|
Date: 2025-05-25 15:51:45 |
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলমের কাছে ৮২ দফা দাবি পেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার (২৪ মে) এই দাবি সমূহ আনুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্যের দপ্তরে তুলে ধরেন তারা।
দাবি গুলোর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী দাবি ২১টি, স্বল্পমেয়াদী দাবি ৪১টি ও শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকায়নের 20টি দাবি উত্থাপন করেন।
গত ১৯ মে ( সোমবার) বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের মদ্ধে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা সেখানে দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করে। পরবর্তীতে
সেই দাবিগুলো সমন্বয় করে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী মোট ৮২ টি দাবি উপাচার্যের কাছে উপস্থাপন করা হয়।
দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় একাধিকবার নানা সংকটে পড়েছে। বিশেষ করে সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সময়কালে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, শিক্ষার্থীদের নানাবিধ দাবিকে উপেক্ষা করা এবং শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার মতো ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।
দীর্ঘদিনের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে নেয় কঠোর কর্মসূচি। এক পর্যায়ে তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মধ্য দিয়ে চলে যায় এক প্রকার অ্যাকাডেমিক শাটডাউনে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অবস্থান কর্মসূচি, প্রতিবাদ মিছিল এবং সর্বশেষ অমরণ অনশনে যায় শিক্ষার্থীরা। বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে বিষয়টি জাতীয় পর্যায়েও গুরুত্ব পায়। চূড়ান্তভাবে ১৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাপক শুচিতা শরমিনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই ঘটনার পরই ১৩ মে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলম। উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় শুরু করেন এবং বিভিন্ন দাবির বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা ও সমাধানের আশ্বাস দেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদি কতা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী রশিদ সরদার বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ বঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ হওয়া সত্ত্বেও নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সকল শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে যে সল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি দাবি দেওয়া হয়েছে সেটি বাস্তবায়ন হলে সকল শিক্ষার্থীদের চাওয়া পাওয়া প্রতিফলন হবে এবং শিক্ষার মান আরো বেশি তরান্বিত হবে।
ইতিহাস বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা যে ৮২ দফা দিয়েছি, তার মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—উভয় ধরনের দফা রয়েছে। একই সঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিকায়নের জন্য কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। এই তিনটি বিষয়ের ওপরেই আমরা গুরুত্ব দিয়েছি, এবং সকল শিক্ষার্থীর যে চাওয়া—তা এই ৮২টি দফার মধ্যেই উঠে এসেছে। মাননীয় উপাচার্য স্যারও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি তার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, যাতে দাবিগুলো যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা যায়। একইসাথে আমরাও স্যারের ওপর আশাবাদী।
© Deshchitro 2024