মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোনো সহানুভূতি দেখানো হবে না বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম। তিনি বলেছেন, রায় প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি নারী বা পুরুষ হোক তা দেখা হবে না।


প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার রোববার (১৬ নভেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।


ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর তামিম বলেন, সাধারণ আইনে জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে নারী, অসুস্থ ও কিশোরদের কিছুটা অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে রায়ের ক্ষেত্রে সাধারণ আইনেও তেমন কিছু নেই, এই আইনেও নেই। অর্থাৎ রায় প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি নারী হোক বা পুরুষ, তিনি কী অপরাধ করেছেন তার তীব্রতা বিবেচনা করে রায় দেওয়া হবে।


অপরাধ প্রমাণ হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে নারী হিসেবে শেখ হাসিনার বিশেষ সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।


প্রসিকিউটর বলেন, রায়ের ক্ষেত্রে আসামি নারী হোক, পুরুষ হোক- তিনি তার অবস্থানে থেকে কী অপরাধ করেছেন, সেই অপরাধের গ্র্যাভিটি বিবেচনা করে শাস্তি দেওয়া হবে। মামলা প্রমাণ না হলে খালাস দেওয়া হবে।


তামিম আরও বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধিতে জামিনের ক্ষেত্রে নারী, অসুস্থ ব্যক্তি এবং কিশোর, বালক, শিশুদেরকে সুবিধা দেওয়া আছে। কিন্তু রায়ের ক্ষেত্রে আমাদের সাধারণ আইনেও নারীকে কোনো আলাদা সুবিধা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল আইনে কোনো আলাদা প্রিভিলেজ নেই।


ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এ রায় ঘোষণা করা হবে।


ট্রাইব্যুনালের অন্য দুইজন হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।


গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য

করে।


ওইদিন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছি। আদালত সুবিবেচনা করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। তবে আমরা চাই, এই অপরাধের দায়ে আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।


২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে।


গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ না করায় তাদের পলাতক ধরা হয়েছে।


সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024