|
Date: 2025-04-23 21:38:46 |
বগুড়ায় সরকার অনুমোদিত টেকনিক্যাল আইসিটি বাংলাদেশ (TICTB) পরিচালিত “আর মিডিয়া আইটি সল্যুশন এন্ড ট্রেনিং সেন্টার”-এ চুরি, লুটপাট ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও প্রশিক্ষক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে তিনমাথা রেলগেট এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কম্পিউটার বেসিক, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিংসহ নানা অনলাইনভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি বৃহৎ আকারে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে স্টেশন রোডের নূর ইসলাম মীরের মালিকানাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় মাসিক ৩ হাজার টাকা ভাড়া ও ৩০ হাজার টাকা অগ্রিমে ৫ বছরের চুক্তিতে স্থান ভাড়া নেয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভবনের মালিকের মৃত্যু পর তার দুই ছেলে আবু সাঈদ ও সাদিক ভাড়া আদায় শুরু করেন। ৫ বছর মেয়াদি চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে তারা জানায় নতুন বছরের শুরুতে নতুন চুক্তি হবে। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ ভাড়া ৮ হাজার এবং জামানত ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে, না হলে ঘর ছেড়ে দিতে বলে।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম তিন মাসের মধ্যে ৩০ হাজার টাকার জামানত ফেরতের শর্তে ঘর ছাড়ার কথা জানান। কিন্তু জামানত ফেরত না দিয়ে ঘর খালি করতে চাপ দিতে থাকেন আবু সাঈদ। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সন্ধ্যায় ক্লাস চলাকালীন সময়ে তিনি অফিসে ঢুকে ক্যাশ বাক্স থেকে ১৯,৫০০ টাকা নিয়ে যান। এরপর, ক্লাস শেষে সাদিক ধারালো অস্ত্র নিয়ে আশরাফুল ইসলামকে জিম্মি করে মালামাল সরিয়ে নিজ বাসায় নিয়ে যান এবং চাবি ছিনিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন।
এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং চরম ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হন আশরাফুল।পরবর্তীতে, ৫ এপ্রিল ২০২৫ এক বিয়ের অনুষ্ঠানে আশরাফুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালান অভিযুক্ত দুই ভাই। বার্মিজ চাকুর মুখে জিম্মি করে তাকে মারধর করা হয় এবং তার কোলে থাকা তিন বছরের কন্যার গলার ৬ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়া হয়। শিশুটিকে ছিটকে ফেলে দিলে তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।ঘটনার প্রেক্ষিতে আশরাফুল ইসলাম ৮ এপ্রিল ২০২৫ বগুড়া সদর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত দুই ভাই দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। বিলবোর্ড, ফেস্টুন, এমনকি রাস্তার প্যানা পর্যন্ত চুরি করে নিজেদের ঘরে নিয়ে যায়। স্থানীয় এক হারবাল চিকিৎসককেও একই কায়দায় দোকান থেকে বের করে তার মালামাল বিক্রি করে দেয়। তারা নিয়মিত রশিদ ছাড়াই ভাড়া আদায় করে, ফলে দোকানদারদের সাথে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হয়।অনুসন্ধানে জানা গেছে, তাদের নির্মিত তিনতলা ভবনটি পৌরসভার অনুমোদন ছাড়া সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। মেইন রোড ঘেঁষে বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে এমন স্থাপনা নির্মাণে কোনো প্ল্যান পাস করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বগুড়া পৌরসভার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© Deshchitro 2024