
লালপুরে আরসিসি ঢালাই কাজে অনিয়ম, ২৪ ঘন্টা না যেতেই রাস্তায় ফাঁটল
আবু তালেব, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধ :
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভায় গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঢালাইয়ের ২৪ ঘন্টা না যেতেই রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাটি ও ময়লাযুক্ত নিম্নমানের পাথর, বালু এবং রড-সিমেন্ট পরিমাণে কম দিয়ে যেনতনভাবে কাজ করা হচ্ছে। তবে কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে পুনরায় নিয়মানুযায়ী কাজ সম্পন্ন করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
গোপালপুর পৌরসভা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রায় ৫১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে পৌরসভার রাজাপুর রোডের আখেরের আমবাগান হতে বিজয়পুর রাফির বাড়ি পর্যন্ত ৫৯৫ মিটার রাস্তা আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ পায় হামিদা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে তার থেকে শতকরা হারে কাজটি কিনে নেন সাব ঠিকাদার নজরুল ইসলাম। শিডিউল অনুযায়ী ঢালাইয়ের প্রতি মিশ্রণে এক বস্তা সিমেন্ট, দেড় বস্তা মোটা বালি, তিন বস্তা পাথর, ঢালাইয়ের থিকনেস ৫ ইঞ্চি, রডের খাঁচা নির্মাণে ৩০০ ও ২৭০ মিলি মিটার বর্গফুট রডের ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢালাইয়ে মাটি-ও ময়লাযুক্ত নিম্নমানের পাথর ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্পন্ন রাস্তায় খাঁচা নির্মাণে রডের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে ৩৫০ ও ৩০০ মিলিমিটার বর্গফুটে খাঁচা। এছাড়া মিশ্রণের অনুপাত ঠিক না থাকায় ঢালাইয়ের পরদিনই রাস্তা ফেটে গেছে। আবার বেশ কিছু জায়গায় ঢালাইয়ের থিকনেস কম বেশি হওয়ায় রাস্তায় পানি জমেছে।
এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম ও জাকির হোসেন বলেন, গতকাল ঢালাইয়ের পর ভাইব্রেটর মেশিন ব্যবহার করে নি। এতে ২৪ ঘন্টা না যেতে রাস্তায় ফাটল ধরেছে। আমরা চাই নিয়মানুযায়ী ভালো কাজ হোক, যেন রাস্তাটি দীর্ঘদিন টিকসই হয়।
এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম বলেন, যেসব জায়গায় রাস্তায় ফাটল ধরেছে সেগুলো আমরা ঠিক করে দিব। আর ভেকু দিয়ে ট্রাকে পাথর উঠানোর সময় পাথরে বেশি পরিমাণে মাটি চলে আসছে। তবে সেগুলোপানি দিয়ে ধুয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।
পৌরসভা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল আওয়াল কাজে কিছু অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার সুযোগ পেলেই ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেন, গতকাল সারাদিন তারা ভাইব্রেটর মেশিন ব্যবহার করে নি। আর পাথরে মাটি থাকার বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোপালপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামও অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, কাজের অনিয়মের দায়ভার ঠিকাদারকে নিতে হবে। ওরা ইচ্ছা করে হোক আর শয়তানি করে হোক রড কম দিয়েছে, ভাইব্রেটর মেশিনও ব্যবহার করে নি। পরবর্তীতে নিয়মানুযায়ী কাজ না করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।