নাগেশ্বরীতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরাধীন আইসটি কম্পিউটার এ্যান্ড নেটওয়ার্কিং প্রশিক্ষণের উদ্বোধন। রংপুর অঞ্চল অচল করে দেয়ার হুমকি দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা লাখাই ডি সি রোডে শুকানো হচ্ছে গরুর খাদ্য খড়,যানচলাচলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। ইলিশ ধরা শুরু,জেলে পল্লীতে উৎসবের আমেজ ঋণ আর দাদনের আতংক শ্যামনগরে তিন বখাটের ভ্রাম্যমান আদালতে কারাদণ্ড শ্রীপুরে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ মাগুরায় শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইভটিজিং করায় ৩ বখাটে কারাগারে আশাশুনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কালিপদ রায় আর নেই গাড়িতে হামলা, আহত হাসনাত ঝিনাইগাতীতে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় নকলের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার পদ্মায় জেলের জালে আটক দুই কাতল ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে হেরোইনসহ ইউপি সদস্য গ্রেফতার । রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকার কোনো চুক্তি করেনি: ড. খলিলুর রহমান এবার কোরবানিযোগ্য পশু সোয়া কোটি, উদ্বৃত্ত থাকতে পারে ২০ লাখ ভিসির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সারিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরই মিয়ানমারে ফিরবে রোহিঙ্গারা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডোমারে স্কাউট ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

মাদকে ঝুঁকছে মোরেলগঞ্জের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

সুন্দর জীবন আর উজ্জ্বল  ভবিষ্যৎ গঠনে প্রায়  সব পিতা- মাতাই সন্তানকে ভর্তি  করেন পবিত্র  শিক্ষাঙ্গনে। কিন্তু যখন সেই স্বপ্ন  ভেঙে  ধূলিস্যাৎ  হয়ে পড়ে তিলে তিলে চোখের সামনে শেষ হতে দেখেন তখন হতাশা ছাড়া কিছুই থাকেনা তাদের জীবনে ।  বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশকে ঘিরে ফেলেছে মাদক। মাদকের সহজ লভ্যতায় তানসেবনে বিভিন্ন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা। অনেক শিক্ষার্থী  মাদক চক্রের এজেন্ট  হয়েও কাজ করছে বলে জানা যায়। ফলে হতাশা আর দুশ্চিন্তগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরা।

সম্প্রতি উপজেলার কয়েকটি  মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক  শিক্ষার্থীরা  মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন অভিভাবক গোপনে তাদের সন্তানদের চিকিৎসাও করিয়েছেন। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাদক কারবাীদের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে মাদক সংগ্রহ করে এসব শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে গাঁজা সবচেয়ে বেশি বিক্রি করা হয়। ১২ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের কাছে এই মাদকদ্রব্য  সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। আবার কোন শিক্ষার্থীর পারিবারিক অবস্থা ভালো থাকলে তারা ইয়াবা সহ অন্যান্য মাদকও সেবন করছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাদকে আক্রান্ত হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা পরিবারের লোকজন এ ব্যাপারে তেমন ভূমিকা রাখছেন না।অভিভাবকের চোখে মুখে হতাশার ছাপ। সামাজিক লজ্জার ভয়ে তারা এগুলো গোপন রাখছেন। রাতের অন্ধকারে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয় মাদক ।

মোরেলগঞ্জ শহরের একটি স্বনামধন্য  মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভিতরে খোলা জায়গায় রাতে দলবেঁধে মাদক সেবন করে এসব শিক্ষার্থীরা-এমনও অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা পেয়ে পাওয়ার দেখাতে গিয়ে মাদকাসক্ত সেবনে জড়িয়ে পড়ছেন  বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েরা। এদের মধ্যে ভালো পরিবারের সন্তানও রয়েছে। এছাড়াও মোরেলগঞ্জ পৌরপার্কের পেছনে পানগুছি নদীর পাড়, সানকিভাঙা খাদ্যগুদাম নিকটস্থ বালুর মাঠ, ৪ নং ওার্ডের বালির রাস্তার কয়েকটি স্পট, উপজেলা হেডকোয়ার্টারের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি পরিত্যক্ত ভবন মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে সমাদৃত।

এছাড়াও উপজেলার জিউধারা,বহরবুনিয়া,নিশানবাড়িয়া,খাউলিয়া,বলইবুনিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠেও এসব মাদক আড্ডা বসে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে এর বিস্তার দিনদিন দীর্ঘ হচ্ছে। বিশেষ করে অভিভাবকরা নিজেদের সন্তানকে সময় ও  সঠিক গাইড না দেওয়ার কারণে মাদকাসক্ত হচ্ছে তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  মাদকাসক্ত কয়েকজন স্কুল ছাত্রের অভিভাবক বলেন, আমাদের অজান্তেই ধীরে ধীরে মাদক সেবনে আসক্ত হচ্ছে আমাদের ছেলেরা। কোনভাবেই তাদের ফিরিয়ে আনতে পারছিনা। শেষ হয়ে যাচ্ছে আমাদের  স্বপ্ন। কয়েক বছর আগেও দেখেছি রাতের বেলায় পুলিশ বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন ,এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, ‘কম-বেশি সব বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থীরা মাদকের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব মাদক সম্পর্কে সচেতন করা হয়। কিন্তু পারিবারিকভাবে তাদেরকে যথাযথ দেখভালের অভাবে শিক্ষার্থীরা মাদক, ইভটিজিং সহ নানা অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পড়ছে।  যারা মাদক সেবন করে এরা খুব কম বিদ্যালয়ে আসে।'

এদিকে, মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশের পাশাপাশি মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান  বাগেরহাট জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় নিয়মিত মাদকের বিরুদ্ধে অভি্যান পরিচালনা করছেন। অনেককেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে  সাজাও দিয়েছেন।  কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়,   আইনের  ফাক - ফোঁকর দিয়ে তারা দ্রুত বেরিয়ে এসে দ্বিগুন উৎসাহে কাজ করছে।

বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমরা বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে মোরেলগঞ্জে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। আমাদের কাছে মাদকের তথ্য আসলেই আমরা অভিযান পরিচালনা করি।তবে মাদক থেকে সন্তানদের বাঁচাতে অভিভাবকদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।

শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি,  প্রশাসন ও জনহিতৈষী  মানুষের সমন্বিত প্রচেষ্টাই কেবল সর্বনাশা এ মাদক থেকে পরিবার, সমাজ তথা দেশকে রক্ষা  করতে পারে বলে সচেতন মহলের ধারণা।

Tag
আরও খবর