কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদিকে নিজের পিতা দাবি করে এমপি বদির ডিএনএ টেস্ট করাতে মোহাম্মদ ইসহাক নামের যুবক তিন বছর ধরে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছেন। আলোচিত এই সাবেক সংসদকে নিজের বাবা পরিচয় নিশ্চিত করতে ইসহাক চালাচ্ছেন এই আইনী লড়াই। আর নানান কৌশলে গত ৩ বছর ধরে ডিএনএ টেস্ট এড়াতে আদালতে হাজির হচ্ছেনা বদি।
২০২০ সালে ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফ সহকারী জজ আদালতে মোহাম্মদ ইসহাক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ১৪৯। দীর্ঘ সময় ধরে কক্সবাজার ৪ উখিয়া টেকনাফের আলোচিত সাবেক এই সংসদ সদস্য নানা কৌশলে আদালতে হাজির হচ্ছেননা। পিতৃত্বের দাবি করে মো. ইসহাকের করা মামলায় এবারও আদালতে হাজির হলেন না টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি।
মোহাম্মদ ইসহাক সোমবার (৭ আগস্ট) সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত একাউন্ট ইসহাক ও বদি দুইটি ছবি দিয়ে পোস্ট করে লেখেন। আলহামদুলিল্লাহ্। প্রায় দীর্ঘ তিন বছর পর আমার মামলার বিবাদী হাজী মোহাম্মদ ইসলাম সাহেব (মেয়র টেকনাফ পৌরসভা) হাজিরা দিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু আমার বাবার ( এমপি বদি’র)দেখা নাই। নিশ্চয় তিনিও আসবেন। আমি চাই সঠিক বিচার। মনে রাখবেন আইন ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেই না। আমি অপরাধী হলে আমি শাস্তি পাব, আর আমার বাবা অপরাধি হলে তিনি আমার অধিকার ফিরিয়ে দিবেন। এখন অতি সহজভাবে পরিক্ষার মাধ্যমে জন্মপরিচয় শনাক্ত করা যায়। তিন বছর আমি প্রতিনিয়ত সঠিক বিচারের আশায় আদালতে হাজিরা দিয়েছি। মামলা চালমান রেখেছি। আমার অতি কষ্টের হালাল অনেক উপার্জন আমার বাবার জন্য ব্যয় করেছি। আমি বলেছিলাম মামলা করার সময় আমার মৃত্যু না হওয়া পযর্ন্ত আমি মামলা চলমান রাখব। এটা আইন প্রণয়নকারীদের পক্ষে আইন ভঙ্গের অভিযোগ। আমি চাই ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে আমার মামলাটি সমাপ্ত হোক। আমার বাবার কৃতিম শক্তি নিশ্চয় পারাজিত হবে। আমার বাবাকে রাজনৈতিক ভাবে হয়রানি করা আমার উদ্দেশ্য নয়, তা হলে আমি তিন বছর আগে মামলা করতাম না। যদি আমার বাবা আমার অধিকার না দেয় নিশ্চয় আমি রাজনৈতিক মাঠে এর মোকাবিলা করব। আপনারা আমাকে অনেকে এই পরামর্শ দিয়েছেন। আপনারা আমার জন্য একটু দোয়া করবেন। মায়ের অনুমতি পাচ্ছিনা, মায়ের অনুমতি লাগবে।
বাদী মোহাম্মদ ইসহাক আবেদনে উল্লেখ করেছেন, ১৯৯২ সালের ৫ এপ্রিল কলেমা পড়ে তার মা সুফিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন আবদুর রহমান বদি। বিয়ে পড়ান বদির পারিবারিক আবাসিক হোটেল নিরিবিলিতে তৎসময়ে কর্মরত মৌলভী আবদুস সালাম। বিয়ের স্বাক্ষী ছিলেন হোটেলের দারোয়ান এখলাছ মিয়া। বুদ্ধি হওয়ার পর মায়ের কাছে জানতে পারেন তার পিতা আবদুর রহমান বদি। পরবর্তীতে মায়ের হাত ধরে অসংখ্যবার পিতার কাছে যান। পিতা আবদুর রহমান বদি আড়ালে তাকে নিজের সন্তানের মত বুকে জড়িয়ে আদর করেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এভাবে অনেকবারই পিতার কাছে গিয়ে সান্নিধ্য পেয়েছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে সন্তান হিসাবে মোহাম্মদ ইসহাককে মেনে নেয়নি বদি। রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, সামাজিক অবস্থানসহ নানা সমীকরণ দেখিয়ে তার মায়ের কাছে বারবার সময় নেন। মা সুফিয়া খাতুনও স্বামীর কথার অবাধ্য হননি। তাই এতদিন চুপ ছিলেন।
মোহাম্মদ ইসহাক তার মামলায় আরো দাবি করেন, গত ৩০ বছর আগে টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ ধুমপাড়ার বাসিন্দা আবুল বশরের মেয়ে সুফিয়া খাতুনকে সাবেক সংসদ সদস্য বদি গোপনে বিয়ে করেন। বাদী তার মায়ের পেটে আসার খবর জানতে পেরে তাকে পেটে থাকতে হত্যার চেষ্টা চালান বদি। তাতে সফল না হয়ে সুফিয়াকে স্থানীয় এক রাজ মিস্ত্রীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এসময় সুফিয়ার পেটে বাচ্চা থাকার কথা গোপন রাখা হয়। পরে জানতে পেরে সেই স্বামী সব মেনে নিয়ে সংসার করেন। এরপরও বাচ্চাসহ সুফিয়াকে হত্যার চেষ্টা করতো বদির পরিবার। এজন্য তারা প্রায় সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিয়ে জীবন ধারণ করে। এসব বিষয় উল্লেখ করে সুফিয়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। তাদের দাবি ইসহাক বদির সন্তান, তাকে যেন মেনে নিয়ে সন্তানের মর্যাদা দেয়া হয়। বাদী ও তার মায়ের দাবি অনুসারে আব্দুর রহমান বদির প্রথম সন্তান ইসহাক। তার অবয়ব, আচরণ সবকিছু বদির অবিকল কপি বলে উল্লেখ করেছেন ওয়াকিবহাল মহল।
মোহাম্মদ ইসহাক সোমবার (৭ আগস্ট) সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত একাউন্টে ইসহাক পোস্ট আরো উল্লেখ করেন লেখেন, যদি আমার বাবা আমার অধিকার না দেয় নিশ্চয় আমি রাজনৈতিক মাঠে এর মোকাবিলা করব। আপনারা আমাকে অনেকে এই পরামর্শ দিয়েছেন। আপনারা আমার জন্য একটু দোয়া করবেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওনায বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
২ দিন ৮ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
১৯ দিন ৬ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
২৮ দিন ৮ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
৩০ দিন ৮ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
৩৪ দিন ১০ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
৩৪ দিন ১০ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
৪৯ দিন ২২ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
৫২ দিন ৯ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে