|
Date: 2024-02-24 14:44:07 |
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে আলোচিত রাকিব হত্যার ময়না তদন্তের রিপোর্ট থানায় আসার পর চরপাড়া (মথুরাপাড়া) এলাকার নিহত রাকিবের মা কাজলী আক্তার (৩৮) বাদী হয়ে একই এলাকার তৌহিদুল ইসলাম কেরু এর ছেলে তানভীর ইসলাম লাম, শরিফুল ইসলাম এর ছেলে জিহাদ ইসলাম এবং তৌহিদুল ইসলাম বেপারী এর ছেলে রাশিদুল ইসলাম এই ৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩/৪ জনকে অজ্ঞতা নামা করে মঙ্গলবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখ রাতে সারিয়াকান্দি থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এজাহার দায়ের পরের দিন রাতে তানভীর ইসলাম লাম ও রাশিদুল ইসলামকে আটক করেন পুলিশ।
মামলার বাদী কাজলী আক্তার এজাহারে উল্লেখ করেন, আমার ছেলে রোবায়েত ইসলাম রাকিব সরকার মথুরাপাড়া বছির কাজী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। উল্লেখিত, তিনজন আমার ছেলের বন্ধু। তারা একই সাথে পড়াশোনা করত। গত ২০২৩ সালের ২৪ অক্টোবর অনুমান রাত্রি ১০ ঘটিকায় বিবাদী তানভীর ইসলাম লাম আমার ছেলেকে বাড়ির বাহিরে আসতে বলে। আমার ছেলেকে বাড়ির বাহিরে যেতে দিব না বলি এবং বার বার না করি। তখন লাম বলে আমার আরো বন্ধুরা বাহিরে অপেক্ষা করিতেছে। তখন আমি নিজে বাহিরে বের হয়ে দেখি জিহাদ ও রাশিদুল বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। তারা জানায়, ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে চলে আসবে। তখন আমার ছেলেকে বাহিরে যেতে দেই। ১০-১৫ যখন অতিবাহিত হয়ে যায়, তখন আমার ছেলের নাম্বারে বার বার ফোন দিতে থাকি। ফোনে কোনো সাড়া না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করিতে থাকি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে একটি সংবাদ এর মাধ্যমে জানতে পারি মথুরাপাড়া বসির কাজী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাত পা ছেড়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তখন সেখানে গিয়ে আমার ছেলেকে দ্রুত সিএনজি যোগে সারিয়াকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসি। কর্তব্যরত চিকিৎসক বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন আমরা দ্রুত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং ভর্তি করাই। আমার ছেলে ২৫ অক্টোবর রাত্রি অনুমান সোয়া ৪ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। সদর থানার এস আই নুরজাহিদ সরকার আমার ছেলের সুরততাল করে মৃতদেহ মর্গে প্রেরণ করেন। ময়না তদন্ত শেষে আমার ছেলেকে নিজ বাড়িতে আনিয়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করি। এসআই নুরজাহিদ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখিয়া জানিতে পারি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সারিয়াকান্দি থানায় গৃহীত হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে আমার ছেলের মাথার বাম পাশে, পেটে, ডান পায়ের পাতায় ও ডান পায়ের মধ্যমা আঙ্গুলে জখম রয়েছে। এজাহার সূত্রে নিহতের মা আরও উল্লেখ করেন যে, আমার ধারণা উল্লেখিত বিবাদীগণ সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদী গণের যোগসাজোসে পরিকল্পনা করে আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে মাথার বাম পাশে, পেটে, ডান পায়ের পাতায় এবং ডান পায়ের মধ্যমা আঙ্গুলে জখম করে হত্যা করেছে।
বাদী নিহত রাকিবের মা কাজলী আক্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিবাদীরা আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পনা করে হত্যা করেছে। এই হত্যার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
মামলার তদন্ত কারী এস আই আওয়াল কাফি জানান, বাদী ২০ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাতে এজাহার দাখিল করেন। পরের দিন রাতে ঘটনার সাথে জড়িত ও এজাহার নামীয় আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু তানভীর ইসলাম লাম ও রাশিদুল ইসলাম এই দুইজনকে বিধি মোতাবেক আটক করতে সক্ষম হই। মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলমান।
সারিয়াকান্দি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, এজাহার নামীয় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত দুইজনকে বিধি মোতাবেক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন চাওয়া হবে। মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় আছে। তদন্ত শেষ হলে আমরা এ ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারব।
© Deshchitro 2024