সাতক্ষীরায় আইলার ক্ষত ১৬ বছরেও ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াতে হয়।

সুন্দরবন উপকূলীয় জেলা  জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট 'আইলা' আঘাতে মুহূর্তের মধ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি উপজেলার উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড করে দেয়।


ঘরবাড়ি ধসে গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার। চিংড়ি ঘের আর ফসলের ক্ষতি ছিল অবর্ণনীয়। ধ্বংস হয়ে যায় কয়েক 'শ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ। সে দিনের সেই ভয়াল স্মৃতির কথা আজও ভুলতে পারেনি উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৫ মে এই দিনে ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস আইলার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উপকূলীয় এলাকা। ১৪-১৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে সুন্দরবন উপকূলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায়। ভেসে যায় হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের,ফসলি জমি, গবাদি পশু।


আইলা বিধ্বস্ত এলাকায় আজও সুপেয় পানিসংকট রয়ে গেছে। খাবার পানির জন্য এক রকম যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হচ্ছে এ অঞ্চলে কয়েক লাখ মানুষের।

কোনোভাবে মেরামত করা বেড়িবাঁধগুলো পুনরায় ভেঙেছে। হুমকির মুখে বাঁধগুলো মেরামতের তাগিদ দেয়া হলেও তা ঠিক করা হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের অভাবে অর্থকষ্টে এখনও বাড়ি ছাড়তে হচ্ছে অনেককে।


শ্যামনগরের গাবুরার বাসিন্দা রহিম মাস্টার বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষ এখন আর ত্রাণ চান না। তারা এখন টেকসই বেড়িবাঁধ চান।


এদিকে আইলার ১৬ বছরেও উপকূলীয় এলাকার মানুষের বাঁধ ভাঙার কষ্ট আজও রয়ে গেছে। তাদের দাবি, টেকসই বেড়িবাঁধ।


ভৌগলিক অবস্থানের কারণে প্রতি বছর সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।


জেলা প্রশাসক জানান, সরকার ঘূর্ণিঝড় আইলা থেকে শিক্ষা নিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ ও নদী সংরক্ষণ কাজে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

ইতিমধ্যে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে উপকূল রক্ষার জন্য মেঘা প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।

ষাটের দশকে নির্মিত জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ নীচু হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামত অব্যাহত রেখেছে।

প্রসঙ্গত : ঘূর্ণিঝড় আইলায় সাতক্ষীরায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু নিহত হয়।


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024