার সময় কাটছে। দিনরাত সবসময় তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। যখন ক্লান্তবোধ করেন তখন বসে থাকেন।কখনো রাস্তার পাশে,বাড়ির সামনে,কখনো উঠানে,কখনো বা মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন নুরুল আমিন।প্রতিবেশী ও পথচারীসহ উৎসুক মানুষ তার এই দাঁড়িয়ে থাকাটাকে বুঝতে পারেননা।


নুরুল আমিন বলেন,কতদিন ধরে তিনি এভাবে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন তা নিজে বলতে পারেননা।আল্লাহই ভালো জানেন।আমারে অনেকেই পাগল বলে।কিন্ত আমিতো পাগল না।


তাছাড়া অসুখের কারনে ঠিকমত গোসল করতে পারিনা,গোসল করতে মন চায়।আমার অসুখের পর থাইক্কা মাথার চুল ঝট হইছে।আমি সবসময় এক পোষাকেই থাহি।পোষাক পাল্টাইতে পারিনা। পেটে ভোগ লাগলে যহন মন চায় তহন খাই।কথাও বলিনা,যহন মন চায় তহন কথা বলি।


তিনি জানান,অসুখের কারনে ভালো মানুষের মতো কোনকিছু করতে পারিনা।ঘরে যাইতে পারিনা।বাইরেই সবসময় দাঁড়াইয়া থাহি, বইসা থাহি।কেন এইরকম করি তা আমি বলতে পারিনা।উপরওয়ালাই ভালো জানেন।চিকিৎসা করতাছি।কবিরাজে কইছে এটি উপরের সমস্যা। মানে মাথার সমস্যা। চিকিৎসা করলে ভালো অইবো।সময় লাগবো আরকি।


নুরুল আমিনের প্রতিবেশী রিটন বলেন, ৬-৭ বছর ধইরা নুরুল আমিন এই জায়গায় দাঁড়াইয়া থাহে।সে খায়না, গোসল করেনা,ঘুমায়না।


নুরুল আমিনের ভাতিজা তরিকুুল ইসলাম বলেন, নুরুল আমিন ৬-৭ বছর ধইরা অসুস্থ। সে দিনরাত সবসময় দাঁড়াইয়া থাহে।রাতেও সে দাঁড়াইয়া ঘুমায়। সে ঠিকমত গোসল করেনা,খায়না।


নুরুল আমিনের মামী মঞ্জিলা খাতুন বলেন,অনেক বছর ধইরা নুরুল আমিন বাইরে থাহে,ঘুমায়না।ঝড়, বৃষ্টি,বাদল শীত সবসময় সে বাইরে থাহে।ঘরে যায়না।দাঁড়াইয়া ঘুমায়।আবার বইসাও ঘুমায়।কোনসময় বইয়া থাহে। এইভাবেই সে বাইরে থাহে।


স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.নয়ন মিয়া বলেন,দীর্ঘদিন ধরে নুরুল আমিন এক জায়গায় দাঁড়িয়েথাকে, একই পোষাক পড়ে। সে মনে হয় মানসিক রোগী।যদি তার চিকিৎসা করানো যায় তাহলে সে ভালো হইতে পারে।সমাজের বিত্তশালী মানুষ যদি তার চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করেন তাহলে হয়তো সে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে।

আরও খবর