|
Date: 2025-06-16 15:34:05 |
শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ১৫ জুন রবিবার দুপুরে উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম নূর আলম (৩৮)। তিনি ভাটিলংগরপাড়া এলাকার নূর ইসলামের ছেলে। এদিকে নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার জলিলের কাছ থেকে এক লাখ টাকা মাসিক দশ শতাংশ হারে সুদে ঋণ নেন ব্যবসায়ী নূর আলম। সুদের টাকা কয়েক মাস নিয়মিত দিয়েছেন তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হয়ে পড়ায় কথা কাটাকাটি হয় উভয়ের মাঝে। এসময় মারধরের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন জলিল। এছাড়াও এক মাসের কথা বলে টাকা ফেরত না দিয়ে ৬ বছর হয়ে যাওয়ায় এলাকায় কয়েক দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিচার-সালিশ করেও সুরাহা হয়নি। একপর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে মোটরসাইকেল আটক করে রাখে জলিল। গত এক বছর যাবত মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে। মোটরসাইকেলটি আটক রাখার পর ভুক্তভোগী নূর আলম শ্রীবরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও তিনি প্রতিকার পাননি। ফলে এ ঘটনা নিয়ে উভয়পক্ষে উত্তেজনা চলছিল বেশ কিছুদিন যাবৎ। এক পর্যায়ে টাকা আদায়ের জন্য বাজার থেকে নূর আলমকে ধরে নিয়ে গাছে বেঁধে রাখা হয়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নূর আলম বলেন, সুদের টাকা বাকি পরার কারণে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আটক করে রেখেছে অনেক দিন হলো। পরবর্তীতে জলিল পুলিশকে জানায়, টাকার পরিবর্তে মোটরসাইকেল নিয়েছি। আমার আর কোনো দাবি নেই। নূর আলম আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে আদালতেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলা পরিচালনা করছি। এখন আবার ৬-৭ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জোর করে উঠিয়ে তার বাড়িতে গাছের সাথে বেঁধে রেখে উল্টো আমাকে গরু চোর বলে। আমি এর বিচার চাই। খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন, ঘটনা শোনার পর আব্দুল জলিলের বাড়ি গিয়ে নূর আলম বাধা অবস্থায় পাই। পরে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুই পক্ষের মাঝে মীমাংসা করে দেই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জলিল বলেন, আমি তার কাছে অনেকদিন যাবত টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তাকে আমি কোনো মারধর করিনি। শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার জাহিদ জানান, গাছে বেঁধে রাখার খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। কোনো অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© Deshchitro 2024