চট্টগ্রামে চলছে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা। চট্টগ্রাম চেম্বার এ মেলার আয়োজন করেছে। শনিবার (৪ মার্চ) ছুটির দিনে এ মেলা জমে উঠেছিল। এদিন নগরীর রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠের মেলা প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। পড়ন্ত বিকেলে মেলায় মানুষের ঢল নামে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দিন যতই গড়াচ্ছে মেলায় কেনাবেচাও বাড়ছে।


তবে দর্শনার্থীদের বাড়তি উপস্থিতিতে বিকেলের দিকে মেলায় প্রবেশেও বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। তবে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ ছিল উৎসবমুখর। মেলায় শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পুরুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শনিবার বিকেলে সরেজমিনে বাণিজ্যমেলার এমন চিত্র দেখা গেছে।


নগরীর চান্দগাঁও আবাসিকে থাকেন আলীম উদ্দিন ও জেসমিন আকতার দম্পতি। তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে মেলায় আসেন এ দম্পতি। অনেক জিনিসপত্র পছন্দ হলেও কিছু কেনা হয়নি। তিনি বলেন, ‘মেলায় বড় বড় কোম্পানি প্যাভিলিয়নে আলাদা ছাড় থাকে। গৃহস্থালি কিছু জিনিস কিনবো। আজ পরিবার নিয়ে পছন্দ করে গেলাম। দিন কয়েক পর একা এসে কিনে নিয়ে যাবো।’


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসির আলী বলেন, ‘আমরা বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য সিআরবিতে এসেছিলাম। পরে ঘুরতে মেলায় ঢুকেছি। এবার মেলার পরিবেশ বেশ ভালো। আগের চেয়ে ওপেন স্পেস (খোলা জায়গা) বেড়েছে। মানুষের জটলা হচ্ছে না। মেলায় বড় বড় কোম্পানিগুলোর প্যাভিলিয়নগুলো দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে।’


স্কুলশিক্ষিকা অন্বেষা চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতি বছর এ মেলায় আসি। শনিবারও স্কুল বন্ধ। এ সুযোগে মেলায় আসলাম। গৃহস্থালি কিছু জিনিসপত্র কিনেছি। আরও কিছু কিনবো। মেলায় অনেক স্টল একসঙ্গে থাকায় বুঝে-শুনে জিনিসপত্র কেনা যায়।’


গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী এ মেলা শুরু হয়। এবার প্রায় চার লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে বসেছে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের ৩০তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। মেলায় ২০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৫৬টি প্রিমিয়ার স্টল, ৯৪টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১১টি ফুড স্টল, তিনটি আলাদা জোন নিয়ে ৪০০টি স্টল বসানো হয়েছে। এবার মেলায় অংশ নিয়েছে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান।


মেলায় ফরেন জোন ও মেগা স্টলগুলোতে বাহারি ও চমকপ্রদ নানান ডিজাইনের কাপড় এসেছে। বিশেষ করে নারীদের থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, চুড়িদার, গহনা, জুতাসহ রকমারি দেশি-বিদেশি পণ্যের পসরা বসেছে। তবে মেলায় বেশি বিক্রি হচ্ছে গৃহস্থালি পণ্য, শিশুদের খেলনা, শো-পিস, তৈজসপত্র, জুতা, জামার বিক্রিও ভালো। প্রায় সব প্যাভিলিয়ন ও স্টলে আকর্ষণীয় ছাড়ে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।


মেলা কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম আকতার হোসেন বলেন, এরইমধ্যে ১৭ দিন পার হয়েছে। আরও ১৩ দিনের মতো সময় রয়েছে। আশা করছি, সামনের দিনগুলো বেশি জমজমাট হবে।


তিনি বলেন, ‘এবার মেলার পরিসর বেড়েছে। দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে মেলায় ঘোরাফেরা ও কেনাকাটা করতে পারছেন। পুরো মেলায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা রয়েছে। মনিটরিংয়ে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।’

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024