বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এখানে কয়েকটি স্পট বেশি পরিচিত সেগুলো হলো- কালিতলা গ্রোয়েন, সারিয়াকান্দি হার্ড পয়েন্ট (প্রেম যমুনার ঘাট), ফিস পাস, হাসনাপাড়া স্পার। প্রতি ঈদে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এখানে প্রচুর দর্শনার্থীরা আসে। বন্যায় নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দর্শনার্থীদের আনাগোনা দিন দিন আরও বাড়ছে।
সবগুলো পর্যটন এলাকার ভিতর সব থেকে জনপ্রিয় হলো কালিতলা গ্রোয়েন। এখানে প্রতিদিন কিছু না কিছু দর্শনার্থীরা বেড়াতে আছে। শুক্রবার শনিবার দর্শনার্থীদের পদচারিতায় কালিতলা টইটুম্বুর হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে এখানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কিছু ভালো মানের হোটেল হয়েছে সেগুলো কালিতলা গ্রোয়েনে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের খাওয়া দাওয়ার চাহিদা পূরন করতে সক্ষম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানে আসা দর্শনার্থীরা বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। প্রথমত এটি একটি ছোট জায়গা হওয়া সত্ত্বেও রাস্তার দুই পাশ দিয়ে পাকা ও আধাপাকা বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এতে রাস্তাটি আরও সংকুচিত হয়ে গেছে। বিভিন্ন যানবাহন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকায় যাতায়াতের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে থাকে সবসময়। এইটুকু পথ কষ্ট করে পাড় হয়ে বাঁধের সামনের দিকে এগিয়ে গেলে আরেক সমস্যায় এখানে কিছু অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে দুই পাশ দিয়ে নদী দেখার কোন উপায় নেই। স্বস্তির সাথে প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখতে পারেনা দর্শনার্থীরা তাদেরকে নিচে নেমে গিয়ে ব্লকের উপর দাঁড়াতে হয় তাহলে কিছুটা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
বগুড়া নারুলী এলাকার আতাউর রহমান এখানে বেড়াতে এসে  প্রতিবেদকে বলেন, সারা সপ্তাহ কর্ম ব্যস্ততার কারনে পরিবারকে সময় দিতে পারিনা। তাই আজ ছুটির দিন হওয়াই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে এসেছি। এখানে বিকালের পরিবেশটা খুবই সুন্দর ও মনোরম লাগছে। কিছু সমস্যাও চোখে পড়লো তা হলো বাঁধে উঠতে অনেক দোকান ও হোটেল দেখলাম রাস্তার দুই পাশ দিয়ে। তারপরেও বাঁধের একেবারে এ মাথায় যে অস্থায়ী দোকান গুলো আছে তাতে দর্শনার্থীদের সুন্দর পরিবেশে নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা সঠিক ভাবে। এ দোকান গুলো না থাকলে পরিবেশ আরও সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারতাম৷
আরেক দর্শনার্থী কবির হোসেন ঢাকা থেকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। কালিতলা ঘাটের কথা শুনে দেখতে এসেছে তার সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে সে বলে, আমি এসেছিলাম প্রাকৃতিক পরিবেশে একটু সময় কাটাবো নদী দেখবো নৌকা ভ্রমন করবো। কিন্তু এখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ আর কোথায় চারিদিকে শুধু দোকান আর দোকান ময়লা-আবর্জনায় ভরে রয়েছে৷
সারিয়াকান্দি উপজেলার স্থানীয় এক শিক্ষক  বলেন আগে সকালে হাঁটতে বের হলে কালিতলায় আসতাম৷ এখন আর আসা হয়না কারন এখানের পরিবেশ আর আগের মতো নাই। সারাদিন দোকানের ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখে দোকানীরা। সেগুলো এক লোক পরিষ্কার করে যেমন তেমন ভাবে, অনেক সময় সকালে গন্ধে টেকা যায় না। আমরা চাই এ জায়গাটা আবার আগের মতো হোক সবাই যেন এখানে এসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে।
কালিতলা ঘাটের এক অস্থায়ী দোকানীর সাথে কথা হলে সে বলে এখানে দোকান করলে দিনে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। জহুরুল নামের এক লোক এ টাকা তোলে এ টাকা না দিলে এখানে দোকান করতে দিবে না। এছাড়া এখানকার আশেপাশের লোক না হলে এখানে দোকান বসাতে দেয় না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের  উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা ওখানে অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করার জন্য নোটিশ দিয়েছি। যদি তারা নিজ থেকে এসব দোকান না সরিয়ে নেন, তাহলে আমরা  অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ফেলবো। আরও আগেই উচ্ছেদ করা হতো ঈদের ছুটির কারনে একটু দেরিই হয়ে গেলো।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুর রহমান বলেন, এ জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি উপজেলা প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চায় তাহলে সহযোগিতা করা হবে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024