|
Date: 2024-11-23 07:50:43 |
কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিকের হাট
মোঃ ফরমান উল্লাহ,বিশেষ প্রতিনিধি
মসজিসে মোয়াজ্জিন ফজরের আজান দিচ্ছেন,পশু-পাখির কিচিমিচি শব্দে চার দিক মুখরিত। শ্রমজীবি মানুষ গুলো হাতে কাচি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে কাজের সন্ধানে।
আজ অগ্রহায়ন মাসের ৮ তারিখ। আমন ধানকাটা শুরু হয়ে গেছে আগেই। শ্রমজীবি মানুষেরা শ্রমের সন্ধানে ছুটছে বিভিন্ন স্থানে।দেশের বিভিন্ন এলাকাতে বসে শ্রমিকের হাট।
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে ও বসেছে শ্রমিকের হাট বেচা-কিনা হচ্ছে শ্রমিক।সকাল বেলা হাটতে গিয়ে কৌতহল বশত বাসস্ট্যান্ড গেলাম শ্রমিকের হাট দেখতে। গিয়ে দাঁড়াতেই একজন মধ্য বয়সী লোক এসে আমাকে বললো লোক লাগবে। আমি বললাম লোক লাগবে না,দেখতে এলাম শ্রমিক কিভাবে বেচা-কেনা হয়। প্রতিদিন শতাধিক শ্রমিকের সমাগম ঘটে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে।
আমি নিজ আগ্রহে লোকটাকে জিজ্ঞাস করলাম রোজ কত করে বেচা-কেনা হচ্ছে। তিনি জানালেন ৬৫০টাকা থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে দুই বেলা খাবার সহ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বললো এখন আগের মত শ্রমিকের দাম নেই। কারণ হিসাবে জানালেন এখন ধানকাটা অনেক ধরনের মেশিন আছে যার ফলে আমাদের কদর কমে গেছে। আগে এক সপ্তাহ আগেই আমাদের দাওয়াত দিয়ে রাখত যে আগামী শনিবার আমার জমির ধান কেটে দিতে হবে। এখন আমরা নিজেরা আসি দাওয়াত নিতে। প্রতিদিন সকাল বেলা সূর্য উঠার আগেই বাসস্ট্যান্ড এসে হাজির হই যদি আজ আমি বিক্রি হয় তাহলে আমার সংসার চলবে।
একজন আক্ষেপ করে বললেন শ্রম-বাজারে যুবকদের কদর বেশী। বয়স্কদের কদর তেমন নেই। যুবকরা বিক্রি হওয়ার পর আসে আমাদের পালা।কারো পছন্দ হলে কিনে নেয় না হলে অপেক্ষা করে চলে যেতে হয় বাড়িতে। যেদিন শ্রম বিক্রি করতে না পারে সে দিন খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে চলতে হয়।
নিত্য পন্যের দাম যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হারে বাড়েনি শ্রমিকের মজুরি। ফলে যারা দিন আনে দিন খায় বা কটিয়াদী শ্রম বাজারের শ্রমিকদের জীবন যাপন করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
© Deshchitro 2024