|
Date: 2024-03-13 10:42:47 |
উখিয়া উপজেলার ক্যাম্প লাগোয়া বাজারগুলোতে কোন কাগজপত্র ছাড়াই চলছে বিপুল পরিমাণ ফার্মেসী। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সহস্ত্রাধিক এসব ফার্মেসির মালিক ডাক্তার উভয়ই রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা ডাক্তারদের ডাক্তারি করা এসব ফার্মেসিতে রয়েছে তাদের নিজস্ব চেম্বার। এসব চেম্বারে রোহিঙ্গা ডাক্তাররা রোগী দেখছেন ফি নিয়ে। কিছু ফার্মেসিতে ফি নেওয়া না হলেও ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনার শর্তে ফ্রিতেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সরজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, উখিয়া উপজেলার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী, টেকনাফের চাকমারকুল, উনচিপ্রাং, নয়াপাড়া, মুচনি ও শাপলাপুর ক্যাম্পসমূহে অন্তত সহস্রাধিক রোহিঙ্গার ফার্মেসি রয়েছে। এসব ফার্মেসিতে ইয়াবা ছাড়াও মিয়ানমারের তৈরি বিভিন্ন জাতের ওষুধ মিলছে। উখিয়ার জামতলি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৫-১৬নং সংলগ্ন রোহিঙ্গা বাজারে গড়ে উঠেছে ব্যাঙের ছাতার মতো রোহিঙ্গাদের ওষুধের ফার্মেসির দোকান । কারও কাছে ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স নেই। এসব দেখেও যেন দেখেনা প্রশাসনের দায়িত্বরত লোকজন। ওইসব ফার্মেসির বদৌলতে ইয়াবা কারবারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ডাক্তারী পেশা চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এক শ্রেণীর দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার ফার্মেসি থেকে ড্রাগ লাইসেন্সের ফটোকপি দিয়ে অবৈধভাবে ফার্মেসি চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। উখিয়া জামতলি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৫-১৬ নং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বাজার কেন্দ্রিক অহরহ ওষুধের দোকান, অনেকেই ক্যাম্পে নিজেদের কক্ষে অবৈধভাবে ডাক্তারী ও ওষুধ বিক্রি করছে। জামতলি রোহিঙ্গা বাজারের অলিতে গলিতে অবৈধভাবে ওষুধের ফার্মেসি খুলে পুরনো রোহিঙ্গারা নিজেদের বাংলাদেশী দাবি করে চিকিৎসার নামে অবৈধ পন্থায় ব্যবসা চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভুয়া ঠিকানায় তৈরি জাতীয় সনদও সংগ্রহ করে সঙ্গে রেখেছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, জামতলি বাজারে ইলিয়াস নামে এক রোহিঙ্গা ডাক্তার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এলএমএফ সার্টিফিকেট বানিয়েছে। ওই ভুয়া ডাক্তার এইড্স রোগীর (রোহিঙ্গা) চিকিৎসাও করে থাকে বলে জানা গেছে। স্থানীয় দালালের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ডাক্তাররা কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রেড লাইসেন্স ও নাগরিক সনদ নিয়ে এবং অন্যজনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের ডিপ্লোমা সনদ এলএমএএফ, ডিএমএডি, এমএফ, আরএমপি সনদ বানিয়ে ডাক্তার সেজে চিকিৎসা ও ফার্মেসি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে সাইনবোর্ডও টাঙ্গিয়েছে। রোগীদের চিকিৎসাপত্রও ধরিয়ে দিচ্ছে তারা। স্থানীয়রা বলেন, আশ্রয় ক্যাম্প কেন্দ্রিক ভুয়া রোহিঙ্গা ডাক্তার ও আনাড়ি চিকিৎসকরা যত্রতত্র দোকান খুলে চিকিৎসার নামে শুধু নগদ টাকাই কামিয়ে নিচ্ছে। ওইসব ভুল চিকিৎসায় কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ওইসব দোকান থেকে স্বল্পমূল্যে নকল ওষুধ কিনে মঝে মাঝে বাংলাদেশীয় লোকজনের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে আসল ওষুধ কিনে রীতিমতো ঝগড়া বাধিয়ে থাকে রোহিঙ্গারা। শরণার্থী আইন অনুসারে উদ্বাস্তুরা যে দেশে আশ্রয় গ্রহণ করবে, ওই দেশে কোন রকমের ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারে না। শুধু আশ্রয় ক্যাম্প কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ থাকবে তারা। শিবিরের বাইরে যেতে হলে ক্যাম্প ইনচার্জের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। তবে রোহিঙ্গারা এসবের কিছুই তোয়াক্কা করছে না।
উখিয়ার জামতলি রোহিঙ্গা বাজারে জামতলি শফিক মার্কেটে মোঃ জিকরিয়া, মোঃ তাহের, মোঃ ইরফান, ইব্রাহিম মার্কেটে মোঃ ইলিয়াছ, নুর সেলিম, মোঃ ইদ্রিস, মোঃ শমশু, আনসার উল্লাহ কেসিং প্রকাশ সচিংসহ অনেকেই ডাক্তার সেজে ফার্মেসি ব্যবসা করছে। এভাবে উখিয়া-টেকনাফে ৩৪ ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মালিকানাধীন সহস্রাধিক ওষুধের দোকান রয়েছে। ক্যাম্প অভ্যন্তরে অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের মালিকানাধীন কাপড়, স্টেশনারি স্টোর, রেস্তরাঁ, তরকারি, মাছ, মুদি, ফার্মেসি ও স্বর্ণের অন্তত ২০ হাজার দোকান রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল ।
© Deshchitro 2024