২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে দু'জনের মৃত্যু ইশরাকের বিরুদ্ধে ‘ক্রিমিনাল অফেন্সের’ অভিযোগ আসিফ মাহমুদের শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরি, চালকের আসনে বাংলাদেশ তেহরানে দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে: পররাষ্ট্রসচিব সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৪৪ জন অবশেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলো জিল্লুর রহমানকে দিনাজপুরে পুকুরে ডুবে দুই কন্যা শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স১০০ শয্যায় দাবীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন রাজশাহী কলেজ পাঠকবন্ধুর ঈদ পুনর্মিলনী ও আম উৎসব অনুষ্ঠিত লালপুরে ভেজাল আইসক্রিম তৈরির দায়ে ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দুই মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা শিক্ষার্থীদের ঈদুল আজহা আনন্দের স্মৃতিচারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মাউশির জরুরি নির্দেশনা আদমদীঘিতে যাত্রীবাহী বাস থেকে দুই কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেপ্তার আদমদীঘিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঈদ পূর্ণমিলনী ও জন সমাবেশ শ্যামনগরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরীর অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা গলাচিপায়-অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ নগদ অর্থ বিতরণ। সুন্দরবনের ৬০০ হরিণ শিকারের ফাঁদ উদ্ধার ব্রহ্মরাজপুর বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে সরকারী জমিতে অবৈধভাবে আরসিসি পিলার নির্মাণ করে ছাদ ঢালাইয়ের অভিযোগ

আনন্দ থেকে বেদনায় না হোক ঈদযাত্রা

মাহমুদুল হাসান ইমরোজ


সম্প্রতি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ ক্রসিং এলাকায় ট্রেন-ট্রাকের সংঘর্ষের ঘটনায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ছয়জন নিহত হন। আনন্দ থেকে বেদনায় পরিণত হলো ঈদভ্রমণ।


শাকতলা গ্রামের ১১ বন্ধু ঈদের কেনাকাটা করতে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ট্রেনে রওনা হয়েছিল। তিনজন ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছে বসেন, বাকি আটজন ভেতরে বসেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে টিকে থাকতে পারেনি তাদের কয়েকজন। পথে ট্রাকের সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষ হলে বাইরে বসা তিনজন মারা যান। ভেতরে থাকার কারণে আট জন বেঁচে যান।

এ ঘটনার জন্য কি ভাগ্যকেই দায়ী করতে হবে! আমাদেরকে আরো সচেতন না হলে এধরনের দুর্ঘটনা আরো বাড়তে পারে। মুহূর্তেই আনন্দ বেদনায় মিলিয়ে যাবে।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর কড়া নাড়ছে। কর্মস্থল থেকে ছুটছে মানুষ প্রিয়জনের কাছে যাবে বলে। ঈদ করবে নিজ বাসগৃহে। ঈদের সময় নৌ, স্থল ও ট্রেনে যানবাহনের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়। কিস্তু তারপরও যাত্রীর সংখ্যার তুলনায় তা অপ্রতুল। ফলে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায়। অনেককে ট্রেনের ছাদে চড়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল পরিষেবায় নতুন দিগন্তের উন্মেষ ঘটলেও যাত্রীরা যেভাবে ধাক্কাধাক্কি করে ট্রেনে উঠছে আর গাদাগাদি করে ট্রেনে অবস্থান করছে, আগামী সময়গুলোতে আরো বেশি সচেতন না হলে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে।   অনেকে ট্রেনে ভ্রমণের সময় ট্রেন দাঁড়ানো অবস্থায় জানালার পাশে বসে ফোন চালায়। এ সময় ছিনতাইকারী বা বখাটেরা জানালার পাশ থেকে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাই যাত্রা পথে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবেন যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। এ ছাড়া অনেক চক্র আছে যারা কালোবাজারিতে ভুয়া টিকিট বিক্রি করে, প্রথম শ্রেণির সিটের কথা বলে অনেক টাকা নেয় কিন্তু শেষে ফিটনেসবিহীন গাড়িতে উঠিয়ে সটকে পড়ে। তাই এসব প্রতারণা থেকে যত বেশি সাবধানে থাকা যাবে যাত্রীদের ভ্রমণ ততবেশি নিরাপদ হবে।

এ সময়েই দেখা যায় বিভিন্ন চক্র, ছিনতাইকারী ও পার্টি রাস্তাঘাটে, স্টেশনে, শপিংমলে ওৎপেতে আছে । তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষকে বিপদে ফেলা। বিশেষ করে মলম পার্টি খাবারের মধ্যে নেশাজাতীয় বা চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে টাকা পয়সা, মোবাইল, অলংকার ও প্রয়োজনীয় জিনিস হাতিয়ে নেয়। রাস্তার পাশে ছিনতাইকারীরা সাধারণ মানুষের বেশে ঘাপটি মেরে থাকে। এর সবচেয়ে বেশি শিকার হয় মেয়েরা। একলা হাঁটার সময় অথবা রিকশায় যাওয়ার সময় আচমকা পেছনে থেকে এসে মোবাইল, ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সিএনজি থেকে নেমে অনেক মেয়ে যাত্রীকে হা-হুতাশ করতে দেখা যায়। কারো মোবাইল নিয়ে গেছে কারো অলংকার নিয়ে গেছে। এসময়ে দামি অলংকার পরে একাকী বের না হওয়ায়ই নিরাপদজনক হবে।

শহরের বাসাবাড়িতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক না করেই অনেকে গ্রামে বেড়াতে যান। বাসার গ্যাসের সিলিন্ডার কিংবা চুলাটিরও যদি ফিটনেস না থাকে তবে বড় ধরনের বিপত্তির আশংকা থেকে যায়। অনেকসময় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে আগুন লেগে গেলে আবদ্ধ বাসায় জমে থাকা সিলিন্ডারের গ্যাসের সাথে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে মুহূর্তেই। গাড়ি ড্রাইভ করার সময় অবশ্যই ট্র্যাফিক আইন মেনে চলা উচিৎ। সবসময় ট্র্যাফিক সিগন্যাল এবং গতিবিধি মেনে চলুন। রাস্তায় কখনোই ওভারটেকিং করতে চেষ্টা করবেন না। কিংবা কখনোই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ড্রাইভ করবেন না। আপনার স্টিয়ারিং হুইলের উপর নির্ভর করে অনেকগুলো জীবনের স্বপ্ন। সুতরাং দুর্ঘটনা ঘটার সকল ধরণের ঝুঁকি এড়িয়ে সতর্কভাবে গাড়ি চালান। সব সময় পরিচিত ডাক্তার এবং পুলিশের ফোন নাম্বার সঙ্গে রাখুন। অসুস্থ বা কোনো বিপদে পড়লে যেন সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ ও বিপদের সময় পুলিশের সাহায্য নিতে পারেন। এছাড়া বিপদে পুলিশের সাহায্য নিতে যে কোনো জায়গা থেকে ৯৯৯-এ ফোন করুন। সমাজসেবা অধিদফতরের শিশু সহায়তা বিষয়ক ১০৯৮ নম্বরটিও অনেকসময় কাজে লাগতে পারে।

পরিশেষে, ঈদে সবার জীবন হয়ে উঠুক আনন্দময় ও নিরাপদ। আনন্দ থেকে বেদনায় পরিণত না হোক কারো ঈদযাত্রা, এটাই প্রত্যাশা।


লেখকঃ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।hasanimrose.du@gmail.com

Tag
আরও খবর