ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বিজ্ঞান বিভাগ সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে সিনা ভবনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলামের কাছে অনলাইন মাধ্যমে এ স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।


স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে নির্ধারিত হারে ফি প্রদান করতে হবে। তবে শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তকে "অযৌক্তিক, অমানবিক এবং গবেষণার মৌলিক চেতনার পরিপন্থী" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। 


তাদের দাবিগুলে হলো, শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ফি ছাড়া প্রবেশাধিকার প্রদান, যতদিন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গভাবে অ্যানালিটিক্যাল সেবা চালু না হয়, অনার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ল্যাবে কাজের সুযোগ নিশ্চিত করা, মাস্টার্স পর্যায়ের গবেষকদের জন্য মাসিক সম্মানী/অনুদান বা বিকল্প ফি সহায়তা চালু করা ও শিক্ষার্থী-সেবাবান্ধব নীতিমালা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত গবেষণা অব্যাহত রাখার অনুমতি দেওয়া।


শিক্ষার্থীরা বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কেন্দ্রিক সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পর এই ফি ধার্য করা হয়। কিন্তু এখানে অনেক মেশিন অকার্যকর,  দক্ষ জনবলের অভাব, তারপরও ফি নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাব ফি নিলে, জনবল গবেষণার কাজ করে দেয়। কিন্তু এখানে জনবল না থাকার পরেও অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করেছে। ইবির বর্তমান অবকাঠামো ও আর্থিক বাস্তবতায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা অসম্ভব। 

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে এমন সিদ্ধান্ত তাদের গবেষণায় আগ্রহ ও সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন বলেন, গত কয়েক দিন আগে সেন্ট্রাল ল্যাব থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি দেখে হতাশ হয়েছি। কেন্দ্রীয় গবেষনাগারে কাজ করার জন্য পেমেন্ট দিতে হবে এ কথা শুনে। ইবির গবেষনার সার্বিক অবস্থা খুবই ভয়াবহ। কিছু বিভাগ নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের গবেষনায় উৎসাহিত করার চেষ্টা করলেও ইবি প্রশাসনের সার্বিক অবস্থা দেখে মনে হয় না তারা চান ইবিতে কোনো বিষয়ে গবেষনা হোক। আমরা বিভিন্ন বিভাগের স্টুডেন্টরা মিলে আজ সেন্ট্রাল ল্যাবের পরিচালক স্যারের সাথে কথা বলতে যাই। তিনি বর্তমানে ঢাকাতে থাকতে ফোনে তার সাথে কথা হয়। তিনি আপাতত ধার্যকৃত ফী সাময়িকভাবে বন্ধ করেছেন। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি চাই সেন্ট্রাল ল্যাব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকুক। টাকার জন্য কোনো শিক্ষার্থী বা কোনো শিক্ষক তার ল্যাব কাজ পরিচালনা থেকে বিরত থাকুক আমার মতে সেটি কাম্য নয়।'


এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি পেয়েছি। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ল্যাবের ফি কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আমাদের আন্যালাইটিক্যাল পার্টে কিছু সমস্যার কারণে সেকশন ৫.১ এর টেবিল-১ আগামী ৬মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়টা দ্রুত সমাধান করা হবে।’

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024