লাখাইয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রকে দিয়ে ভুয়া কবিরাজী চিকিৎসা ,প্রতারণার ফাদেঁ সাধারণ মানুষ ।
লাখাইয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রকে দিয়ে ভুয়া কবিরাজী,প্রতারণার ফাদেঁ সাধারণ মানুষ ।
লাখাই উপজেলার ৫নং করাব ইউনিয়নের আগাপুর গ্রামে চতুর্থ শ্রেণী পড়ুয়া এক ছাত্রকে দিয়ে তন্ত্র মন্ত্র ভুয়া কবিরাজি চিকিৎসা করাচ্ছেন তার বাবা। তার কাছে চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করছেন।
তবে অবুঝ শিশুকে দিয়ে কবিরাজির নামে এলাকার সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সচেতন মহল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,আগাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্র শ্রীদাম সরকার (১০) বাবা লাখাই উপজেলার ৫নং করাব ইউনিয়নের আগাপুর গ্রামের বাসিন্দা শৈলেন সরকার। এক সময় হাওরে জেলের কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি।
প্রায় ১বছর আগে চতুর্থ শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্র শ্রীদাম সরকারকে দিয়ে কবিরাজি ব্যবসা শুরু করেন। চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছে এই শিশু কবিরাজের বাবা। জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসায় লিপ্ত রয়েছেন তার বাবা শৈলেন সরকার।
গত মঙ্গলবার সরেজমিন শৈলেন সরকারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের প্রবেশ পথেই যানজট, নারী-পুরুষের লাইন ঠেলে পৌঁছাতে হলো চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া কবিরাজ শ্রীদাম সরকারের বাড়িতে। বাড়ির উঠানে মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। রাস্তার দুই ধারে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু। সারিতে রয়েছেন হিন্দু-মুসলিম সবাই। নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি।
শ্রীদাম সরকারকে সবাই বাবা বলে সম্বোধন করছেন। একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে পানি ও তেলপড়া এবং ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।শ্রীদাম সরকার তার বাবার অনুমতিতে বোতলভর্তি পানি ও তেলের শিশিতে ফুঁক দিচ্ছেন, এবং ৩৭০/৫২০টাকা করে হাদিয়া নিচ্ছেন। এবং জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে বড় অংকের টাকা এবং ছাগল মানত করতে হয়।
চিকিৎসা নিতে আসা প্রায় ১৫/২০ জন রোগী জানালেন, পরস্পরের মুখে রোগ ভালো হওয়ার কথা শুনেই তারা প্রথমবারের মতো এসেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগী বলেন, দুই দিন ধরে কবিরাজের কাছে আসছি। তেল ও পানিপড়া দিয়েছে, কিন্তু কোনো উপকার পাইনি। আবার অনেকেই বলছেন, সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে শৈলেন সরকারের দাবি, শিশুটির চিকিৎসায় অনেক জটিল রোগের উন্নতি হয়েছে।
গণমাধ্যম কর্মীরা শ্রীদামের বাবার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া শ্রীদাম সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র, আমার বাবা আমাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে, আমি স্কুলে যাইতে চাইলে বাবা বারণ করছেন, বলছেন আজকে রোগী আসবে স্কুলে যেতে হবে না।
এ বিষয়ে সচেতন মহলের পক্ষে ডাঃ ইসলাম উদ্দিন বলেন, এটা সম্পূর্ণ কুসংস্কার,শ্রীদাম সরকারের বাবা শৈলেন সরকার বড় ধরনের অন্যায় করছেন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রকে দিয়ে এটা করানো মুঠেও ঠিক হচ্ছে না, এ চিকিৎসার বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা নেই। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন,
এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপের মোবাইল ফোনে ফোন করলে উনি ফোন রিসিভ করেননি,যার কারনে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।