শ্যামনগরে প্রথম অফসিজেন তরমুজ চাষে কৃষকরা খুশি

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ঃ রসাল ফল তরমুজের কথা শুনলে কার না জিহব্বায় জল চলে আসে । আর এই রসাল ফল এবার মৌসুম ভিত্তিক চাষ না হয়ে অফসিজেন চাষ করে কৃষকরা উপকূলীয় এলাকায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হয়েছে।

উপকূলীয় এলাকা সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অফসিজেন তরমুজ চাষে আশানুরুপ ফলন পাওয়া গেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে উপজেলায় এই প্রথমবার অফসিজেন তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা খুব খুশি।

উপজেলার জাওয়াখালী, শংকরকাটি, দক্ষিণ পশ্চিম আটুলিয়া সহ অন্যান্য গ্রামে বর্ষাকালিন অফসিজেন তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

 জাওয়াখালী গ্রামের অফসিজেন তরমুজ চাষি সন্দিপ কুমার গায়েন বলেন শ্যামনগর কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করে তিন বিঘা জমি ঘেরের আইলে এই তরমুজ চাষ করেছিলেন।সেখান থেকে তিনি ৮ মণ তরমুজ পেয়েছেন। প্রতিটির ওজন প্রায় ৩ কেজি। সর্ব নিম্ম ওজন হয়েছে ৫ শত গ্রাম। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রী হয়েছে ৫০টাকা। তিনি বলেন সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। বিক্রী হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকার তরমুজ।

আটুলিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি হৈমন্তি সরদার বলেন তিনি ১০ কাঠা জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। ফলন পেয়েছেন ৮ মণ।তার খরচ হয়  প্রায় ৫ হাজার টাকা এবং খাওয়া বাদে বিক্রী হয় প্রায় ১২ হাজার টাকার তরমুজ । অনুরুপ লাভের কথা বলেন অফসিজেন তরমুজ চাষি একই গ্রামের মহানন্দ মন্ডল, তরুণ মন্ডল, নিশিকান্ত মন্ডল।

চাষিরা জানান , অফসিজেন তরমুজ ১লা আষাঢ় থেকে আশি^ন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চাষ হয়ে থাকে। ভাল ফলনের জন্য ভার্মি কম্পোষ্ট, ডিএপি,সালফার,দস্তা, ম্যাগেনেশিয়াম সার প্রয়োগ করেছেন এবং লেদাপাকা বা অন্যান্য পোকা দমনের জন্য জৈব পদ্ধতি সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। তরমুজের জাত হিসাবে তারা জানান ব্লাক চ্যাম্প। এটি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।

এই তরমুজ চাষে ঝুঁকির মধ্যে ছিল মিষ্টি পানির অভাব, লবনাক্ততা ও খরা। তরমুজ চাষি হৈমন্তি সরদার বলেন প্রচন্ড রৌদ্রে তার কিছু ফল শুকিয়ে যায়। সন্দিপ গায়েন বলেন অল্প জায়গা ঘেরের আইলে অফসিজেন তরমুজ চাষ করা সম্ভব এবং পরিশ্রম কম।

অফসিজেন তরমুজ চাষের আশানুরুপ ফলন ও অর্থনৈতিক লাভ হওয়ায় অনেক কৃষক আগামীতে চাষ করবেন বলে জানান। জাওয়াখালী গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় গায়েন, ইন্দ্রজিৎ গায়েন বলেন এটি স্বল্প সময়ে ভাল উৎপাদনের ফসল। ইচ্ছা করলে ভাল দামও পাওয়া সম্ভব। সকল চাষি আগামীতে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তা কামনা করেন এবং এ বছর অফসিজেন তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য কৃষি অফিসার সহ কৃষি অফিসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম এনামুল ইসলাম বলেন উপজেলায় এবার প্রথম অফসিজেন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। ব্লাক চ্যাম্প জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন কৃষকরা তরমুজের মূল্য কম পেয়েছে। আগামীতে কৃষকরা যাতে বেশী মূল্য পান সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

ছবি- শ্যামনগরে জাওয়াখালী গ্রামে ঘেরের আইলে অফসিজেন তরমুজ চাষ।



প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024