|
Date: 2024-07-28 12:45:49 |
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী সীমান্ত এলাকা পাহাড় বেষ্টিত হওয়ায় সুপেয় পানির সংকট লেগেই থাকে সারা বছর। তবে ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি গ্রামের ভাগ্যবান মানুষ সামান্য টাকা খরচ করে জ্বালানি ছাড়াই অনবরত পাচ্ছেন সুপেয় পানি। নিত্যদিনের সাংসারিক কাজ এমনকি কৃষি কাজেও ব্যবহার করা হয় এই পানি।
বিনাখরচে উত্তোলিত এই পানি সংরক্ষণ করে কৃষি কাজে ব্যবহারের দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, প্রায় বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ২৪ ঘণ্টা অনবরত পড়ছে ‘জাদুর কল’ বা অটোকলের পানি। শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী এই তিনটি উপজেলার সীমান্ত জুড়ে সারা বছর পানি সংকট থাকলেও শ্রীবরদী উপজেলার রাঙ্গাজান, বালিঝুড়ি, খ্রিস্টানপাড়া ও অফিসপাড়া- এই চারটি গ্রামে পানির সংকট দূর করেছে এই ‘জাদুর কল’ অথবা ‘অটোকল’।
খাবার পানি থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব কাজে এ পানি ব্যবহার করছেন এখানকার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, অনবরত মাটির নীচ থেকে বের হওয়া এই পানি চাষাবাদের কাজেও লাগাচ্ছেন কৃষকরা। দুই ইঞ্চি পাইপ দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ ফুট গর্ত করে ওই গর্তে ৫ থেকে ৬ ফুটের ছোট একটি পাইপ বসিয়ে দিলেই সেখান থেকে অনবরত বের হয় সুপেয় পানি।
স্থানীয়রা এই স্রোতধারার নাম দিয়েছেন ‘অটোকল বা জাদুর কল’। স্থান ভেদে অটোকলগুলোর পানির চাপ কমবেশিও হয়। বিনা খরচে অটোকলের পানি দিয়ে গৃহস্থালির সব প্রয়োজন মিটিয়ে কৃষি কাজে ব্যবহার করা যায় বলে খুশি স্থানীয় কৃষকরা। বিনাপয়সায় অনবরত বের হওয়ায় এই পানির ব্যাপক অপচয় হয়, তাই সরকারিভাবে এই পানি বড় পরিসরে উত্তোলন এবং বিশেষ কায়দায় সংরক্ষণ করে সেই পানি সেচ বঞ্চিত জমিতে দেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে অনেক কৃষক উপকৃত হবেন বলে মনে করেন এখানকার কৃষকরা।
রাণীশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগ দৈনিক দেশচিত্রকে জানান, এই পাহাড়ি এলাকায় অনেকদিন ধরে পানির সংকট লেগে আছে। তবে কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত বাড়িতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাটির নীচ থেকে উঠে আসা পানির স্রোতধারা থাকায় এ গ্রামগুলোতে পানযোগ্য পানির অভাব কিছুটা লাঘব হয়েছে। তবে এই পানির আর্সেনিক পরীক্ষা এবং সরকারিভাবে বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তোলন ও সংরক্ষণ করে কাজে লাগানো দাবি জানান তিনি।
সীমান্তের এই গ্রামগুলোতে প্রায় অর্ধশত অটোকল রয়েছে। যা দিয়ে কৃষকরা প্রায় দুই হাজার একর জমিতে বিনা খরচে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন।
© Deshchitro 2024