আ স ম ছালেহ সোহেল আহবায়ক ও এম খছরু চৌধুরী সদস্য সচিব
মৌলভীবাজার জেলার সাতটি উপজেলার প্রতিনিধি নিয়ে হাওর রক্ষা আন্দোলনের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজার পৌরসভার কনফারেন্স হলে জেলার কৃষক-মৎস্যজীবি, পরিবেশবাদী সংগঠন ও সাংবাদিক প্রতিনিধি নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে মৌলভীবাজারের কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলন কমিটি।
এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব এর সভাপতিত্বে সভায় আ স ম ছালেহ সোহেল-কে আহবায়ক ও এম খছরু চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে হাওর রক্ষা আন্দোলনের ৪৩ সদস্যের নির্বাহী কমিটি এবং ৮ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজার জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ (অব.) মোঃ ইকবাল।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সরওয়ার আহমদ, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব খালেদ চৌধুরী, বাইক্কা বিল রক্ষণাবেক্ষন সমিতির সভাপতি মিন্নত আলী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হাওর রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব এম. খছরু চৌধুরী।
কৃষক মৎসজীবী নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আলমগীর হোসেন, মাওলানা মকবুল হোসেন খান (বড়লেখা), হাসানুজ্জামান (জুড়ী), শাহীন ইকবাল (কুলাউড়া), সামছুদ্দিন মাস্টার (রাজনগর), এ কে এম আব্দুস সালাম (কমলগঞ্জ), দুলাল দেব (শ্রীমঙ্গল), খায়রুল ইসলাম (হাইল হাওর রক্ষা আন্দোলন), এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, এডভোকেট মোঃ মাসুক মিয়া, তানভীর আহমেদ লায়েক (রাজনগর) ফজলুল হক নিরু, সাংবাদিক হুসাইন আহমদ (হাকালুকি হাওর রক্ষা আন্দোলন), তাসনিম চৌধুরী (সদর উপজেলা), মোঃ আলমগীর হোসেন, সালাউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
খছরু চৌধুরী বলেন, আপনারা জানেন, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী মানুষের শরীরে যেমন একটা হৃৎপিণ্ড থাকে; এটা থেকে রক্ত শোষণ করে নিলে মানুষ যেভাবে বাঁচতে পারেনা, ঠিক তেমনি আমাদের পরিবেশের হৃৎপিণ্ড হচ্ছে হাওর ও জলাভূমি। সেই হাওর ও জলাভূমি ধ্বংস করলে আমাদের পরিবেশ আর বাঁচবে না। আমরা এ কয়বছর যাবত মৌলভীবাজারের হাওর ও জলাভূমি রক্ষার আইনত দাবি নিয়ে সরকারের প্রশাসন ও হাওর পরিবেশ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু কোনো সুফল হয়নি। প্রাণ আরএফএল কোম্পানি- সহ অনেক প্রভাবশালীরা ফিসারিজের নামে দখল ও ধ্বংসের মহোৎসব করছে হাইল হাওরে, সরকারের ১ নং খতিয়ানের কৃষি ভূমি, জলাভূমি তাঁরা দখল করে নিয়েছে, জাল জালিয়াতির দলিল করে জবরদখল করে নিচ্ছে গরীব কৃষকের ধানি জমি। বিকল্প জায়গা থাকতেও কাউয়াদিঘী হাওরের গভীরে সৌরবিদ্যুত প্রকল্প স্থাপনের নামে শিল্পপতিরা ক্ষেতের জমি ক্রয় করছে, এশিয়ার বৃহত্তম মিঠাপানির রিজার্ভায়র হাকালুকি হাওরেও দখল প্রক্রিয়া চলমান। মৌলভীবাজার জেলার ৩০ টি হাওরই আজ ধ্বংসপ্রায়। এই মৌলভীবাজারেই আমরা কয়েকবার হাওর ও জলাভূমি বিশেষজ্ঞ, মৃত্তিকা বিশেষজ্ঞ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ নিয়ে সভা-সেমিনার করেছি। কেউ-ই এদের কার্যক্রম অনুমোদন করছেন না। সরকার তথা প্রশাসনের চোখের সামনে আইন কানুন লঙ্ঘন করে, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে, সরকারের হাওর ও জলাভূমি উন্নয়নের ১২ বছরের মাস্টার প্ল্যানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেও সরকার এদের বিরুদ্ধে মামলা করেনা, শাস্তি দেয়না। উল্টো কোম্পানির প্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা ঠুনকো অজুহাতে গরীব কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা করে। সরকারের এই নীরবতা ও পক্ষপাতিত্ব কেন হয় তা জনগণ বুঝে এবং বিগত ৫৩ বছরের শাসকগোষ্ঠী দেশে যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেনি, লুটেরা স্বৈরাচারের আজ্ঞাবহ হয়ে দেশ চালিয়েছে; এটা তো দিনের আলোর মতো সত্য। বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে এতোগুলো জীবন বলিদান, এতো মানুষ পঙ্গু হবার পরও প্রশাসনে একই ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাঁচার স্বার্থে, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য মৌলভীবাজার রেখে যাবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়েই আমরা আন্দোলন করছি। মৌলভীবাজারের দেশী-বিদেশী সকল নাগরিকের সহযোগিতা চাই।
বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব খালেদ চৌধুরী বলেন, আপনাদের এই ন্যায্য আন্দোলনে আমার সমর্থন সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমিও আপনাদের সাথে আছি।
সাংবাদিক নেতা সরওয়ার আহমদ বলেন, আপনাদের ন্যায্য আন্দোলনে মৌলভীবাজারের কলম সৈনিকেরা পাশে থাকবেন। আমরা সকলে মিলে আমাদের হাওর জলাভূমি তথা পরিবেশ ভারসাম্যের হৃৎপিণ্ড রক্ষার সংগ্রাম জারি রাখবো এবং এই আন্দোলনে আমরা জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।
সভা শেষে হাওর রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব এম খছরু চৌধুরী'র সাময়িক বিদেশ ভ্রমণ ও কানাডার টরন্টো শহরে বৃহত্তর সিলেটের হাওরবাসী প্রবাসীদের অনুষ্ঠানে যোগদান উপলক্ষে কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
৩ ঘন্টা ২৭ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে