রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন হাট-বাজারে জবাইখানা/কসাইখানায় আগত পশু জবাইয়ের পূর্বে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। অ্যানথ্রাক্স/তড়কা সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক, পথসভা কর্মসূচি চলমান রেখেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
জানা যায়, গত জুন-জুলাই মাসে এই উপজেলায় সদর ও পারুল ইউনিয়নে অসুস্থ জবাইকৃত গরুর গোশতের সংস্পর্শে এসেছেন এমন কয়েকজনের হাতে লক্ষণ দেখা দিলে নড়েচড়ে বসে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এরইমধ্যে কিছু উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয় কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগ মৃত্যুর বিষয়টি আনথ্রাক্সের কারণে হয়নি বলে জানিয়েছেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান ল্যাব, ঢাকা (সিডিআইএল) গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ফ্রিজে রক্ষিত জবাইকৃত অসুস্থ পশুর গোশতের ৫টি নমুনা পরীক্ষায় অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছে। এ পরিস্থিতিতে “আমিষেই শক্তি, আমিষেই মুক্তি” সেøাগানকে সামনে রেখে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উপজেলার ৮টি স্পটে জবাইয়ের জন্য আগত পশু জবাইয়ের পূর্বে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সুস্থতা নিশ্চিত হয়ে জবাই করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৯টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, পীরগাছায় ১ লাখ ৬৩ হাজার গরু, ১ লাখ ৬৫ হাজার ছাগল ও ১২০০ ভেড়া আছে। এই অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এরই মধ্যে ৯টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমে ৫৩ হাজার ৪২৭টি গরুকে ভ্যাকসিনের আওতায় নেওয়া হয়েছে এবং আরো অতিরিক্ত টিকার চাহিদা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অ্যানথ্রাক্সসহ অন্যান্য প্রাণঘাতি জুনোটিক রোগ প্রতিরোধে ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। বিভাগীয় ও জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ইতিমধ্যে একাধিকবার সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শন করে অত্র দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারি, ফিল্ড কর্মী, এআই টেকনিশিয়ান, এলএসপি ও ভ্যাক্সিনেটরদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন এবং দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় সাধারণ মানুষকে সচেতনতামূলক পাঁচ হাজার লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক, পথসভা কর্মসূচি, চিকিৎসা কার্যক্রম জোড়দারকরণ, উপজেলা ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে সার্বক্ষণিক তথ্য আদান প্রদান, ব্যাপক ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। কসাই/গোশত বিক্রেতাদের নিয়ে রোগ প্রতিরোধে জরুরী মতবিনিময় সভা করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: একরামুল হক মন্ডল জানান, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভেটেরিনারি বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রমে এখন অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি আরো বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে এই উপজেলায় প্রথমবারের মত চালু হলো জবাইয়ের পূর্বে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষ কার্যক্রম। অপর এক প্রশ্নে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, “জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ সরবরাহ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তিনি আতঙ্কিত না হয়ে গবাদিপশুর খামারীদেরকে উপজেলা পশু হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য পরামর্শ দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো: রাসেল বলেন, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে অনেকই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। আমরা প্রায় ৫৫ হাজার গরুকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে এসেছি। অ্যানথ্রাক্সের পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুদ আছে। আমরা জোরালোভাবে অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
৫ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৪০ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে