মিরসরাইয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শসস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় গুরুতর আহতের নাম আশীষ কুমার নন্দী (৪২)। তিনি উপজেলার ২ নম্বর হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী তালতলা এলাকার নন্দী বাড়ীর মৃত যদু গোপাল নন্দীর পুত্র। হামলার ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। হামলায় আহত আশীষ এখনো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় আশীষ কুমার নন্দী সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাড়ী ফেরার পথে পূর্ব হিঙ্গুলী নিমতলা মাজার এলাকায় সিএনজি অটোরিকশার গতিরোধ করে টেনেহেঁচড়ে সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। হামলার ঘটনার পরদিন ১৬ এপ্রিল তিনি চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিবাদী করা হয় আকাশ নন্দী প্রকাশ দিপঙ্কর নন্দী, প্রণব নন্দী প্রকাশ শুভ, উত্তম নন্দী, প্রদীপ নন্দী, রাহুল নন্দী, অঞ্জন নন্দীকে।

আহতের ভাই মরণ কুমার নন্দী বলেন, আমার বড় ভাই আশীষ কুমার নন্দীর উপর হামলাকারীরা ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর আমার উপরও হামলা করে। তখন হামলায় আমি গুরুতর আহত হই। আমার উপর হামলার ঘটনা এবং আমার বড় ভাই আশীষ কুমার নন্দীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর আমার বড় ভাই বাদী হয়ে ৫ জনকে বিবাদী করে চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা সিআর মামলা (নং-৩৭৫) দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু ও বিচারাধীন রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের উপর বারবার হামলার ঘটনায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

আহত আশীষ কুমার নন্দী বলেন, ‌হামলার দিন আমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। হামলাকারীরা এরআগে আমার ছোট ভাই মরণ কুমার নন্দীর উপর হামলা করে। ওই ঘটনায় আমি বাদী হয়ে ৫ জনকে বিবাদী করে চট্টগ্রাম আদালতে সি আর মামলা দায়ের করি। দায়ের করা ওই মামলায় ১ জনের নামে ওয়ারেন্ট এবং বাকী ৪ জনের নামে সমন জারি করে বিজ্ঞ আদালত। এতে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আরো কয়েকজন মিলে গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমি বাড়ী ফেরার পথে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা করে। আমাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমি প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের যথোপযুক্ত বিচার প্রত্যাশা করছি।

বাদী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী এডভোকেট একেএম মেহেদী হাসান টিটু বলেন, আশীষ কুমার নন্দীর উপর হামলার ঘটনায় তিনি জোরারগঞ্জ থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গেলে আসামীরা প্রভাবশালী বিধায় এবং আসামীদের নিকটাত্নীয় সিআইডিতে কর্মরত পুলিশ অফিসার তুষার নন্দীর প্রভাবের কারণে পুলিশ বাদীর মামলা নিতে গড়িমসি করতে থাকলে বাদী ঘটনার পরদিন ১৬ এপ্রিল ৬ জনকে বিবাদী করে চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সিআর মামলা (নং-১৩৭) দায়ের করেছেন।



প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024