লাখাইয়ে ক্যাসিনো অনলাইন জুয়ার আসর,ধ্বংসের পথে যুব সমাজ। লাখাই উপজেলায় দিন দিন বেড়ে চলছে অবৈধ ক্যাসিনো জুয়ার আসর। বিশেষ করে চায়ের স্টলের আড়ালে বাজারের দোকানে বসে এবং বিভিন্ন এলাকায় দিনে ও রাতের অন্ধকারে গোপনে চলছে এই অবৈধ জুয়ার ব্যবসা। এতে জড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সী তরুণরা, যা স্থানীয় সমাজব্যবস্থার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব জুয়ার আসর পরিচালিত হচ্ছে। অনেকে আবার দাবি করছেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় এসব ক্যাসিনো ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে, চুরি-ডাকাতির মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনেক তরুণ পড়াশোনা ছেড়ে জুয়ার ফাঁদে পা দিচ্ছে। আর এ অনলাইন জুয়ার টাকায় সন্ধ্যা হলেই এসকল তরুনদের বেশিরভাগ মাদক সেবনের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন মাদক বিক্রেতাদের রুমে। কেউ বা মাদক ব্যবসায়ীদের অগ্রিম টাকাও প্রদান করেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ বলছেন, এ অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে অনেকে সখের জিনিষ বিক্রয় করে টাকা ইনভেস্ট করছেন ক্যাসিনো জুয়াতে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের গোয়াকড়া এলাকার এক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী জানান, ভাই এ জুয়ার নেশায় পড়ে আমি সব হারিয়ে আজ নিঃস্ব। সুন্দর জীবনের বদলে প্রতিনিয়ত একটি হতাশা নিয়ে আমি বেঁচে আছি। তার দেয়া তথ্যমতে জুয়ার বড় একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সিন্ডিকেটের রয়েছে নিজস্ব আ্যপস। জানা গেছে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন এলাকায় যে ছেলে পায়ে সেন্ডেল পড়ার সামর্থ ছিলো না সে আজ কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন,অনেকে আবার ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়াছেন। অবিলম্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ জুয়ার আসর বন্ধ না করলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংসের মুখে পড়বে। পাশাপাশি এসব ব্যবসার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন তারা। একজন বুল্লাবাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন,বুল্লাবাজারের এক সুনামধন্য দন্ত চিকিৎসক প্রথম বার ক্যাসিনো জুয়ায় ১০হাজার টাকা ইনভেস্ট করে ৭০হাজার টাকা লাভ করেন,এই লাভের আশায় প্রতিনিয়ত খেলছেন,বর্তমানে মাথায় ৭লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছেন, আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে হবে।” সাম্প্রতিককালে গত ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে ক্যাসিনোর এজেন্ট পরিবর্তিত হয়ে অন্যদের হাতে হস্তান্তর হয়ে পড়ে। তবে থেমে নেই এ অনলাইন ক্যাসিনো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্যাসিনো খেলে নিঃস্ব হওয়া কয়েকজন জানায়, বিভিন্ন বাজার থেকে শুরু করে বেশকিছু জায়গায় এ সকল ক্যাসিনো খেলা চলছে। কেউ তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। কারন এদের কমিশনে অনেকেই চলেন। তাই এরা ধরাছোয়ার বাহিরে। এসকল ক্যাসিনো সম্রাটগন এ জুয়ার টাকায় যেমন দামি বাইক, রাজকীয় চলাফেরা করছেন, তেমনি এরা গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি।
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024